সিএনএমঃ
বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে বসেছেন নাসিমা আক্তার অনন্যা (২১) নামে এক সন্তানের জননী। দাবি না মানলে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার হুমকিও দিচ্ছেন তিনি। এ দিকে তাকে দেখে পালিয়েছে প্রেমিকের বাবা-মাসহ পরিবারের লোকজন। এ বিষয়ে অনন্যা থানায় লিখিত অভিযোগও করেছেন।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে এ ঘটানাটি ঘটেছে প্রেমিকের বাড়ি নোয়াখালী হাতিয়ার চরঈশ্বর ইউনিয়নের গামছাখালী গ্রামে।
জানা যায়, প্রেমিক আতিকুল ইসলাম রাসেল (২৫) একই এলাকার শের আলীর ছেলে। প্রেমিকা নাসিমা আক্তার অনন্যা ভোলা জেলার সদর উপজেলার পৌর কাঠালি এলাকার মৃত আজিজুল ইসলামের মেয়ে।
ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বোরকা পরিহিত মহিলা ঘরের সামনে বসে আছেন। এলাকার অনেক নারী-পুরুষ তাকে দেখতে এসেছেন। এ সময় প্রেমিক রাসেলদের পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের ঘরে দরজা বন্ধ থাকতে দেখা যায়।
স্থানীয়রা জানান, নাসিমা আক্তার অনন্যা নামের মেয়েটি সকাল থেকে রাসেলদের বাড়িতে অবস্থান করছেন। তাকে বিয়ে করা না হলে সে বিষ পান করে আত্মহত্যা করার হুমকি দিচ্ছেন অনন্যা। এই ঘটনায় ছেলের পরিবারের সবাই পালিয়েছে। এলাকার লোকজন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছেন। ছেলের পরিবার বিষয়টি মেনে নিচ্ছে না। ইতোমধ্যে থানা থেকে পুলিশের লোকজন এসেছে।
প্রেমিক অনন্যার সঙ্গে এসেছে তার বোনের জামাই ইসরাফিল। ইসরাফিল বলেন, ‘চার বছর আগে ঢাকাতে গার্মেন্টেসে চাকরির সুবাদে তাদের দুজনের পরিচয় হয়। শুরু হয় মন দেওয়া নেওয়া। একপর্যায়ে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে চাকরিচ্যুত করা হয় প্রেমিক রাসেলকে। কিন্তু এরপরও তাদের যোগাযোগ অব্যাহত থাকে। ইতোমধ্যে তারা বিভিন্ন জায়গায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ঘোরাফেরা করেন। অনন্যা বিবাহিত সে এক সন্তানের জননী। এক বছর আগে রাসেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ককে কেন্দ্র করে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এখন রাসেলও তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন। এর আগে, রাসেল নিয়মিত অনন্যার ঢাকার বাসায় যাতায়াত করতেন। হঠাৎ যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ায় অনন্যা ঠিকানা সংগ্রহ করে তাদের বাড়ি চলে এসেছে।’
অনশনে বসা প্রেমিকা অনন্যা বলেন, ‘রাসেলের সঙ্গে তার দীর্ঘ ৪ বছরের সম্পর্ক। এক সন্তানের জননী আমি। সব জেনেই রাসেল আমাকে বিয়ে করবে বলে দীর্ঘদিন শারীরিক সম্পর্ক চালিয়ে আসছে। রাসেলের দেওয়া বিয়ের আশ্বাসে আমি আমার আগের স্বামীকে ত্যাগ করেছি। এর আগে রাসেল বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে আমার কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এখন রাসেল আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। এজন্য ঠিকানা সংগ্রহ করে আমি রাসেলের বাড়িতে এসে অবস্থান করছি। আমাকে বিয়ে না করলে আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।’
হাতিয়া থানার উপ-পরিদর্শক আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘নাসিমা আক্তার অনন্যা নামে এক মেয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। রাসেলের পরিবারের সবাই পালিয়েছে। বিষয়টি মীমাংসার জন্য ছেলে পক্ষকে খোঁজা হচ্ছে।’