করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে দীর্ঘ দেড় বছরেরও বেশি সময় কঠোর বিধিনিষেধ ও বাধ্যতামূলক টিকাদানের মাধ্যমে সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।
কিন্তু করোনাভাইরাসের সবচেয়ে সংক্রামক ধরনের স্বীকৃতি পাওয়া ওমিক্রনের প্রভাবে ভেঙে পড়ছে সেই নিয়ন্ত্রণ। প্রতিদিনই সংক্রমণ-মৃত্যু বাড়ছে সেখানে; এর মধ্যেই মঙ্গলবার করোনায় একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যু দেখল দেশটি।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ায় করোনাজনিত কারণে মারা গেছেন ৭৭ জন। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে দেশটির দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় এবং সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ নিউ সাউথ ওয়েলসে- ৩৬ জন।
গত বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ায় করোনায় মারা যান ৫৭ জন। মঙ্গলবারের আগ পর্যন্ত সেটিই ছিল দেশটিতে করোনায় একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যুর রেকর্ড।
এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলেছে, মঙ্গলবার নিউ সাউথ ওয়েলসে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৪ জন করোনা টিকার তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ নিয়েছিলেন, বাকিরা সম্পূর্ণ করেছিলেন টিকার দুই ডোজ।
নিউ সাউথ ওয়েলসের মুখ্যমন্ত্রী ডমিনিক পেরোটেট মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আজ আমরা খুব কঠিন একটা দিন পার করলাম।’
এদিকে, ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাবে অস্ট্রেলিয়ার সাত প্রদেশের সবগুলোতেই বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের সংখ্যা। রোগীর চাপ সামাল দিতে দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের অপর প্রদেশ ভিক্টোরিয়ার সরকার ইতোমধ্যে রাজ্যের হাসপাতালগুলোতে ‘কোড ব্রাউন’ বা স্বল্পকালীন জরুরি অবস্থা জারি করেছে। অর্থাৎ, আপাতত হাসপাতালগুলোতে খুব জরুরি নয়- এমন স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া স্থগিত থাকবে।
এছাড়া দেশজুড়ে হাসপাতালগুলোতে লোকবল বাড়াতে ৫৭ হাজার নার্সসহ ১ লাখেরও বেশি স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করা হবে বলেও দেশবাসীকে এক ঘোষণায় জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী গ্রেগ হান্ট।
২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১৮ লাখ ৭৬ হাজার ৩৫ জন এবং এই রোগে মারা গেছেন মোট ২ হাজার ৭৭৬ জন।
মঙ্গলবার দেশটিতে করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৭৩ হাজার ৫৮০ জন।