ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষস্থান নিয়ে ইঁদুর-বিড়াল খেলা শেষই হচ্ছে না যেন। ঘণ্টা তিনেক আগে লিভারপুল কষ্টার্জিত এক জয়ে উঠে এসেছিল টেবিলের শীর্ষে। তাতে ম্যানচেস্টার সিটিকে চাপেও ফেলে দিয়েছিল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপের শিষ্যরা। তবে সিটি নিজেদের ম্যাচে লিডস ইউনাইটেডকে ৪-০ গোলে হারিয়ে লিগের শীর্ষস্থান তো ফিরে পেয়েছেই, সেই চাপটাও আবার লিভারপুলকে ফেরত দিয়েছে পেপ গার্দিওলার দল।
এমনটা সাধারণত দেখা যায় ফুটবলের নকআউট ম্যাচে। নির্ধারিত সময়, যোগ করা অতিরিক্ত সময়ের পর পেনাল্টিতেও সমতা থাকলে ম্যাচে খেলা গড়ায় সাডেন ডেথে। সেখানে পা হড়কালেই খেলা শেষ, ম্যাচ যাবে হাত থেকে ফসকে। সিটি আর লিভারপুলের শিরোপার লড়াইটাও যেন গিয়ে ঠেকেছে সেখানেই। পা হড়কালেই লিগ শেষ। তবে সিটি আর লিভারপুল কেউই পা হড়কাচ্ছে না। তাতে প্রিমিয়ার লিগের শেষের লড়াইটাও জমে উঠেছে ভালোভাবেই।
দিনের শুরুর ম্যাচে লিভারপুলকে কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে বেশ। নাবি কেইটার একমাত্র গোলে জিতে ফিরেছে নিউক্যাসলের মাঠ থেকে। সেই জয়ের ফলে ৩৪ ম্যাচে ৮২ পয়েন্ট নিয়ে লিগ তালিকার শীর্ষেও উঠে এসেছিলেন মোহামেদ সালাহ-সাদিও মানেরা।
স্কোরলাইন না দেখালেও লিভারপুলের মতো কষ্ট করেই জয়টা তুলে নিতে হয়েছে সিটিকে। প্রতিপক্ষের মাঠ এলান্ড রোডে যে লিডস ইউনাইটেড অন্তত শুরুর অর্ধে নাভিশ্বাসই তুলে বসেছিল দলটির! ১৩ মিনিটে ফিল ফোডেনের ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন রদ্রি হার্নান্দেজ। বিয়েলসা যুগের আক্রমণাত্মক ফুটবলে লিডসও পালটা জবাব দিচ্ছিল বিরতির আগে। তাতে সিটির পয়েন্ট খোয়ানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছিল না একটুও।
বিরতির পর রুবেন ডিয়াজের বাড়ানো বল থেকে গোল করেন ডিফেন্ডার ন্যাথান একে। তাতে কিছুটা স্বস্তি ফেরে সিটি শিবিরে। তবু অবশ্য স্বাগতিকরা আশা ছাড়েনি। তবে শেষ দিকে গ্যাব্রিয়েল জেসুসের টানা তৃতীয় ম্যাচে গোল পাওয়া সে আশা শেষ করে লিডসের। এরপর ফার্নান্দিনিওর গোলে স্বাগতিকদের কফিনে শেষ পেরেকটা ঠোকে সিটি। ৩৪ ম্যাচে ৮৩ পয়েন্ট নিয়ে লিভারপুলকে এক পয়েন্টের ব্যবধানে দুইয়ে ঠেলে টেবিলের শীর্ষেও চলে আসে দলটি।
এই ম্যাচ দিয়ে লিডসের বিপক্ষে ৪০ বছর পর লিগের দুই লড়াইয়েই জয় তুলে নিতে পারল সিটি। ১৯৮১-৮২ মৌসুমে সর্বশেষ যখন দুই লেগেই লিডসের বিপক্ষে জিতেছিল সিটি, তখন এলান্ড রোডের দলটিকে নেমে যেতে হয়েছিল দ্বিতীয় বিভাগে। কাকতালীয়ভাবে এ মৌসুমেও একই নিয়তি চোখ রাঙাচ্ছে লিডসকে। ৩৪ ম্যাচে সমান সংখ্যক পয়েন্ট নিয়ে দলটি এখন আছে ১৭তম অবস্থানে। তাদের নিচে অবনমন অঞ্চলে থাকা এভারটনের পয়েন্ট ২৯, তবে ম্যাচ দুটো কম খেলেছে টফিরা। ৪০ বছর আগের সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি এবারও হোক, এমনটা নিশ্চয়ই চাইবে না লিডস!