উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে সেনাবাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে সাতজন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। সোমবার (১৭ জানুয়ারি) সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে টিয়ারগ্যাস ও গুলিবর্ষণের পর প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে সোমবার আয়োজিত বিক্ষোভ কঠোর হাতে দমনের চেষ্ট করে সুদানের সামরিক বাহিনী। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাসের পাশাপাশি সরাসরি গুলিবর্ষণ করে সেনাসদস্যরা। আর এতেই প্রাণহানির ওই ঘটনা ঘটে।
সুদানের চিকিৎসকদের সংগঠন সেন্ট্রাল কমিটি অব সুদানিজ ডক্টরস জানিয়েছে, সোমবারের বিক্ষোভে দেশের একাধিক জায়গায় গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে কমপক্ষে সাতজন মারা গেছেন।
এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে সুদানের রাজধানী খার্তুমে দুইদিনের হরতাল এবং আইন অমান্য আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে সুদানে সেনাশাসন চলছে। এরপর গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে শুরু হয় বিক্ষোভ। সেই বিক্ষোভের জেরে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী আবদল্লাহ হামদককে আবারও প্রধানমন্ত্রী করে সেনা কর্তৃপক্ষ। তবে বিক্ষোভের মুখে গত ৩ জানুয়ারি পদত্যাগ করেন হামদক।
তিনি জানিয়েছিলেন, সেনা ও সরকারের মধ্যে বিরোধ চলছে। এছাড়া রাজনৈতিক দলগুলোও ঐক্যবদ্ধ হতে পারছে না। অনেক চেষ্টার পরও কিছু করতে না পেরে পদত্যাগ করেন তিনি।
এরপর থেকে আবারও সেনাশাসনের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করে আসছেন সুদানের সাধারণ মানুষ। রাজধানী খার্তুমে প্রচুর মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন। দেশের অন্য এলাকাতেও বিক্ষোভ হচ্ছে। সেনাবিরোধী এই বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন নারী ও শিশুরাও। জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে এই বিক্ষোভ চলছে।
তবে সামরিক কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভ হতে দিতে রাজি নয়। আর তাই শান্তিপূর্ণ সেই বিক্ষোভও কঠোর হাতে দমন করেতে চাচ্ছে তারা।
অবশ্য সেনাবাহিনী ও জনগণের মুখোমুখি এই অবস্থানে সব পক্ষকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। একইসঙ্গে সুদানে মানবাধিকার রক্ষা করতেও সেনাশাসকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। মতপ্রকাশ ও বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার অধিকার সকলেরই আছে বলে জানিয়েছে তারা।