২০২০ সালে করোনাভাইরাস শুরুর পর থমকে যায় বিশ্ব ক্রিকেট। সেই ভয়বহতা পেছনে ফেলে আবার শুরু হয়েছে ব্যাট-বলের লড়াই। তবে বেড়ে গেছে ক্রিকেটীয় সূচি। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে জৈব সুরক্ষা বলয়। প্রতিটি সিরিজ বা টুর্নামেন্টে রীতিমত বন্দি দশায় কাটাতে হয় খেলোয়াড়দের। বছরের বেশিরভাগ সময়ে সুরক্ষা বলয়ে আটকে থেকে হাঁপিয়ে উঠছেন ক্রিকেটাররা। চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে সুরক্ষা বলয়ের করাকড়ি না থাকায় স্বস্তি পাচ্ছেন পাকিস্তানের অলরাউন্ডার মোহাম্মদ হাফিজ।
ডিপিএলের দল মোহামেডানের হয়ে খেলতে ঢাকায় এসেছেন হাফিজ। আজ (বুধবার) সাদা-কালোদের জার্সিতে মাঠে নামার কথা আছে তার। এজন্য গত মঙ্গলবার দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন এই পাকিস্তানি। ঢাকায় পা রেখেই কণ্ঠে স্বস্তির ঢেকুর তুলে জানিয়েছেন, প্রিমিয়ার লিগে জৈব সুরক্ষা বলয় না থাকায় খেলতে রাজি হয়েছেন তিনি।
হাফিজ বলেন, ‘বায়োবাবল না থাকায় আমি সাইন করতে রাজি হয়েছি (হাসি)। এটা বড় কারণ ছিল না তবে সূক্ষ্ণ কারণও ছিল। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, ওখানে কি বায়োবাবল থাকবে? সাব্বির (সিনিয়র সহ-সভাপতি) জানাল, না। আমি বললাম, ঠিক আছে আমি আসবো। আমি সত্যিই এখানে এসে উপভোগ করতে চেয়েছিলাম। এখানকার সংস্কৃতি, বিশেষ করে মুসলিম সংস্কৃতি যা এখানকার মানুষ নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে। এখানে কোনো বাধা ছাড়া ঘুরতে চেয়েছিলাম। সঙ্গে নিজের ক্রিকেট উপভোগ করতে চেয়েছিলাম।’
সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে থেকে ক্রিকেট খেলা কতটা কঠিন সেটিও তুলে ধরলেন হাফিজ। এই নিয়মের বিপক্ষে না গেলেও দিন শেষে খেলোয়ড়দের মানসিকভাবে সতেজ রাখতে সুরক্ষা বলয় প্রথা তুলে দেওয়ার পক্ষে তিনি।
হাফিজ বলনে, ‘বায়োবাবল বরাবরই কঠিন। এটা আপনার ওপর চড়ে বসে। আমরা প্রত্যেকে মানুষ। আমি বায়োবাবল নিয়ে ২০২০ সালে এই পয়েন্টটা তুলেছিলাম যখন আমরা আড়াই মাস ইংল্যান্ড সফরে ছিলাম পরিবার ছাড়া। আমরা জানতাম, যখন এটা শুরু হলো তখন কতটা কঠিন ছিল। মানসিকভাবে এটি আপনাকে যেকোনো সময় ভেঙে ফেলতে পারে। খুব নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে থেকে আপনি নিজেকে মানুষ হিসেবে ভাবতে পারবেন না। প্রত্যেকের স্বাধীনতার দরকার আছে।’
সঙ্গে যোগকরেন হাফিজ, ‘আমি মোটেও বায়ো বাবলের বিপক্ষে নেই। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কোভিড আমাদের শিখিয়েছে কিভাবে জীবন যাপন করতে হবে। আমাদের কি কি অনুসরণ করতে হবে সেটও জানি। আমরা প্রায় সকালেই ভ্যাকসিন নিয়েছি। পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে আমার আনন্দের দরকার, মজার দরকার। আপনার পারফরম্যান্স খারাপ হলে আপনি কখনোই আবদ্ধ থাকতে চাইবেন না। আপনি বাইরে গিয়ে পরিবার, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে মিশে নিজেকে সতেজ করতে চাইবেন।’