1. hrhfbd01977993@gmail.com : admi2017 :
  2. editorr@crimenewsmedia24.com : CrimeNews Media24 : CrimeNews Media24
  3. editor@crimenewsmedia24.com : CrimeNews Media24 : CrimeNews Media24
শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৫ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
"ফটো সাংবাদিক আবশ্যক" দেশের প্রতিটি থানা পর্যায়ে "ক্রাইম নিউজ মিডিয়া" সংবাদ সংস্থায় ১জন রিপোর্টার ও ১জন ফটো সাংবাদিক আবশ্যক। আগ্রহী প্রার্থীরা  যোগাযোগ করুন। ইমেইলঃ cnm24bd@gmail.com ০১৯১১৪০০০৯৫

মারাত্মক হলেও ‘ক্ষতি করতে পারবে না’ নিওকোভ

  • আপডেট সময় শনিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২২, ১১.২৬ এএম
  • ১৬৩ বার পড়া হয়েছে

ওমিক্রন ঢেউয়ের মধ্যেই ‘নিওকোভ’ শনাক্তের খবর জনমনে নতুন করে একধরনের ভয় তৈরি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ নিয়ে নানা তথ্য ছড়িয়ে পড়ছে। অনেকে বলছেন, এটি বেশ ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘আপাতত ভয়ের কোনো কারণ নেই। কারণ, নিওকোভ মানবদেহে সংক্রমণ ঘটিয়েছে— এমন কোনো তথ্যই নেই।’

চীনের একটি গবেষণা উদ্ধৃত করে আন্তর্জাতিক কয়েকটি গণমাধ্যম খবর প্রকাশ করে যে, ‘নিওকোভ সংক্রমণ ঘটালে প্রতি তিনজনে একজনের মৃত্যু হতে পারে; অথবা মৃত্যুহার হতে পারে ৪০ শতাংশ।’ চীনা গবেষকরা অবশ্য বলছেন, ‘আপাতত এটি দক্ষিণ আফ্রিকায় বাদুড়ের শরীরে ছড়ালেও ভবিষ্যতে তা মানুষের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।’

dhaka post
বিভিন্ন প্রাণীর শরীরে প্রায়ই নানা ধরনের ভাইরাস শনাক্ত হয়। এসব ভাইরাসের বেশির ভাগের প্রাকৃতিক ভান্ডার হিসেবে বাদুড়কে ধরা হয় / ছবি- সংগৃহীত

নিওকোভ নিয়ে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা হয় আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অণুজীববিজ্ঞানী, গবেষক ও বিশিষ্ট জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে। তাদের সুচিন্তিত মতামত পাঠকদের জন্য উপস্থাপিত হলো-

সংক্রমণ ও টিকায় দেহে যথেষ্ট অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে : ড. বিজন কুমার শীল

নিওকোভ মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ঘটালেও এখনই ভয়ের কোনো কারণ নেই— এমনটি মনে করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অণুজীববিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল। সম্প্রতি ঢাকা পোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘নিওকোভ নিয়ে সারা পৃথিবীতে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। ভাইরাসটি নিঃসন্দেহে নতুন। এর সঙ্গে মার্স (মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) নামক অন্য আরেকটি ভাইরাসের মিল রয়েছে, যা ২০১২ সালে মধ্যপ্রাচ্যে পাওয়া গিয়েছিল। ২০১৫ সাল পর্যন্ত সেখানে এটি ছিল। ওই ভাইরাসে মৃত্যুর হার ছিল ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ। আর আমরা যে নতুন নিওকোভ ভাইরাসটি দেখছি, সেটির সঙ্গে মার্সের প্রায় ৮৫ শতাংশ মিল রয়েছে।’

যদি নতুন এ ধরন মার্সের মতো চরিত্র নিয়ে মানুষকে অ্যাটাক করে, তাহলে যে পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। সেক্ষেত্রে বিশিষ্ট এ অণুজীববিজ্ঞানীও ‘নিওকোভ কিছুটা ভয়ের কারণ’ হিসেবে দেখছেন। তবে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ফলে মানুষের দেহে যথেষ্ট অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে— উল্লেখ করে ড. বিজন কুমার শীল বলেন, ‘২০২০ ও ২০২২ সাল, দুটো কিন্তু ভিন্ন জিনিস। ২০২০ সালে আমাদের বৈশ্বিক কমিউনিটিতে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করার মতো তেমন অ্যান্টিবডি ছিল না। ফলে এটি প্যানডেমিক (মহামারি) আকারে ছড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়। এখন গত দুই বছরে আমরা বিভিন্ন ধরনের ভেরিয়েশন অব কনসার্নের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে দেহের ইমিউন সিস্টেম অনেকটা শক্তিশালী করে ফেলেছি।’

dhaka post
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অণুজীববিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল 

‘আমাদের অনেকেই ইতোমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আবার বিশাল একটা জনসংখ্যা টিকার আওতায় নিয়ে এসেছি আমরা। শুধু টিকার আওতায় নয়, দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার পর আবার অনেককে বুস্টার ডোজও দেওয়া হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ওমিক্রনের যে ম্যাসিভ ট্রান্সমিশন হয়েছে, এতে করে ৭০ শতাংশের বেশি মানুষের দেহে শক্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে।’

‘যদি নিওকোভ ২০২২ সালে না এসে ২০২০ সালে আসত, তাহলে হয়তো এটি ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারত। কারণ, তখন আমাদের দেহে যথেষ্ট অ্যান্টিবডি ছিল না। কিন্তু করোনার সঙ্গে লড়াই করে এবং টিকার মাধ্যমে এখন আমাদের দেহের ইমিউন সিস্টেম যেভাবে ডেভেলপ করেছে, সেখানে এ জাতীয় ভাইরাস এসে সেই অ্যান্টিবডি-কে অতি সহজে পরাজিত করতে পারবে বলে আমি মনে করি না।’

ডেল্টা-ওমিক্রনের সঙ্গে নিওকোভের কোনো সম্পর্ক নেই : ডা. বেনজির আহমেদ

নিওকোভ করোনাভাইরাসের নতুন ধরন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ নানা জায়গায় এমনটি প্রচার হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর— বলছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, ‘নিওকোভ আসলে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) বিভিন্ন ধরন থেকে পুরোপুরি আলাদা। অর্থাৎ আমরা যে করোনার ধরন হিসেবে ইউকে, ডেল্টা দেখেছি এবং বর্তমানে ওমিক্রন দেখছি, সেটির সঙ্গে নিওকোভের কোনো সম্পর্ক নেই।’

‘সার্স-কোভ- ২ এর মধ্যে আমরা অনেকগুলো ধরন পেয়েছি। একেকটির একেক ধরনের ছড়ানোর ক্ষমতা, ভেদ করার ক্ষমতা আমরা দেখতে পেয়েছি। যেমন- আমরা দেখেছি ডেল্টা বেশি মৃত্যু ঘটিয়েছে। আবার ওমিক্রন দেখছি অনেক বেশি ছড়াচ্ছে। কিন্তু ডেল্টার তুলনায় মৃত্যু কম হচ্ছে।’

‘আবার আমরা যদি সার্স-কোভ-১ দেখি, তাহলে দেখা যায় সেটি বেশ মারাত্মক সংক্রমণ ঘটিয়েছিল। আবার দ্রুত এটি শেষও হয়ে যায়। মার্স-কোভ এতটা না ছড়ালেও মৃত্যুহার অনেক বেশি ছিল। এমনকি এটির স্থায়িত্বও ছিল বেশ কিছুদিন। প্রায় তিন চার বছরের মতো। কিন্তু সেটি কখনও মহামারি আকারে ছড়ায়নি। শুরুতে এটি মধ্যপ্রাচ্যে ছড়ায়, পরে তা সাউথ কোরিয়াতে সংক্রমণ  ঘটায়।

dhaka post
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ 

ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, এখন নিওকোভ নামে যে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে, এটি মার্স-কোভের মতোই। বর্তমানে এটি প্রাণীতেই আছে, মানবদেহে এখনও সংক্রমণ ঘটাতে পারেনি। তবে বিজ্ঞানীরা দেখছেন, এর যে বৈশিষ্ট্যগুলো আছে, সে অনুযায়ী এর মর্টালিটি (মৃত্যুহার) বেশি। সেদিক থেকে এটি চিন্তার বিষয়।

‘নিওকোভ কতটা সংক্রমণ ঘটাবে বা আদৌ এ ভাইরাস সংক্রমণ ঘটাবে কি না,  তা এখনও নিশ্চিত নয়। এটি সময়ের ব্যাপার। তাই বর্তমানে যে কোভিড মহামারি চলছে, সেটির সঙ্গে একে (নিওকোভ) মিলিয়ে আমরা চিন্তা করছি না’— বলেন এ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।

মানবদেহে সংক্রমিত হলে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত মৃত্যু : ড. মেহেদী আকরাম

যুক্তরাজ্যের শেফিল্ড ইউনিভার্সিটির সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট ড. খোন্দকার মেহেদী আকরাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘নিওকোভ কোভিডের নতুন কোনো ধরন নয়, এটি চলমান মহামারির নতুন কোনো রূপান্তরিত ভাইরাসও নয়। সুতরাং নিওকোভ নিয়ে আমাদের এখনই কোনো ভীতি বা দুশ্চিন্তার কারণ নেই। এখন পর্যন্ত এ ভাইরাস থেকে আমরা নিরাপদ। মানুষের ভেতরে এ ভাইরাসের কোনো অস্তিত্ব নেই। সাধারণ জনগণ হিসেবে আমাদের দুশ্চিন্তার বা ভয়ের কোনো কারণ নাই।’

‘করোনাভাইরাসের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটো ভাইরাস হচ্ছে- সার্স ও মার্স ভাইরাস। কোভিড- ১৯ মহামারি হচ্ছে যে করোনাভাইরাসটি দিয়ে, তার নাম নভেল করোনাভাইরাস বা সার্স-কোভ-২, যা সার্স গোত্রের একটি ভাইরাস। অন্যদিকে, নিওকোভ হচ্ছে মার্স ভাইরাস গোত্রের অন্তর্গত। এমনকি, মার্স-কোভের সঙ্গে নিওকোভের গঠনগত মিল রয়েছে প্রায় ৮৫ শতাংশ।’

ড. মেহেদী আকরামের ভাষায়, এখন পর্যন্ত গবেষণায় দেখা গেছে, মার্স ভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায় অপেক্ষাকৃত কম, কিন্তু একবার সংক্রমণ করলে তা ফুসফুসে সৃষ্টি করে মারাত্মক নিউমোনিয়া। ফলে মার্স-কোভ ভাইরাসে মৃত্যুর হার প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ। তবে স্বস্তির কথা হচ্ছে, নিওকোভ ভাইরাস শুধুমাত্র বাদুড়কেই সংক্রমণ করতে পারে। এটি এখনও মানুষকে সংক্রমণ করতে পারেনি। এর কারণ হলো বাদুড় ও মানুষের এসিই-টু রিসেপ্টরের মধ্যে গঠনগত কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।

dhaka post
যুক্তরাজ্যের শেফিল্ড ইউনিভার্সিটির সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট ড. খোন্দকার মেহেদী আকরাম 

যদি নিওকোভ মানুষের শরীরে সংক্রমণ ঘটায়, তাহলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে— উল্লেখ করে এ বিশেষজ্ঞ বলেন, বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা হলো দক্ষিণ আফ্রিকার এক বিশেষ প্রজাতির বাদুড়ের শরীরে থাকা নিওকোভ ভাইরাসে যদি কোনোভাবে স্পাইক প্রোটিনের বিশেষ মিউটেশন হয়, যাতে তারা মানুষের এসিই-টু রিসেপ্টরের সঙ্গে বন্ধন সৃষ্টি করার সক্ষমতা অর্জন করে, তাহলে তা অতিদ্রুত ছড়িয়ে পড়বে মানুষের মাঝে। এমনকি সঠিক সময় সঠিক পদক্ষেপ না নিলে এ রূপান্তরিত নিওকোভ আরেকটি মহামারির সূচনা করতে পারে। তাই তাত্ত্বিকভাবে বলা যায়, নিওকোভ দিয়ে কোনো মহামারি হলে তা হবে অত্যন্ত ভয়াবহ। কারণ, এটি মূলত একটি মার্স ভাইরাস, যার সংক্রমণে মৃত্যুর হার হতে পারে প্রায় ৪০ শতাংশ।’

নিওকোভ নিয়ে বিস্তর গবেষণা প্রয়োজন : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

এদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) নিওকোভ মানবদেহের জন্য হুমকি হবে কি না— তা নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে। সংস্থাটি বলছে, যেসব ভাইরাস মানবদেহে আক্রান্ত করে, তার ৭৫ শতাংশেরই উৎস বন্যপ্রাণী। বাদুড়সহ বিভিন্ন প্রাণীর শরীরে প্রায়ই বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস শনাক্ত হয়। এসব ভাইরাসের বেশির ভাগের প্রাকৃতিক ভান্ডার হিসেবে বাদুড়কে ধরে নেওয়া হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) নিওকোভ মানবদেহের জন্য হুমকি হবে কি না— তা নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে। সংস্থাটি বলছে, যেসব ভাইরাস মানবদেহে আক্রান্ত করে, তার ৭৫ শতাংশেরই উৎস বন্যপ্রাণী। বাদুড়সহ বিভিন্ন প্রাণীর শরীরে প্রায়ই বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস শনাক্ত হয়। এসব ভাইরাসের বেশির ভাগের প্রাকৃতিক ভান্ডার হিসেবে বাদুড়কে ধরা হয়

ডব্লিউএইচও’র দাবি, প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে তারা নিবিড়ভাবে কাজ করছে। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার আগেই গবেষণার তথ্য (নিওকোভ) দেওয়ায় চীনা গবেষকদের প্রতিও ধন্যবাদ জানিয়েছে সংস্থাটি।

dhaka post
নিওকোভ মানবদেহের জন্য হুমকি হবে কি না— তা নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন, বলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা / ফাইল ছবি

সম্প্রতি চীনের উহান প্রদেশের একদল বিজ্ঞানী একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন প্রি-প্রিন্ট সার্ভার বায়ো-আর্কাইভে, যেটিকে বলা হচ্ছে উঁচুমানের এবং বিস্তারিত একটি গবেষণা। অতিদ্রুতই হয়তো এটি নেচার জার্নালে প্রকাশিত হবে। গবেষণাপত্রটি আপাতত পিয়ার রিভিউ প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazar_crimenew87
© All rights reserved © 2015-2021
Site Customized Crimenewsmedia24.Com