বিশেষ প্রতিনিধি:
মালয়েশিয়া পাঠানোর নামে নারীকে আটক করে দল বেঁধে গণধর্ষণ। ০৩/০২/২০২৫ তারিখ ডিএমপির কাফরুল থানায় এক নারী অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, আমি স্বামী পরিত্যাক্তা হওয়ায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করিয়া জীবিকা নির্বাহ করিয়া চলিতেছি এমতাবস্থায় আমি ২০২৩ সালে পাগলা এলাকায় বসবাস করা কালে বিবাদীদের সাথে আমার পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে বিবাদী মোঃ বিল্লাল আমাকে মালয়েশিয়া গার্মেন্টস এর কাজে প্রায় ৭০-৮০ হাজার টাকা মাসিক বেতনে পাঠানোর প্রস্তাব দেয় বৈধ ভিসা পেতে হলে তাতে প্রায় ২,০০,০০০ টাকা লাগবে। তাদের প্রস্তাবে রাজি হয়ে এক পর্যায় আমার পূর্ব পরিচিত বিবাদী বিল্লালগংদের হাতে গত ০১/০৮/২০২৩ইং তারিখে আমি ২,০০,০০০ টাকা ও পাসপোর্ট দেই। টাকা পয়সা নেওয়ার পর আমাকে দিনের পর দিন ঘুরাইতে থাকে এমন অবস্থায় বিবাদী বিল্লালগং আমাকে যে কোন পুরুষের সাথে স্বামী স্ত্রী পরিচয় সাজিয়ে ট্যুরিস্ট ভিসায় পাঠানোর কথা বললে। আমি রাজি না হইলে পুনরায় আমাকে ঘুরাইতে থাকে। এক পর্যায়ে বিবাদীরা আমাকে বলে আমাকে মালয়েশিয়া পাঠানোর জন্য বৈধ ভিসা পাইছে আমাকে গার্মেন্টস এর কাজের ট্রেনিং দিতে হবে ট্রেনিং এর কথা বলিয়া আমার বর্তমান ঠিকানা এলাকা হতে গত ০২/০২/২০২৫ইং তারিখ বিকাল ৪ ঘটিকার দিকে বিবাদী সাইফুল, আপ্তজুল, সাফিয়া আমাকে একটি সিএনজিতে উঠাইয়া মিরপুর শেওড়াপাড়া বাসষ্ট্যান্ড নামায়। বিবাদী সাগর এসে আমাদের রিসিভ করে ট্রেনিং সেন্টারের কথা বলিয়া ৮৮৮, গোল্ডেন আবাসিক হোটেল এর, পঞ্চম তলায় নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে আমাকে একটি রুমে বসায় ঐ রুমে আরো ও ৫-৬ জন মেয়েকে দেখতে পাই ও বিল্লাল সহ অন্যান্য বিবাদীদের ও সেখানে উপস্থিত দেখতে পাই। বিবাদীরা মেয়েদের দেখাইয়া বলে ঐ মেয়েরাও মালয়েশিয়া যাবে। এক পর্যায় আমাকে একটি রুমে বসাইয়া কথাবার্তা বলার এক পর্যায়ে বেশ কিছু কাগজ পত্রে আমার স্বাক্ষর নেয়। এরপর বিল্লাল, সাইফুল, আপ্তজুল, সফিক সহ অন্যান্য পুরুষ বিবাদীরা আমার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শ কাতর জায়গায় হাত দেয়। আমি তাদের বাধা দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে চলে আসতে নিলে মেইন গেইটের কেচি গেইটে বিবাদী সাগর কলাপ্সি গেইটে তালা মেরে দেয় ও অন্যান্য বিবাদীরা আমাকে টানা হেচড়া করে একটি রুমে নিয়ে যায় এক পর্যায়ে বিল্লাল ও সাইফুলগংরা বলে সালী বিদেশে গিয়া তো তোরে দিয়া এই কাজই করামো তাই আমাদের সাথে একটু ট্রেনিং দেও। এই কথা বলিয়া ঐ রুমের সিটকারী লাগাইয়া পুরুষ বিবাদীরা টানা হেচড়া করিয়া আমার পরিহিত জামা কাপড় খুলিয়া বিভিন্ন ভাবে শারীরিক নির্যাতন করিয়া আমাকে একের পর এক বিবাদী (১,২,৭,৮,৯,১০,১১,১২,১৩,১৪,১৫,১৬ অজ্ঞাতনামা ৮ জন সহ আমাকে ধর্ষণ করে ও ৪, ৫ ও ৬নং বিবাদীগণ ধর্ষণের চেষ্টা করে এক পর্যায় আমাকে সারারাত পর্যায় ক্রমে বিবাদীরা ধর্ষণের পর সকাল ৮.৩০ মিনিটের সময় বিবাদীরা আমাকে নানাভাবে ভয়-ভীতি হুমকি প্রদর্শন করিয়া বলে যে এবারের মতো তুকে ছেড়ে দিচ্ছি। এখান থেকে যাওয়ার পর পরবর্তীতে যদি আর পাসপোর্ট ও টাকা পয়সা চাস আর এ নিয়ে কোন বাড়াবাড়ি করস তাহলে পুনরায় তোরে অপহরণ করিয়া আনিয়া হত্যা করিয়া লাশ গুম করে ফেলব। এ বলিয়া আমাকে উক্ত ঘটনাস্থল হতে পরদিন ০৩/০২/২০২৫ইং তারিখ আনুমানিক সকাল ৮.৩০ মিনিট ঘটিকার সময় ছাড়িয়া দিলে আমি সেখান থেকে আসার পর অসুস্থ থাকায় আমি চিকিৎসা নেওয়ার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে বলে ধর্ষণের ঘটনা যে থানা এলাকায় হয়েছে চিকিৎসা নিতে হলে ঐ থানার পুলিশ লাগবে। ঐ নারী ছদ্দনাম (আয়েশা) তার এলাকার এক বান্ধবীকে সাথে নিয়ে কাফরুল থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। কাফরুল থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তারা নারীর বক্তব্য গুরুত্ব সহকারে শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শেওড়াপাড়ায় ঘটনাস্থলের ঐ আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে মাদক দ্রব্য উদ্ধার করেন এবং বেশ কিছু লোকজন কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেন। কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মোবাইল ফোনে না পাওয়ায় বিস্তারিত জানা যায় নি। তবে অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন এ বিষয়ে মামলা হবে।