চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। তবে আগের দিনের কিছুটা কমেছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রায় ৫ হাজার মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা রয়েছে ১৯ লাখ ২৯ হাজারের ঘরে
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ইতালি, হাঙ্গেরি ও আর্জেন্টিনা। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩৩ কোটি ১১ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৫ লাখ ৬৩ হাজার।
মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪ হাজার ৯৩২ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় এক হাজার। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৫ লাখ ৬৩ হাজার ১০৭ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ লাখ ২৯ হাজার ১২২ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে প্রায় ২ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ কোটি ১১ লাখ ২৭ হাজার ১০৬ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৫৫৮ জন এবং মারা গেছেন ৪২৪ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৬ কোটি ৭৪ লাখ ৯৪ হাজার ৯৬৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৮ লাখ ৭৪ হাজার ২১৩ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৭০ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩০ হাজার ৭২৬ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৮ লাখ ৩৪ হাজার ২৬০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ২১ হাজার ৯৯০ জনের।
এছাড়া গত এক দিনে যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৪ হাজার ৪২৯ জন এবং মারা গেছেন ৮৫ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৫৩ লাখ ৫ হাজার ৪১০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৫২ হাজার ৭৫ জন মারা গেছেন। একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৩ হাজার ৪০৩ জন এবং মারা গেছেন ২৮৭ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ২ হাজার ১৪৪ জন এবং মারা গেছেন ২৯৬ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৪২ লাখ ৭৪ হাজার ৫২৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ২৭ হাজার ২৬৩ জন মারা গেছেন। একই সময়ে কলম্বিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ হাজার ২৭২ জন এবং মারা গেছেন ১৩৪ জন।
এছাড়া জার্মানিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৩ হাজার ৯১৬ জন এবং মারা গেছেন ১৪৩ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৮০ লাখ ৪৫ হাজার ৩৪৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ১৬ হাজার ৪১১ জন মারা গেছেন। একই সময়ের মধ্যে ইউক্রেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৭২ জন এবং মারা গেছেন ৭৮ জন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৬২ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৭৬ হাজার ৩৪৫ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ৩০ লাখ ৮৩ হাজার ২৯৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ২১ হাজার ২৬১ জনের।
এদিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৩ কোটি ৭৬ লাখ ২ হাজার ৮৩২ জন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৭৮৪ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় তুরস্কে ১৬২ জন, হাঙ্গেরি ২৭০ জন, দক্ষিণ আফ্রিকায় ৮৭ জন, গ্রিসে ১০৩ জন, কানাডায় ১৪৯ জন এবং আর্জেন্টিনায় ১৯১ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ৭৬ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ১ হাজার ৪১০ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।