চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই- জানুয়ারি) কৃষি ও পল্লী খাতে ১৭ হাজার ৫৫ কোটি ৬০ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো, যা লক্ষ্যমাত্রার ৬০ শতাংশ। এ অর্থবছরে কৃষি খাতে ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকার ঋণ দেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে ব্যাংকগুলোর। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে যে পরিমাণ কৃষি ও পল্লী ঋণ খাতে ঋণ দেওয়া হয়েছে তা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে দুই হাজার ৯০৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা বেশি। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ খাতে ১৪ হাজার ১৪৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা বিতরণ করে ব্যাংকগুলো, যা ওই সময়ে বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার ৫৩ দশমিক ৮১ শতাংশ ছিল।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে কৃষিঋণ বিতরণে ব্যাংকগুলো কিছুটা পিছিয়ে পড়লেও তৃতীয় মাস থেকে পরিস্থিতি পাল্টে যায়।
তথ্য বলছে, কৃষি খাতে সব শেষ জানুয়ারিতে বিতরণ হয়েছে দুই হাজার ৫৫৮ কোটি টাকা। এর আগের মাস ডিসেম্বরে ঋণ বিতরণ হয় ৩ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা, নভেম্বরে ঋণ দিয়েছে ২ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা, অক্টোবরে ২ হাজার ৬৯৫ কোটি টাকা, সেপ্টেম্বরে ২ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করে। এতে সামগ্রিকভাবে কৃষিঋণ বিতরণে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা দেয়।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ব ৮টি ব্যাংকে কৃষি খাতে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ হাজার ৪৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রথম সাত মাসে লক্ষ্যমাত্রার ৬৪ দশমিক ২৩ শতাংশ বিতরণ করা হয়েছে। তবে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের মধ্যে বেসিক ব্যাংক ঋণ বিতরণের দিক থেকে পিছিয়ে আছে। ব্যাংকটি সাত মাসে মাত্র ১৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে। আর বেসরকারি ৪১টি ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা। আলোচিত সময়ে এসব ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণ করেছে ৫৬ দশমিক ১০ শতাংশ।
আলোচিত সময়ে কৃষিঋণ বিতরণ কিছুটা বাড়লেও আদায়ের পরিমাণ কমেছে। এ সময়ে বিতরণের বিপরীতে কৃষিঋণ আদায় হয়েছে ১৫ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের কৃষিঋণ আদায় বেশি ছিল। গত অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে আদায় হয়েছিল ১৬ হাজার ৫৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আলোচিত সময়ে কৃষিঋণ বিতরণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার ৩৫৫ কোটি টাকা।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলেন, করোনা মহামারিতে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ কম থাকলেও খাদ্য পণ্য উৎপাদনের জন্য সরকার কৃষি খাতে প্রণোদনা ঋণসহ স্বাভাবিক ঋণ বিতরণে গুরুত্ব দিয়েছে। অনেকে আবার চাকরি হারিয়ে গ্রামে নতুন করে কৃষি কাজ শুরু করেছেন। এতে বাড়ছে কৃষি ঋণ বিতরণ।