মাঝে মধ্যেই শোনা যায় কেউ না কেউ ভুয়া ডিবি পুলিশের খপ্পরে পরে সর্বশান্ত হয়েছে। ক্রাইম নিউজ মিডিয়ার অনুসন্ধানে খেঁাজ মিলল এক ভুয়া ডিবি পুলিশের। যাত্রাবাড়ি থানাধীন মাতুয়াইল এলাকার মৃত জাহাঙ্গীরের ছেলে সাজ্জাদ সে নিজেকে দীর্ঘদিন ধরে কোথাও ডিবির এস আই আবার কোথাও ডিবির ক্যাশিয়ার পরিচয় দিয়ে আসছে। আসলে সে একজন মানব পাচারকারী তার বিরুদ্ধে এমন অসংখ্য অভিযোগ ও মামলা রয়েছে। সাজ্জাদের বিরুদ্ধে এক নারীর অভিযোগ হতে জানা যায় এবং নারীর অভিযোগটি হুবহু তুলে ধরা হলো (ছদ্দনাম—রুনা) ঐ নারী তার বিরুদ্ধে পুলিশের বিভিন্ন দপ্তরে গত ০৬/০৩/২০২৩ইং তারিখে অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ কারিনী বলেন —
আমি গণ ধর্ষণের স্বীকার হই আসামীরা প্রভাবশালী হওয়ায় আমাকে ন্যায় বিচার হতে বঞ্চিত করার লক্ষ্যে বহু ষড়যন্ত্র করে আসছে। পিবিআই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে পাঠানোর আগেই আসামীরা মামলার সত্য ঘটনাকে আড়াল করার লক্ষ্যে তদন্ত ভিন্ন দিকে প্রভাবিত করতে বিভিন্ন মিডিয়াই মিথ্যা ও বানোয়াট অপসংবাদ প্রচার করে আসছে।
এমতাবস্থায় আমি নিরুপায় হয়ে আমার বিগত দিনের ঘটে যাওয়া সকল ঘটনা উল্লেখ করে গত ইংরেজি ১৬/০২/২০২৩ইং তারিখ মাননীয় স্বরাষ্ট্র সচিব, মহাপুলিশ পরিদর্শক, এসএল নং—১০৬, ডিএমপি পুলিশ কমিশনার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করি তাহার বিষয়ে কোন আইনানুগ প্রতিকারের ব্যবস্থা না হওয়ায় উল্টো অভিযোগের বিষয়ে তাহা কোন ভাবে বাপ্পি গংরা জানতে পেরে মামলার আসামী বাপ্পি গংরা আমার ক্ষতি সাধনের জন্য নানা ভাবে ষড়যন্ত্র করে আসছে এর মধ্যে গত ইংরেজি ১০/০২/২০২৩ আমার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে বাপ্পির নাম্বার হতে একটি এসএমএস পাঠায় তাতে লেখা এবার তোর খবর আছে এ ধরনের হুমকি দেয়।
প্রতিদিনের ন্যায় আমি রান্না শেখার সার্টিফিকেট অর্জনের জন্য রমনা থানাধীন বেইলি রোডে জাতীয় মহিলা সংস্থায় যাই। হঠাৎ আমাদের বাসা হতে গত ০৬/০৩/২০২৩ইং তারিখ আনুমানিক বিকাল ৫ ঘটিকায় আমার বোন মণি আমার নাম্বারে ফোন করে যে বাসার নিচে বাপ্পিদের লোকজন এসে নিজেদের বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে আমাকে খুঁজতেছে। এমন সংবাদের আমি জাতীয় মহিলা সংস্থা হতে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে আসি। এমতাবস্থায় আমি খিলগাঁও ফাঁড়ির সম্মুখে এনে বাপ্পির সাথে আমার দেখা হয়। তখন বাপ্পির কাছে জানতে চাই বাসায় লোকজন পাঠানোর কারণ কি? বাপ্পির সাথে আরো দুইজন লোক যাদের দেখলে চিনব তখন তারা আমাকে কৌশল খাটিয়ে জুরাইন এলাকায় নিয়ে যায়। এর মধ্যে দেখি বাপ্পির পুরাতন নাম্বার হতে আমার মোবাইলে ফোন তখন বাপ্পিকে জানাইলে সে বলে ভুলে ফোন এলাকায় ফেলে এসেছে আমি তার কথা বিশ^াস করি। তখন আমার হাত হতে আমার ব্যবহৃত ফোনটি নিয়ে বন্ধ করে দেয়।
এক পর্যায়ে সেখান হতে বাপ্পি আমাকে যাত্রাবাড়ি থানাধীন ৮২/এ, ইউনুস সুপার মার্কেটের সামনে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর ওয়ারলেস হাতে একজন লোক এসে আমার সামনে এসে দাঁড়ায় এবং সে নিজেকে ঢাকা ডিএমপির ডিবি অফিসার বলিয়া জানায় এবং সে বাপ্পির বন্ধু পরিচয় দেয়। তার নাম সাজ্জাদ সে আমাকে তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা স্যারের কাছে নেওয়ার কথা বলে তাহারা আমাকে ৮২/এ, ইউনুস সুপার মার্কেট এর ৪র্থ তলায় নিউ পপুলার আবাসিক হোটেলে নিয়ে যায়। উক্ত হোটেলে নেওয়ার পর দেখতে পাই সেখানে আমার মামলার আসামী আলেয়া, জাভেল হোসেন পাপন, সাইফুল ও বাপ্পির অন্যান্য বন্ধু জামাল, ছাইদুল, আরো অনেকে তাদের সহযোগী উক্ত হোটেলের স্টাফ বলিয়া তারা জানায়। তখন আমি সাজ্জাদকে বলি আপনার বড় স্যার কই? এর মধ্যে সাজ্জাদ বলে, জাভেল হোসেন পাপন কাকায় নিচ হতে আমাকে আনতে পাঠাইছে।
আর আমি ডিবি উত্তর ডিভিশনের ডিবির এস আই এবং ডিবির ক্যাশিয়ার ঢাকা শহরের বিভিন্ন ক্রাইম স্পট এর জায়গা হতে টাকা তুলি ডিবির ক্যাশ কালেকশন করি। এরপর আমাকে তাহারা নানা ধরণের ভয়—ভীতি দেখায় এবং বলে আমাকে এখানে আটক করা হইছে। আমি উক্ত পপুলার হোটেলের মালিক পাপন ও বাপ্পি গং দের নামে মামলা সহ বিভিন্ন অভিযোগ ও মিডিয়ার দেওয়া বক্তব্য তাহা যেন প্রত্যাহার করে নেই। তখন আমি প্রতিবাদ মুখী হয়ে বলি কোন কিছুই প্রত্যাহার করব না। এক পর্যায়ে সেখানে থাকা জামাল, সাইদুল, সেলিম, হোল্ডিং মালিক খলিল, তাহারা আমাকে হোটেলের বিভিন্ন কক্ষ ঘুরিয়ে ঐ হোটেলের বিভিন্ন রুমে থাকা প্রায় ৬০ হতে ৭০ জন নারী, শিশু, কিশোরী, যুবতী মেয়ে মানুষ দেখিয়ে বলে এই হোটেলটি একটি বেসরকারি মিনি পতিতালয়।তারা উক্ত হোটেলের মালিক। এরপর দুই তিনটি রুমের তালা খুলে দেখায় রুমের ভিতরে ৬—৭ জন বাচ্চা মেয়ে। তাদের দ্বারা নতুন কালেকশন করেছে বলে জানায়। ওদের দেহ ব্যবসা করার জন্য নামানো হবে এবং বিভিন্ন রুম হতে মেয়েদের কান্নার আওয়াজ শুনিয়ে বলে আমি যদি তাদের কথা না শুনি তাহলে তাদের বিদেশী এজেন্টদের কাছে আমাকে সেখানে পতিতা কর্মজীবী বানিয়ে পাঁচার করে দেওয়া হবে। আর ধর্ষণ মামলার ভিক্টিম যদি পতিতা হয় তাহলে তাদের দেওয়া দায়ের করা মামলা ও অভিযোগ এভাবেই শেষ হয়ে যাবে। এর পর আমাকে বাপ্পি, সাজ্জাদ, আলেয়া, সহ সবাই মিলে চর থাপ্পর, কিল, ঘুষি সহ ব্যাপক মারধর করে ও কেউ কেউ ধর্ষণের চেষ্টাও করে।
এমতাবস্থায় আমি গলা ফাটিয়ে বলি আমি তোমাদের বিরুদ্ধে আবারো অভিযোগ করব তখন তাহারা বলে যে তাদের বিরুদ্ধে পূর্বে অনেকে নিউ পপুলার হোটেলের পতিতা ব্যবসা পাঁচার মেয়েদের আটক জিম্মি দশা হতে মেয়েদের মুক্তি পাইয়ে দেওয়ার জন্য আইজিপি, পুলিশ কমিশনার সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছিল এমন কিছু অভিযোগের কাগজপত্র আমাকে দিয়ে বলে এ হোটেলের বিরুদ্ধে পাহাড় সমান অভিযোগ করেও কোন লাভ নাই। কেননা আইন শৃঙ্খলাবাহিনী সর্বত্র ম্যানেজ করে এই পতিতা ব্যবসাটি চলে। এক পর্যায়ে বাপ্পি আমাকে একটি বাটন সেটের মাধ্যমে অজ্ঞাত নামা নাম্বারে আমার মামলার আসামী হাতির ঝিল থানার ওসি রশিদের সাথে কথা বলায় ও ঐখান হতে রশিদ পরিচয়দানকারী বলে, ওদের কথা শোন তোমার ভাল হবে নয়ত ঐ পতিতালয়েই তোমার মরতে হবে।
এরপর জাভেল হোসেন পাপনের বড় ভাই জাবেদ হোসেন মিঠু, সাইফুল কে সহ আলাদা আলাদা ভাবে ফোনে কথা বলায় সবাই একই কথা বলে এবং বিভিন্ন হুমকি ে দয় এবং বাপ্পি বলে আমার দ্বিতীয় মামলা ধর্ষণের যে আলামত আমার কাছে সংরক্ষিত আছে তাহা আমি যেন তাদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করি। আমি রাজি না হলে তারা আমাকে আবারও বেধরক ভাবে মারপিট করে নানা ভাবে হুমকি দেয় এবং উক্ত হোটেলে আসা বিভিন্ন খদ্দেরদের দেখিয়ে বলে আমিও নাকি খারাপ মেয়ে আজকে আমাকে বাজারে উঠাইছে। এ বলে সেখানকার নারী পুরুষ দালাল ও খদ্দের প্রায় ৮০ হতে ৯০ জনের সাথে থাকা মোবাইল ক্যামেরায় আমার ছবি তোলায় এমন অবস্থা দেখে আমি তাদের কাছে নত হয়ে তাদের কথা মতো বিভিন্ন ব্লাঙ্ক স্ট্যাম্প ও সাদা কাগজে স্বাক্ষর করি।
এক পর্যায়ে আমাকে নানা শর্ত দিয়ে সেখান হতে আমাকে মুক্তি দেয়। মুক্তি পাওয়ার পর আমি অসুস্থ বোধ করায় মিটফোর্ট হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেই। এক পর্যায়ে গত ০৮/০৩/২০২৩ইং তারিখে বিকাল ৪ ঘটিকায় যাত্রাবাড়ি থানায় গিয়ে ডিউটি অফিসারকে অভিযোগ দিলে পুলিশ আমাকে আদালতে গিয়ে মামলা করার পরামর্শ দেয়। পরবর্তীতে আমি আদালতে গিয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করি। একটি মানব পাচার প্রতিরোধ দমন আইন ধারা ৭/৮/১১/১২/১৩ অন্যটি সি আর মামলা ধারা ৩৪১/৩৬৫/৩৪২/৩২৫/৩৫৪/৪৯৩/৫০৬/১০৯ প্যানাল কোর্ট খোঁজ নিয়ে জানা যায় সাজ্জাদ ডিবির ক্যাশিয়ার পরিচয় দেওয়াতে তার বিরুদ্ধে পুলিশের আইজিপি সদর দপ্তরে অভিযোগ জমা পড়েছে। স্মারক নং—৫৭৯, তারিখঃ ৩০/০৬/২০২২ইং এছাড়াও যাত্রাবাড়ি থানায় এছাড়া যাত্রাবাড়ি থানায় র্যাব—১০ এর দেওয়া একাধিক মানব পাচার আইনে মামলা হয়েছে। এছাড়াও ঢাকা জেলা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা ও ডিএমপির শ্যামপুর থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।