কারও পৌষ মাস, কারও সর্বনাশ! রেজাউর রহমান রাজা আর আবু জায়েদ রাহীর পরিস্থিতিটা এখন এমনই। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অভিষেকের পর থেকেই যে রাহী টেস্ট দলের নিয়মিত সদস্য, ফর্মহীনতায় তাকেই এবার ছুড়ে ফেলা হলো! অথচ খালেদ আহমেদ বাদে দলের প্রায় সব পেসারই ইনজুরিতে, যে কারণে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজের প্রথমটির জন্য ব্যাকআপ পেসার হিসেবে রাখা হলো রাজাকে। অর্থাৎ কিছুদিন আগেও যে রাহীকে টেস্টে পেস আক্রমণের নেতা মনে করা হতো, তিনি এখন ব্যাকআপ পেসার হওয়ারও অযোগ্য!
নিউজিল্যান্ড আর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দলের সঙ্গে থাকলেও কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি রাহীর। পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে সিরিজেই শেষবার মাঠে নামেন ২৮ বছর বয়সি পেসার। ওই সিরিজেই প্রথমবার দলে ডাক পান রাজা। তবে ম্যাচ খেলা হয়নি। ২২ বছর বয়সি সিলেটের তরুণ পেসার পরে জায়গা পাননি দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। এই সময়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে কিছু ম্যাচ খেলেছেন রাজা, তবে পারফরম্যান্স তেমন উজ্জ্বল নয়। তাই ব্যাকআপ পেসার হিসেবে তার দলে ডাক পাওয়া কিছুটা বিস্ময়করই। যদিও নির্বাচকরা বলছেন, ভবিষ্যৎ ভাবনায় সবাইকে তৈরি রাখা হচ্ছে। রাজা সেই ভাবনারই অংশ।
টিম ম্যানেজমেন্ট এখন গতিময় বোলারদের প্রতিই বেশি আস্থা রাখছে। যে কারণে তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, ইবাদত হোসেন, খালেদ আহমেদরাই টেস্টে পছন্দের তালিকার শীর্ষে। কিন্তু ইনজুরির কারণে এই সিরিজে নেই তাসকিন। চোট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের মাঝপথে দেশে ফেরা এই গতিতারকাকে পাঠানো হচ্ছে লন্ডনে। বাঁহাতি পেসার শরিফুল আছেন দলে, তবে ফিট থাকলেই কেবল খেলবেন তিনি। গোপন রোগে ভুগছেন এই তরুণ। অস্ত্রোপচারের জন্য মঙ্গলবার তাকে পাঠানো হবে সিঙ্গাপুর। তাই দলে থাকলেও লঙ্কানদের বিপক্ষে ১৫ মে শুরু হতে যাওয়া প্রথম টেস্টে তার খেলা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা।
ইনজুরিতে আছেন ইবাদতও। তবে প্রধান নির্বাচকের আশা, সিরিজ শুরুর আগেই পুরোপুরি ফিট হয়ে উঠবেন ডানহাতি এই পেসার। সেই আশা যদি পূর্ণ না হয় কিংবা কেউ যদি আবার নতুন করে ইনজুরিতে আক্রান্ত হন, সেদিকটা মাথায় রেখেই ব্যাকআপ পেসার হিসেবে রাজাকে দলে নেওয়া। দল ঘোষণার পর রোববার মিরপুরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু বললেন, ‘ইনজুরির দুর্ভাবনাও আছে আমাদের। যেহেতু শরিফুল পুরোপুরি ফিট নয়। তবু আশা করছি, ফিজিওর যে রিপোর্ট আছে আমাদের কাছে, প্রথম টেস্টে ওকে আমরা পেয়ে যেতে পারি। এ ছাড়া খালেদ আর ইবাদত তো আছেই। যেহেতু দেশের মাটিতে খেলা, তিনজন পেস বোলার তো লাগবেই। সে চিন্তা করেই রাজাকে ব্যাকআপ হিসেবে নেওয়া।’
ব্যাকআপ পেসার রাখার ক্ষেত্রে নির্বাচকদের ভাবনা ঠিকই আছে। কিন্তু রাহীকে না রেখে সেখানে রাজাকে রাখা কেন? এক্ষেত্রে প্রধান নির্বাচকের ব্যাখ্যা, ‘রাহীর ব্যাপারটা হলো, দেশের মাটিতে খেলা। যখন বাড়তি সুইং দরকার হয়, বিদেশের মাটিতে ওকে (রাহী) নিয়ে আমরা চিন্তা করি। রাজা তো আমাদের এইচপি ট্রেনিংয়ে যথেষ্ট উন্নতি করেছে। ঘরোয়াতেও আমরা বেশকিছু ভালো বোলিং দেখেছি। ভালো গতিতে বল করতে পারে। তো পেসের বৈচিত্র্যের জন্যই এই জায়গায় আমরা একটু বদল এনেছি।’