বরিশাল প্রতিনিধিঃ
মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভগ্নিপতি শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত এর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বরিশালে বর্ণাঢ্য ‘নৌকা বাইচ’ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২৭ মার্চ) বিকাল ৪টায় কীর্তনখোলা নদীতে ব্যাপক আনন্দঘন পরিবেশে এই নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হয়।
নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতাকে ঘিরে দুপুর ২টার পর থেকেই বরিশাল নগরী ও সদর উপজেলা প্রান্তে কীর্তনখোলা নদীর দুই তীরে শত শত মানুষের ভিড় জমে যায়। তারা দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকে উপভোগ করেন ঐতিহ্যবাহী ‘নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা’।
নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা উৎসবমুখর করে তুলতে নদীর মাঝে ইঞ্জিন চালিত ট্রলারে আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। এ অনুষ্ঠানে স্থানীয় কণ্ঠ শিল্পিরা গান এবং নৃত্যশিল্পিরা নৃত্য পরিবেশন করেন। এর ফলে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতাকে ঘিরে উৎসব মুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয় কীর্তনখোলা’র তীরে।
‘বিকাল ৪টায় বরিশাল নগরীর দপদপিয়া শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতুর নীচ থেকে শুরু হয় ‘নৌকা বাইচ প্রতিযোগীতা’। প্রতিযোগিরা বরিশাল নদীর বন্দর (লঞ্চঘাট) এলাকা পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার নদীপথ পাড়ি দিয়ে জয়-পরাজয় নিশ্চিত করেন। এ প্রতিযোগিতায় মোট ১০টি গ্রুপ অংশগ্রহণ করে। পুরুষের পাশাপাশি নারীদের একটি দল প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।
নৌকা বাইচকে ঘিরে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নদীর তীরে এবং নদীর অভ্যন্তরে স্পিডবোর্ড ও ট্রলার যোগে নৌ থানা এবং বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তা জোরদার করেন।
পাশাপাশি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ্ নিজেও ‘ওয়াটার বাইক’ নিয়ে নদীতে নৌকা বাইচ’ উপভোগসহ সার্বিক বিষয়ে তদারকি করেন। তবে নদীতে উৎসুক জনতার ট্রলার প্রতিযোগিতায় বিঘ্ন ঘটায়। এসময় অংশ নেওয়া ৫টি বাইচ নৌকা ডুবে গেলে বরিশাল সদর নৌ-পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা মাঝিমাল্লাদের উদ্ধার করেন।
প্রতিযোগিতা শেষে কীর্তনখোলা নদীর তীরবর্তী বধ্যভূমি এলাকায় পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ ছাড়াও মেয়র পন্তী লিপি আবদুল্লাহ, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা রুবিনা আক্তার মিরা, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান-বিপিএম (বার), বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য তালুকদার মো. ইউনুস, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট এ.কে.এম জাহাঙ্গীর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অতিথিবৃন্দ চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের প্রতিযোগিদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। এদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন গ্রুপ আউয়াল মোল্লার নেতৃত্বাধীন সুন্দরবন গ্রুপকে তিন লক্ষ টাকা, রানার্সআপ দল বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব হোসেন খান এর নেতৃত্বাধীন পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ গ্রুপকে দুই লক্ষ টাকা এবং দ্বিতীয় রানার্সআপ বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর সাইদ আহমেদ মান্না’র নেতৃত্বাধীন টিমকে এক লক্ষ টাকা পুরস্কার দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা অপর দলগুলোকে ৫০ হাজার টাকা করে পুরস্কার দেয়া হয়েছে।