দুই বছরের করোনা মহামারি একদিকে যেমন ধনীদের সম্পদ বাড়িয়ে দিয়েছে দ্বিগুণ কিংবা তারও বেশি, তেমনি বিপুল সংখ্যক মানুষকে ঠেলে দিয়েছে চরম দারিদ্র্যের মুখে।
আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফাম ইন্টারন্যাশনাল সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মহামারিতে এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্যের শিকার হয়েছেন ১৬ কোটিরও বেশি মানুষ। অর্থাৎ, মহামারির আগে বিশ্বে যতসংখ্যক মানুষ চরম দরিদ্র ছিলেন, গত দুই বছরে তাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়া জনগণের সংখ্যা ১৬ কোটিরও বেশি
ধনীব্যাক্তিদের সম্পদের পরিমাণ অবশ্য অকল্পনীয় হারে বেড়েছে মহামারির প্রথম দুই বছরে। ‘অসাম্য প্রাণঘাতী’ প্রতিবেদনের এক জায়গায় এ সম্পর্কে বলা হয়, গত দুই বছরে প্রতি সেকেন্ডে বিশ্বের শীর্ষ ১০ জন ধনীর সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ১৫ হাজার ডলার করে। অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক গ্যাব্রিয়েলা বুচার এ সম্পর্কে বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘বিশ্বের চরম দরিদ্র ৩১০ কোটি মানুষের সব সম্পদ যোগ করলে যত হবে, শীর্ষ ১০ ধনীর মোট সম্পদের পরিমাণ তার ৬ গুণেরও বেশি।’
দুই বছরে শীর্ষ ১০ ধনীর সম্পদ যে হারে বেড়েছে, গত ১৪ বছরেও তেমন দেখা যায়নি- উল্লেখ করে গ্যাব্রিয়েলা বলেন,
এই শীর্ষ ধনীদের মোট সম্পদের ওপর ধার্যকৃত কর যদি ঠিকমতো আদায় করা হয়, সেই করের মাত্র ১ শতাংশ দিয়ে বিশ্বের সব মানুষের জন্য পর্যাপ্তসংখ্যক টিকা প্রস্তুত করা কিংবা অন্তত ৮০ টি দেশের সামাজিক-জলবায়ুগত ও লিঙ্গভিত্তিক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত তহবিলের যোগান দেওয়া সম্ভব।
গ্যাব্রিয়েলা বুচার বলেন, ‘মহামারি যে পরিমাণ অর্থনৈতিক অসাম্য বাড়িয়েছে- তা এক কথায় অশ্লীল। এই অসাম্যের কারণে বিশ্বজুড়ে শুধু দরিদ্রের সংখ্যাই নয়, বেড়েছে সামাজিক ও লিঙ্গভিত্তিক সন্ত্রাসও। বিশ্বের রাষ্ট্রগুলোর উচিত শীর্ষ ধনীদের করের আওতায় আনা, প্রয়োজনে কর আইন সংশোধন করা ও যথাযথভাবে তা(কর) আদায় করা।