নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ জুন) বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তন্ময় মন্ডল বাদী হয়ে ৩৪৯ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মশিউর রহমান।
জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে উপ-পরিদর্শক তন্ময় মন্ডল বাদী হয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা করেন। এই মামলায় ৪৯ জনের নাম উল্লেখ এবং ৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মশিউর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিভিন্ন সোর্স থেকে সংগ্রহ করা ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে সংঘর্ষে জড়িতদের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ৪৯ জনের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। তবে এই মামলায় আরও ২০০-৩০০ বিহারী নারী-পুরুষকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মামলায় অজ্ঞাত আসামিদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে সংঘর্ষে জড়িত অনেককেই শনাক্ত করা যায়নি, তাই অজ্ঞাত করে মামলা করা হয়েছে। তবে কোনো সাধারণ মানুষকে জড়িয়ে যেন হয়রানি না করা হয় এই বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শুধু সংঘর্ষে জড়ানোর তথ্য বা প্রমাণ পেলেই মামলার এজাহারে আসামি হিসেবে সংযুক্ত করা হবে। তবে এই ঘটনায় প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো গ্রেপ্তার নেই বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত, পুলিশের ওপর মসজিদের মুসল্লিদের হামলার ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক মির্জা শহীদুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন। শনিবার (১১ জুন) রাতে ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১২০/১২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা করা হয়।
মামলার আসামিদের আইনের আওতায় আনতে রোববার গভীর রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত অভিযান চালায় পুলিশ। পরের দিন গ্রেপ্তার অভিযান ঠেকাতে স্থানীয়রা ঐক্যবদ্ধ হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়তে থাকে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিপেটা, ১০০ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ৫০টি টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে। বেলা সাড়ে ১১টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রেণে আনে পুলিশ।
এর আগে গত শুক্রবার (১০ জুন) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক সৈয়দ আজিজুল হক মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন। বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি বলেন, নবীকে নিয়ে কটূক্তি করা হয়েছে ভারতে। ভারতের বিষয় ভারতে থাকুক। এ নিয়ে আমরা নিজেদের দেশে বিশৃঙ্খলা না করি। এ কথা শুনে মুসল্লিরা ক্ষুব্ধ হলে প্রথমে তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়।
এক পর্যায়ে তারা জুতা নিক্ষেপ করে। পরে তার ওপর হামলা চালিয়ে গণধোলাই দেন মুসল্লিরা। এ সময় তাকে রক্ষা করতে গিয়ে ওই মসজিদের সাধারণ সম্পাদক ও গণমাধ্যমকর্মী বিল্লাল হোসেন রবিন ও মসজিদ কমিটির সভাপতি হাকীম মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীনও আহত হয়। পরে তারা তাকে উদ্ধার করে মসজিদ কমিটির সভাপতির বাসায় নিয়ে গেলে সেখানেও হামলা চালায় উত্তেজিত মুসল্লিরা।