সিএনএম প্রতিনিধিঃ
সাতক্ষীরা থেকে সিরাজগঞ্জগামী একটি মালামালভর্তি ট্রাক কাজীপুর চৌরাস্তা মোড় থেকে ডাকাতি করে নিয়ে যাওয়ার পর; কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে উদ্ধার এবং এর সঙ্গে জড়িত আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
২১ মে (শুক্রবার) দুপুরে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমকে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) স্নিগ্ধ আখতার।
বৃহস্পতিবার (২০ মে) সকালে সিরাজগঞ্জের এক ব্যবসায়ীর দায়ের করা মামলায় ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পেরুনোর আগেই ওই ট্রাক এবং মালামালসহ আন্তঃজেলা ডাকাতদলের সাত সদস্যকে আটক করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে ট্রাকসহ তাদেরকে আটক করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মো. আব্দুল মালেক নামে একজন ভূষি ব্যবসায়ী সাতক্ষীরার ভোমরা থেকে ৪০৫ বস্তা ভূষি কিনে সিরাজগঞ্জে আনছিলেন। ট্রাকটি ১৮মে সকালে সাতক্ষীরা থেকে রওয়ানা হয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিরাজগঞ্জ কাজীপুর চৌরাস্তা মোড়ে এসে পৌঁছালে চালক ও সহকারী ট্রাকটি পার্ক করে ঘুমিয়ে পড়েন। এমতাবস্থায় চার জন চাকু ও ছোরা দেখিয়ে চড়-থাপ্পর দিয়ে ট্রাক থেকে বের করে। দুই জন তাদের সার্কিট হাউজের পিছনের মাঠে নিয়ে যায় এবং সারারাত পাহারা দিয়ে ফজরের আযানের সময়ে পালিয়ে যায়। বাকি দুই জন আগেই ট্রাক নিয়ে পালিয়ে যায়। তখন, চালক ও সহকারী সকালে থানায় এসে বিষয়টি জানায়। ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক থানায় মামলা করেন।
খবর পাওয়া মাত্র, জেলা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে, বিভিন্ন এলাকার রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে, বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে লোকেশন ট্র্যাকিং করে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতেই তাদের কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থানা পুলিশের সহযোগিতায় মহাসড়কে চলন্ত অবস্থায় ট্রাকটি উদ্ধার এবং ডাকাতদের আটক করা হয়। আটককৃতরা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য বলেও জানানো হয়।
গ্রেফতার অভিযানে সদর থানার উপ-পরিদর্শক মো. আবু জাফর, উপ-পরিদর্শক মো. সাইফুল ইসলাম ও উপ-পরিদর্শক মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে ১০ পুলিশ সদস্যের একটি দল অংশ নেয়।
মামলার বিবরণ থেকে চার ডাকাতের কথা জানা গেলেও উদ্ধার কার্যক্রমে গিয়ে অন্তত পাঁচ জনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। পুলিশের হাতে গ্রেফতারদের মধ্যে রয়েছেনঃ পাবনার ঈশ্বরদী থানার চর রূপপুর এলাকার খেরুমালের ছেলে নাসিম মাল রাজু (২১), পাবনার রাজাপুর এলাকার নজরুল মোল্লার ছেলে রফিক মোল্লা রকিব (১৯), কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের তারাসনিয়া এলাকার মৃত রহমত উল্লাহর ছেলে ইমরান আলী (৫০), সিরাজগঞ্জের সয়া ধানগড়া জগাই মোড় এলাকার নূর ইসলামের ছেলে নয়ন শেখ (২৮), কুষ্টিয়ার জয়রামপুর এলাকার রব্বানের ছেলে রাজু আহমেদ (২৮), একই এলাকার মৃত সেকেন প্রামানিকের ছেলে শাহাবুল ইসলাম (৩০), দৌলতপুরের টলটলিপাড়া এলাকার নাসির উদ্দিনের ছেলে রোকনুজ্জামান (২৩)।
গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছাড়াও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহাউদ্দীন ফারুকী, সিরাজগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি হেলাল আহমেদসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।