পাবনা প্রতিনিধিঃ
পাবনা চাটমোহর উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর দেয়ার নামে টাকা আত্নসাতের অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
হতদরিদ্র, গরিব ও অসহায়দের ঘর দেয়ার নামে টাকা নেয়ার দুই বছরেও ঘর পাননি তারা। দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারম্যান এর কাছে ঘরের ব্যাপারে কথা বলতে গেলে চেয়ারম্যান গালি-গালাজ ও ভয়ভীতি দেখায়। চেয়ারম্যানের এই ভয়ে ভুক্তভোগীরা টাকা ফেরতের দাবিতে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগও করতে পারছেন না।
অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের এইচ এম কামরুজ্জামান খোকন। তিনি উপজেলার ২ নং নিমাইচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি।
জানা গেছে, গত বছর প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে বিনা খরচে ঘর নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এ ঘরগুলোর চলতি বছর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ওই প্রকল্পে ঘর দেয়ার নাম করে ইউনিয়নের বহরমপুর গ্রাম থেকে একাধিক হতদরিদ্র মানুষের কাছ থেকে ৫-১০ হাজার করে টাকা আদায় করা হয়। চেয়ারম্যান নিজেই এ অর্থ আদায় করেন বলে জানাযায়।
ইউনিয়নের বহরমপুর গ্রামের ৩ জন ভুক্তভোগী তাদের টাকা ফেরত চাইলে চেয়ারম্যান গালি-গালাজ ও ভয়ভীতি দেখায়।
ভুক্তভোগীরা বলেন, আমার মত আরো অনেকেই তার কাছে টাকা দিয়েছে কিন্তু ঘর পায়নি।
বহরমপুর গ্রামের মৃত সুবল দন্দ্রদাসের ছেলে পরেশ দন্দ্র দাস (৬০) বলেন, ২০১৯ সালের প্রথম দিকে কামরুজ্জামান খোকন এর নিকট সরকারি ঘর চাইলে তিনি বলেন ২০ হাজার করে টাকা লাগবে। পরে সমিতি থেকে কিস্তির মাধ্যমে ৫ হজার টাকা আমি চেয়ারম্যানকে বুঝিয়ে দেই।
নিমাইচড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ডের সুদেপ হলদারের স্ত্রী জুসনা রাণী (৪৮) বলেন, ২ বছর আগে চেয়ারম্যান ঘর দেয়ার কথা বলে ২০ হাজার টাকা চাইলে আমি সুদের উপর ৮ হাজার টাকা এনে চেয়ারম্যানকে দেই।
একই গ্রামের আফসার শেখের স্ত্রী মোনেকা খাতুন (৫০) বলেন, ঘর দেবেন বলে আমার কাছ থেকেউ ১০ হাজার টাকা নিয়েছে এখন টাকা ঘর কনোটাই দিচ্ছেনা আজ নয় কাল বলে দুই বছর পার করেছে। এখন চেয়ারম্যানের কাছে ঘরের ব্যাপারে কথা বলতে গেলে চেয়ারম্যান গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখায়। এঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট দাবী জানান ভুক্তভোগীরা।
প্রতিবেদকের সাথে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি এইচ এম মো:কামরুজ্জামান খোকনের কথা হলে অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, এটা আমার বিরুদ্ধে একটা চক্রান্ত, আমি কারো কাছ থেকে ঘর দেয়ার কথা বলে কোন টাকা পয়সা নেইনি যারা এগুলো বলে বেড়াচ্ছে তাদেরকে আমার সামনে এসে বলতে বলেন।
চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: সৈকত ইসলাম বলেন, এবিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।