মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫, ০৮:৪৫ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
"ফটো সাংবাদিক আবশ্যক" দেশের প্রতিটি থানা পর্যায়ে "ক্রাইম নিউজ মিডিয়া" সংবাদ সংস্থায় ১জন রিপোর্টার ও ১জন ফটো সাংবাদিক আবশ্যক। আগ্রহী প্রার্থীরা  যোগাযোগ করুন। ইমেইলঃ cnm24bd@gmail.com ০১৯১১৪০০০৯৫

মা-ছেলের বন্দী জীবনে মৃত্যুর ঘণ্টা বাজছে

  • আপডেট সময় বুধবার, ১৯ মে, ২০২১, ৫.৩৯ এএম
  • ৪৯৫ বার পড়া হয়েছে
মা-ছেলের বন্দী জীবনে মৃত্যুর ঘণ্টা বাজছে

সিএনএম প্রতিনিধিঃ

রংপুর সিটি করপোরেশনের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বধূকমলা গ্রামে ৩ ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে সুখের সংসার ছিল অটোচালক আব্দুর রশীদের। হঠাৎ বড় ছেলে দুখল মিয়া (৩০) মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। এরপর থেকে তাকে ঘরের ভেতর শিকল বন্দি করে রাখা হয়। এর কিছুদিন পর তার মা দুলালী বেগমও (৫৫) মানসিক রোগে আক্রান্ত হন। পরে তাকেও আলাদা ঘরে বন্দি করে রাখা হয়। মা ও ছেলের এভাবেই বছরের পর বছর ধরে কাটছে বন্দি জীবন। তাদের চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন আব্দুর রশীদ। তবু সুস্থ হয়ে ওঠেননি তারা।

মা ও ছেলের বছরের পর বছর ধরে কাটছে বন্দি জীবন

জানা যায়, আব্দুর রশীদের বড় ছেলে দুখল মিয়া প্রায় ১২ বছর আগে ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় কাজের জন্য যান। সেখানে কিছুদিন কাজ করার পর অসুস্থ হলে বাড়িতে চলে আসেন। এর পর মানসিক রোগ দেখা দিলে পাগলামি শুরু হয় তার। প্রথমদিকে তার অসুস্থতা কারও জন্য ভয়ের কারণ না হলেও পরে উন্মাদ হয়ে যান দুখল মিয়া।

শরীরে কোনো কাপড় পড়েন না, সব সময় উলঙ্গ থাকেন। গ্রামের লোকজনের ওপর চড়াও হন। যাকে সামনে পান তাকেই মারধর করতেন। ফলে পরিবারের লোকজন প্রায় ৮ বছর থেকে তাকে একটি ঘরে শিকলে বেঁধে রেখেছেন। কেউ কাছে যেতে পারেন না। দূর থেকে তাকে খাবার দেয়া হয়। মলমূত্র ঘরেই ত্যাগ করেন। সারা শরীর কাদামাটিতে মাখা থাকে।

ছেলে বদ্ধ উন্মাদ হওয়ার কিছুদিন পরে মা দুলালী বেগমেরও মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। তাকেও প্রায় ৭ বছর ধরে পৃথক আরেকটি ঘরে বন্দি করে রাখা হয়েছে। কেউ তার সঙ্গে দেখা করতে পারেন না। ঘরেই খাওয়া দাওয়া, মলমূত্র ঘরেই ত্যাগ করেন দুলালী।

অটোচালক আব্দুর রশীদ বলেন, ‘মা-ছেলের চিকিৎসার জন্য যেটুকু আবাদি জমি ছিল সব বিক্রি করেছি। অনেক চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়েছি কিন্তু তারা সুস্থ হয়নি। মা-ছেলের চিকিৎসা করাতে করাতে এখন নিঃস্ব হয়ে পড়েছি। ভিটাবাড়ি ছাড়া বিক্রি করার মতো এখন কিছুই নেই। অটো চালিয়ে কোনো রকমে পেট চালাচ্ছি। স্ত্রী-পুত্রের চিকিৎসা করার মত সামর্থ্য এখন নেই। তাই স্ত্রীকে একটি ঘরে আর ছেলেকে অন্য ঘরে শিকলবন্দি করে রেখেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘অন্য দুই ছেলের মধ্যে এক ছেলে বিয়ে করে অন্যত্র চলে গেছে। ছোট ছেলেকে নিয়ে এই দুই রোগীকে সামলাতে হিমশিম খেতে হয়।’

ওই এলাকাবাসিরা জানান, পরিবারটি এক সময় সচ্ছল ছিল। কিন্তু একই পরিবারের দুজন পাগল হওয়াতে চিকিৎসা করাতে করাতে রশীদ মিয়া প্রায় নিঃস্ব হয়ে গেছেন। মা-ছেলের চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান এলাকাবাসীরা।
সংশ্লিষ্ট ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মামুনার রশিদ মানিক বলেন, ‘ওই পরিবারটির চিকিৎসায় সহায়তার জন্য আবেদন চাওয়া হয়েছে। আবেদন পেলে সিটি মেয়রের মাধ্যমে তাদের সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় চেষ্টা করা হবে।’

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2015-2025
Theme Developed BY ThemesBazar.Com