বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে পুলিশের গুলিতে সাংবাদিক মেহেদী হাসান নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন রিজিয়া নামে এক নারী
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে পুলিশের গুলিতে সাংবাদিক মেহেদী হাসান নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন রিজিয়া নামে এক নারী বিজ্ঞ চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ঢাকায় ঐ নারী মামলায় ৩৪জনকে এজহার নামীয় আসামী করেন এবং অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্য ৮০/১০০জন আওয়ামী সদস্য ৭০/৮০জনের নাম উল্লেখ করে ঐ মামলাটি দায়ের করেছেন।
যাহার ধারাঃ—৩০২/৩৪/১২০ (খ)১০৯/১৪৯ দন্ডবিধি—১৮৬০। বিচারক অভিযোগটি এফআইআর হিসাবে নেওয়ার জন্য ডি.এম.পির ওয়ারী ডিভিশনের যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আদেশ দেন।
মামলার আসামীরা হলেন— ১। শেখ হাসিনা (৭৬), ২। ওবায়দুল কাদের (৭২)সাধারন সম্পাদক বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। ৩। আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল (৭৪), সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ,৪। আনিসুল হক (৬৮) সাবেক আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী , ৫। আনোয়ার হোসেন মঞ্জু (৮০), সভাপতি জাতীয় পার্টি (মঞ্জু)
৬। রাশেদ খান মেনন, সভাপতি—বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টি, ৭। হাসানুল হক ইনু, সভাপতি—জাতীয় সমাজতান্ত্রীক দল (জাসদ) ৮। নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, সাবেক শিল্পমন্ত্রী, ৯। চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবে মহাপরিদর্শক, বাংলাদেশ পুলিশ, ১০। মোঃ হারুনুর রশিদ, সাবেক মহা—পরিচালক, র্যাপিট অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান র্যাব ১১। আলমগীর খান শামীম, সহ—সভাপতি আদাবর থানা যুবলীগ, ১২। মোঃ সাকিল, যুবলীগ কর্মী
১৩। মোঃ আরাফাত, শ্রমিকলীগ কর্মী, ১৪। মোঃ জাবেদ হোসেন মিঠু, নৌকা মাঝি শ্রমিকলীগ ১৫। মোঃ মিজানুর রহমান, আওয়ামীলীগ সদস্য, ১৬। তাসভীর হোসেন শুক্কুর, আওয়ামীলীগ সদস্য ১৭। মোঃ ইউসুফ রিপন, আওয়ামীলীগ সদস্য, ১৮। জাবেল হোসেন পাপন, ৩৭নং ওয়ার্ড, সভাপতি যুবলীগ
১৯। জুলফিকার আলী চৌধুরী, আওয়ামীলীগ সদস্য, ২০। মোঃ মনির, আওয়ামীলীগ সদস্য ২১। মোঃ কামাল, আওয়ামীলীগ সদস্য, ২২। মোঃ লালন, আওয়ামীলীগ সদস্য, ২৩। শ্যামল হাসান, আওয়ামীলীগ সদস্য, ২৪। মোঃ সাজ্জাদ, যুবলীগ সদস্য, ২৫। মোঃ হুমায়ুন কবীর, আওয়ামীলীগ সদস্য ২৬। খলিল, আওয়ামীলীগ সদস্য, ২৭। গিয়াসউদ্দীন, ৫০নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি, ২৮। নিজাম উদ্দীন শেখ— আওয়ামীলীগ সদস্য , ২৯। শাহীন হাওলাদার, আওয়ামীলীগ কর্মী, ৩০। মাযহারুল ইসলাম দিপুর, কাউন্সিলর ৪৪নং ওয়ার্ড, গাজিপুর সিটি, ৩১। মোঃ আওলাদ হোসেন, আওয়ামীলীগ সদস্য ৩২। মোঃ নুরুল কবীর, আওয়ামীলীগ সদস্য, ৩৩। জালাল উদ্দীন, সহ—সভাপতি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামীলীগ, ৩৪। আইয়ুব আলী, সহ—সভাপতি, আদাবর থানা আওয়ামীলীগ, অজ্ঞাতনামা আওয়ামীলীগ—এর নেতা কমীর্ সমর্থক ৭০/৮০জন এবং ৮০/১০০জন অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্য
বাদী অভিযোগে উল্লেখ করেছেন—
১। উপরোক্ত মামলার আসামীগণ আইন অমান্যকারী, ্আইনের প্রতি অশ্রদ্ধাশীল ক্ষমতালোভী, ক্ষমতার মোহে অন্ধ ক্ষমতার অপব্যবহারকারী, মানবতাবিরোধী একনায়কতন্ত্রী ফ্যাসিবাদী, গণতন্ত্র বিরোধী, মানুষের মানবিক মর্যাদা ও মানবাধিকার হরণকারী সংঘবন্ধ সন্ত্রাসী ও মাফিয়াতান্ত্রীক মনোভাপন্ন, স্বৈরাচারী, লুটেরা, রক্ত পিপাসু, সাইকোপ্যাথ রাষ্ট্র ও সমাজবিরোধী, খুনী ও গণহত্যাকারী ব্যক্তি হইতেছেন ঘটে।
২) বিগত ১লা জুন ২০২৪ সন হইতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ ছাত্র জনতা কতৃর্ক সরকারী চাকুরীতে কোটা সংরক্ষণ পদ্ধতি সংস্কারের দাবীতে সমগ্র বাংলাদেশ ব্যাপী গণ আন্দোলন শুরু হয়। উক্ত আন্দোলনের কর্মসূচি হিসাবে দেশ ব্যাপী ছাত্রজনতা কতৃর্ক অবস্থান কর্মসূচী, অবরোধ কর্মসূচী সহ বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালিত হয়। উক্ত কর্মসূচী থেকে সরকারের প্রতি কোটা সংরক্ষণ পদ্ধতি সংস্কারের জোর দাবি জানানো হয়।
৩) ছাত্র জনতা উক্ত যৌক্তিক আন্দোলনের বিষয়ে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সহজ সমাধানের পথে না যাইয়া ফ্যাসিবাদী কায়দায় আন্দোলনকারী ছাত্র জনতাদের সমূলে নিমূর্ল করা হীন উদ্দেশ্যে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভানেত্রী অত্র মামলারর ১নং আসামী শেখ হাসিনা সংবাদিক সম্মেলনে আন্দোলন প্রতিহত করার জন্য উষ্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করেন। বিগত ১৪/০৭/২০২৪ইং তারিখে বিকেলে চীন সফর নিয়ে গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে কিছু চিহ্নিত সরকারের দালাল শ্রেণির সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে আন্দোলনকারী ছাত্র জনতাদের অবমাননাকর ভাবে রাজাকার বলে রাজনৈতিকভাবে চিহ্নিত করেন এবং বাংলাদেশের
আইন শৃঙ্খলাবাহিনী এবং বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ও ছাত্রলীগ এর নেতা কর্মীদের আন্দোলনকারী ছাত্র জনতাদের সমুলে নিমূল করা নির্দেশনা প্রদান করেন, যা বিভিন্ন দেশী ও বিদেশী প্রিন্ট ও ইলেট্রনিক মিডিয়াসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। অত্র মামলার ২নং আসামী সাবেক সড়ক ও পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং তৎকালীন সরকারের কতিপয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও এম.পি একই উদ্দেশ্যে উষ্কানিমূলক বক্তব্য ও নির্দেশনা প্রদান করেন অত্র মামলারর ২নং আসামী ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলনকারী ছাত্র জনতাদের নিমূর্ল করার জন্য ছাত্রলীগই যথেষ্ঠ।
৪) অত্র মামলার ১নং আসামী শেখ হাসিনা এবং ২নং আসামী ওবায়দুল কাদের ও অন্যান্য আসামীদের এহেন নির্দেশনায় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ এর নেতা কর্মীরাএবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দেশব্যাপী বিভিন্ন স্কুল—কলেজ—মাদ্রাসা ও বিশ^বিদ্যালয়ের আন্দোলনরত সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের উপর আগ্নেয় ও দেশীয় অস্ত্র—সস্ত্র নিয়ে হামলা করে এবং নির্বিচারে গুলি করে হত্যা এবং কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে। যাহাতে বিগত ১৬/০৭/২০২৪ইং তারিখ রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ, এবং ১৭/০৮/২০২৪ইং তারিখে দেশব্যাপী ৬ জন ছাত্র জনতা নিহত হন। উক্ত হত্যার প্রতিবাদে এবং কোটা সংস্কারে দাবী আদায়ের লক্ষ্যে ১৭/০৭/২০২৪ইং তারিখ রাতে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ ছাত্রজনতা কতৃর্ক ১৮/০৭/২০২৪ইং তারিখ রাতে বৈষম্য বিরোধী আান্দোলন সাধারণ ছাত্র জনতা কতৃর্ক ১৮/০৭/২০২৪ইং তারিখে দেশ ব্যাপী কমপ্লিট শাটডাউন এর ডাক দেয়া হয়।
৫) অত্র মামলায় বাদী/অভিযোগকারী এর ভাগিনা অত্র মামলার ভিকটিম মোঃ মেহেদী হাসান,পিতাঃ মোঃ মোশারফ হোসেন, মাতাঃ মোছাঃ মাহমুদা বেগম স্থায়ী ঠিকানাঃ গ্রামঃ হোসনাবাদ, থানা—বাউফল, জেলাঃ পটুয়াখালী, বর্তমান সাং—বোরহানীবাগ, থানা—দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, জেলা—ঢাকা, বয়স—৩১ বৎসর একজন প্রফেশনাল সাংবাদিক। পেশাগত জীবনে তিনি বেসরকারী টেলিভিশন নিউট টোয়েন্টি ফের এশিয়ান স্যাটেলাইট টেলিভিশন, দৈনিক কালের কন্ঠ, দৈনিক বাংলাদেশের আলো, যোগাযোগ প্রতিদিন, দৈনিক আমাদের কন্ঠ, আলোর জগৎ, ক্রাইম নিউজ মিডিয়া
২৪.কম সংবাদ প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্রাইম বিট ও চাকুরী করেন এবং এর পাশাপাশি মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রিসোর্স এন্ড হেলথ ফাউন্ডেমন+এই.আর.এইচ.এফ এ স্বেচ্ছাসেবী হিসাবে নিয়োজিত ছিলেন।
ভিকটিম মোঃ মেহেদী হাসান সর্বশেষ ঢাকা টাইমস এর হয়ে কর্মরত থাকাবস্থায় বিগত ১৮/০৭/২০২৪ইং তারিখে বৈষ্যম্য বিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ ছাত্র জনতা কতৃর্ক আহত দেশব্যাপী কমপ্লিট শাটডাউন এর সংবাদ সংগ্রহের জন্য যাত্রাবাড়ী এলাকায় যায়। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ ছাত্র জনতা কতৃর্ক আহত দেশব্যাপী কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে সাড়া দিযে সমগ্র দেশ ব্যাপী সাধারণ ছাত্র জনতা রাস্তায় নেমে আস। এর ই অংশ হিসেবে যাত্রাবাড়ি থানা এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকাী সাধারণ ছাত্রজনতা শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিলে আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার লক্ষ্যে উক্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অংশ গ্রহণকারী ছাত্রজনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ১—৯ নং আসামী গণের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় ও পরিকল্পনায় ১০—৩৭ নং আসামীগণসহ অজ্ঞাতনামা ৭০—৮০ জন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর নেতাকর্মী সহ ৩০—৪০ জন পুলিশ সদস্য ও অন্যান্য আসামীগণ বেআইনী সমাবেশভুক্ত হইয়া সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্র জনতার উপর নির্বিচারে গুলি বর্ষন করে। উক্ত নির্বিচার গুলিতে আনুমানিক ১৮.৩০ ঘটিকার সময় ঢাকা মহাসড়কের হানিফ ফ্ল্যাইওভারের উপর কাজলা এলাকার টোল প্লাজার পশ্চিম পাশে^র্ সংবাদ সংগ্রহের জন্য অবস্থানরত অত্র মামলার ভিকটিম মোঃ মেহেদী হাসান গুলিবিদ্ধ হইয়া রাস্তায় পরিয়া যায়। গোলাগুলি কিছুটা থামিয়অ গেলে অত্র মামলার সাক্ষীগণের সহায়তায় অত্র মামলার ভিকটিম মোঃ মেহেদী হাসান এর সহদোর ভাই জাহিদ হাসান আশিক আনুমানিক ১৯.০০ ঘটিকার সময় ভিকটিমকে ঘটনাস্থল হইতে উদ্ধার করিযা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে লইয়া গেলে আনুমানিক ১৯.৪৫ ঘটিকার সময় কর্তব্যরহত চিকিৎসক ভিকটিম মোঃ মেহেদী হাসানকে মৃত ঘোষনা করেন।
৬) অত্র মামলার আসামীগণ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ ছাত্রজনতাকে হত্যার মাধ্যমে আন্দোলন দমনের উদ্দেশ্যে মৃত্যু ঘটাইবার নিমিত্তে নির্বিচার গুলি করিয়া অত্র মামলার ভিকটিম মোঃ মেহেদী হাসানকে হত্যা করিয়া আসামীগণ ১৮৬০ সনের দন্ডবিধি এর ৩০২/৩৪৮/১০৯/১৪৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করিয়াছে বিধায় অত্র থানা বিজ্ঞ আদালতের এখতিয়ারাধীন হওয়ায় বিজ্ঞ আদালতে মামলা দাযেরের কারণ উদ্ভব হইয়া বর্তমানে বিদ্যামান রহিয়াছে। অত্র মামলার দরখাস্তকারী বাদী প্রতিকার পাইবার হকদার বিধায় বিজ্ঞ আদালতে অত্র মামলা দায়ের করেছেন। দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রতিকুল পরিস্থিতির কারণে অত্র মামলা দায়ের করিতে বাদীর বিলম্বের কারল দেখানো হয়েছে।
বাদীনি রিজিয়া ন্যায় বিচারের স্বার্থে ১৮৬০ সনের দন্ডবিধির ধারা ৩০২/৩৪/১২০—খ ১০৯/১৪৯ মোতাবেক আসামীগণের অপরাধ আমলে নিতে আসামীগনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানী জারী করতঃ
আসামীদেরকে জেল হাজতে আটক রাখিয়া স্বাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে ন্যায় বিচার করিতে বিজ্ঞ আদালতে প্রার্থনা করেন।
