বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে অনেক ডিসিপ্লিনে আজ নানা সাফল্য। আশির দশকে পরিস্থিতিটা এমন ছিল না মোটেও। ১৯৮৬ এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশকে বক্সিংয়ে পদক এনে দিয়েছিলেন বক্সার মোশাররফ হোসেন। সেই মোশাররফ অনেক দিন যাবৎ অসুস্থ। মোশাররফের সুস্থতার জন্য প্রধানমন্ত্রী ৩০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন।
মোশাররফের মতোই বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম কিংবদন্তী রাণী হামিদ। সেই রাণী হামিদও আজ প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে ১০ লাখ টাকা অনুদান পেয়েছেন।
আজ দুপুরে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সম্মেলন কক্ষে এক অনুষ্ঠানে ৪ ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠকদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ৬২ লাখ টাকার আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। এ সময়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত ক্রীড়াবিদ মোশাররফ হোসেনকে শারীরিক অসুস্থতা ও পারিবারিক অস্বচ্ছলতার কারনে ৩০ লাখ টাকা এবং আন্তর্জাতিক গ্রান্ডমাস্টার দাবাড়ু রানি হামিদকে ১০ লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও আরো দুই জন ক্রীড়া সংগঠককে ২২ লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়েছে। বক্সার মোশাররফকে ইতোপূর্বে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে ২ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে।
চেক বিতরণকালে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত ক্রীড়াবান্ধব। তিনি সুখে-দুঃখে সবসময় আমাদের খেলোয়াড়দের পাশে ছায়ার মতো থাকেন। খেলাধুলার উন্নয়নে বা যে কোনো ক্রীড়াবিদ বা ক্রীড়া সংগঠকের যেকোন সমস্যায় তিনি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। তিনি ক্রীড়াসেবীদের কল্যাণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু’র নিজ হাতে প্রতিষ্ঠিত ‘বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যান ফাউন্ডেশন’ এ করোনাকালীন সময়ে ১০ কোটি টাকা সহ আরো ২০ কোটি টাকা, মোট ৩০ কোটি টাকা সীডমানি প্রদান করেছেন। ক্রীড়াঙ্গনকে এভাবে এগিয়ে নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।’
অর্থ সহায়তা পেয়ে বক্সার মোশাররফ হোসেন প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি বর্তমানে খুবই অসুস্থ। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধু কন্যা ক্রীড়া অন্তঃপ্রাণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট হতে ত্রিশ লাখ টাকার আর্থিক সহায়তা পেয়েছি। খুবই ভালো লাগছে। এতে আমার খুব উপকার হয়েছে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর নিকট কৃতজ্ঞ এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনা করছি।
চেক হস্তান্তরের আগে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সাবেক সচিব ও বাংলাদেশ এ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সভাপতি এ এস এম আলী কবীরের স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত এ এস এম আলী কবীরের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ‘এএসএম আলী কবীর অত্যন্ত সজ্জন ব্যক্তি ছিলেন। তিনি ক্রীড়াঙ্গনেও অত্যন্ত নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি সচিব থাকা অবস্থায় বাংলাদেশের ক্রিকেটসহ অন্যান্য ক্রীড়ার উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি দেশের ক্রীড়াঙ্গনে একজন আলোকিত ব্যক্তিত্ব। আমরা ২০১৬ সালে তাকে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারে ভূষিত করেছি।’
স্মরণসভায় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘এএসএম আলী কবীরের সাথে আমার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিলো। তিনি একজন সহজ সরল সজ্জন ব্যক্তি ছিলেন। তিনি আজীবন জাতির পিতার আদর্শ বাস্তবায়নে নিরলস কাজ করে গেছেন।’
অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত সচিব (ক্রীড়া) মোঃ মোশারফ হোসেন মোল্লা, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব পরিমল সিংহ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন ক্রীড়া ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠকগণ উপস্থিত ছিলেন।