সিএনএমঃ
রাজধানীর পূর্বাচলে রাজউকের প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে করা পাঁচ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা, শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, রেহানার দুই মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিকসহ ২৮ জনকে ২০ জুলাই আদালতে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এই নির্দেশ দেন বলে আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রসিকিউশন দপ্তর জানিয়েছে।
পূর্বাচলে রাজউকের প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগ-সংক্রান্ত ওই পাঁচ মামলায় আজ ওই ২৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল-সংক্রান্ত প্রতিবেদনের জন্য দিন ধার্য ছিল।
সংশ্লিষ্ট থানা থেকে আসামিদের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল-সংক্রান্ত প্রতিবেদন ফেরত আসায় আদালত তাঁদের হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য সরকারকে নির্দেশ দেন।
পৃথক পৃথক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল-সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসামিদের সংশ্লিষ্ট ঠিকানায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
পূর্বাচলে রাজউকের প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে করা আরেক মামলায় গত ২৫ মে শেখ হাসিনাসহ ১২ জনকে আদালতে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না হওয়ায় আদালত ওই মামলায় আবার নতুন করে তারিখ ধার্য করেছিল। আজ সেই মামলায়ও ওই ১২ আসামিকে ২০ জুলাই আদালতে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দেওয়া হয়।
এখন সব মিলিয়ে ছয় মামলার ২৮ আসামিকে ২০ জুলাই আদালতে হাজির করাতে সরকারকে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে।
অন্য যাঁদের হাজির হতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা হলেন রাজউকের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার, জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব মো. অলিউল্লাহ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াসি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান মিয়া, রাজউকের সদস্য মো. খুরশিদ আলম, তন্ময় দাস, মো. নাসির উদ্দিন, সাবেক সদস্য মেজর (অব.) শামসুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ও শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।
এ ছাড়া আছেন রাজউকের সাবেক সদস্য মো. মাজহারুল ইসলাম, কবির আল আসাদ, সহকারী পরিচালক ফারিয়া সুলতানা, নায়েব আলী শরীফ, উপপরিচালক কামরুল ইসলাম, হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম এবং মো. নুরুল ইসলাম, শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিবের একান্ত সহকারী শহীদুল্লাহ খন্দকার এবং সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
এসব মামলায় শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে গত ১৩ ও ১৫ এপ্রিল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
নিজের এবং স্বজনদের নামে প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা করা হয়। গত ১২, ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি দুদক এই মামলাগুলো করে।
মামলার প্রত্যেকটিতে শেখ হাসিনাকে আসামি করা হয়। অন্যান্য মামলায় বিভিন্নজনকে আসামি করা হয়। তবে রাজউক এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা প্রত্যেকেই শেখ হাসিনার সঙ্গে ছয় মামলার আসামি।
এর আগে গত ২৫ মার্চ ছয় মামলার ২৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। অভিযোগপত্রে শেখ হাসিনাসহ ২৮ জনকে পলাতক দেখানো হয়।
দুদকের নথি অনুসারে, রাজউক কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে নিজের জন্য, তাঁর বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও শেখ রেহানার ছেলেমেয়েদের জন্য তথ্য গোপন করে প্লট বরাদ্দ নিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।