সম্প্রতি ডায়রিয়া রোগীর প্রকোপ বেড়ে গেছে। ওয়াসার পানি এর বড় কারণ হলেও এ বিষয়ে তারা কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে পানি ফুটিয়ে খাওয়ার কথা বলেছে, যা মানুষের সঙ্গে রসিকতার শামিল।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ডায়রিয়া সঙ্কট মোকাবিলা ও সুপেয় পানি নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক এক নাগরিক সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, ওয়াসার উদাসীনতা আমাদের ব্যথিত করে। ওয়াসা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না, যে কারণে তারা পানি ফুটিয়ে খাবেন আর আমাদের ল্যাবে কিছু পাওয়া যায়নি বলে দায় সারছেন। কিন্তু অন্যান্য জায়গায় নানা জীবাণুর অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। সরকারের নীতিনির্ধারণী জায়গাগুলো থেকে নাগরিক অধিকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হচ্ছে। মানুষকে মর্যাদা দিচ্ছে না।
পবার সাধারণ সম্পাদক ও পরিবেশবিদ প্রকৌশলী মো. আব্দুস সোবহান বলেন, নিরাপদ পানির অধিকার সাংবিধানিক; কিন্তু রাষ্ট্র সে দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে না। যে কারণে ডায়রিয়াসহ নানা সমস্যা হচ্ছে। আমাদের ওয়াসার এমডি হাসতে হাসতে বলেন পানি ফুটিয়ে খেতে, এটা খুবই দুঃখজনক ও নিন্দনীয় বক্তব্য।
বারসিক ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এই নাগরিক সংলাপের আয়োজন করে। পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে নাগরিক সংলাপে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী বাস্তুহারা লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়ন রাশেদ হাওলাদার, নগর গবেষক মো. জাহাঙ্গীর আলম, বারসিকের সমন্বয়ক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জ্বল, বস্তিবাসী অধিকার সুরক্ষা কমিটির সভাপ্রধান হোসনে আরা বেগম রাফেজা প্রমুখ।
নাগরিক সংলাপে বেশকিছু সুপারিশ করা হয়।
সুপারিশগুলো : নগরের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিতে হবে; এ বছর ডায়রিয়া কলেরা রোগের প্রাদুর্ভাব কেন বেশি তা পরীক্ষা করে জনগণকে দ্রুত সচেতন করতে হবে; যে এলাকা থেকে ডায়রিয়া রোগী বেশি আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছে সেখানকার পানি পরীক্ষা করে কারণ রেব করে তা স্থানীয় মানুষকে জানাতে হবে। ওয়াসা এবং স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের দ্রুত সেখানে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করতে হবে; ডায়রিয়া ও কলেরা আক্রান্ত রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় তাদের ক্ষেত্রবিশেষে আর্থিক সহযোগিতার ব্যবস্থা করতে হবে; নগরে ওয়াসার পানি সরবরাহকৃত লাইন থেকে যখন কোনো আবাসিক ভবনে প্রবেশ করবে, সেখানকার পানির মান নিয়ন্ত্রণের জন্য ওয়াসা এবং স্থানীয় সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে ও খোলা রাস্তায় এবং ছোট দোকানে খাবার বিক্রেতাদের পানি বিশুদ্ধ রাখার জন্য নজরদারি বাড়াতে হবে।