রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ০৩:১৯ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
"ফটো সাংবাদিক আবশ্যক" দেশের প্রতিটি থানা পর্যায়ে "ক্রাইম নিউজ মিডিয়া" সংবাদ সংস্থায় ১জন রিপোর্টার ও ১জন ফটো সাংবাদিক আবশ্যক। আগ্রহী প্রার্থীরা  যোগাযোগ করুন। ইমেইলঃ cnm24bd@gmail.com ০১৯১১৪০০০৯৫
সংবাদ শিরোনাম ::
পুলিশের বাসে বিনামূল্যে ঢাকায় ফিরলেন শতাধিক যাত্রী থানার কাছের দোকান থেকে ২২ লাখ টাকার মোবাইল চুরি নির্বাচন নিয়ে তারেক রহমানের প্রস্তাবে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা ব্যবসায়ীকে হত্যা: আসামিদের ধরার দাবিতে সড়ক অবরোধ ময়মনসিংহে বাস উল্টে হেলপার নিহত, আহত ১৯ মায়ের মৃত্যুতে প্যারোলে মুক্ত ফারজানা রুপা ও শাকিল আহমেদ চোরাই মোটরসাইকেলসহ মেকানিক গ্রেপ্তার ঈদের জামাতে আ’লীগ নেতাকে রাজনৈতিক বক্তব্য প্রদানে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের গোলাগুলি/ ভাংচুর-লুটপাট সহ আহত একাধিক এপ্রিল মাসে নির্বাচন হলে দ্বিগুণ বাড়বে খরচ : মির্জা ফখরুল পুলিশের কেউ দুর্নীতিতে জড়ালে ছাড় দেওয়া হবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

রক্ষক যখন ভক্ষক তত্ত্বাবধায়ক হারুন লুটে খাচ্ছে এতিমখানা

  • আপডেট সময় বুধবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১২.৫২ পিএম
  • ২০৩ বার পড়া হয়েছে

রক্ষক যখন ভক্ষক তত্ত্বাবধায়ক হারুন লুটে খাচ্ছে এতিমখানা

আরমান বাদলঃ

অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় ডুবছে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানা। এতিমদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করে তত্ত্বাবধায়ক ও পরিচালনা কমিটির একটি অংশ মিলে গঠিত চক্র লুট করছে প্রতিষ্ঠানের অর্থ- এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। চক্রের দৌরাত্ম্য থামাতে সেখানে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হলেও তিনি টিকতে পারেননি বেশি দিওয়া দিন।
প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাৎ, অবৈধ নিয়োগ, এতিহ্যবাহী গাছ বিক্রি এবং গঠনতন্ত্রবিরোধী কাজ করার অভিযোগের তদন্ত করে সমাজসেবা অধিদপ্তর তাদের প্রতিবেদনে এই এতিমখানায় প্রশাসক নিয়োগের সপারিশ করেছিল। প্রতিবেদনটিকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে তত্ত্বাবধায়ক হরুন অর রশিদ উষ্মা প্রকাশ করেন- একজন সরকারি কর্মকর্তা তার চেয়ার ব্যবহার করে একটা কিছু লিখে দিলে সেটা আইন হয়ে গেল না।
নানা অপরাধ ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থেকেও এতিমখানায় তত্ত্বাবধায়কের পদে বহাল তবিয়তে রয়েছেন হারুন। একই সঙ্গে রয়ে গেছে আওয়ামী সিন্ডিকেট। তারা নানা কৌশলে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখছে এতিমখানাটি।
জানা যায়, স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানায় লালিত-পালিত হন তত্ত্বাবধায়ক হারুন। এতিমখানায় বড় হওয়ায় এখানকার সবই ছিল তার নখদর্পণে। ছাত্র থাকাকালেই বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এবং কমিটিকে ম্যানেজ করে ২০২০ সালে এতিমখানায় অস্থায়ী পদে শারীরিক শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান হারুন অর রশিদ। চাকরি পেয়েই গড়ে তোলেন সিন্ডিকেট। এতিমখানার স্বার্থবিরোধী কাজ করার অপরাধে ওই বছরই হারুনসহ পাঁচজনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় মামলা করেন এতিমখানার তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন। মামলা নম্বর ৩৫ (১১) ২০২০। মামলাটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন।
চাকরিচ্যুত হলেও এতিমখানা ছাড়েননি হারুন। ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকা জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর ১৪ সদস্যের কমিটি গঠন করে দেয়। অর্থের বিনিময়ে এই কমিটির একটি অংশকে নিজের পক্ষে নেন তিনি। কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ, সহ-সভাপতি সুমি আলম, কোষাধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম, কমিটির সদস্য এবং গোপালগঞ্জ যুব মহিলা লীগের সভাপতি পর্শিয়া সুলতানা, ওলামা লীগ নেতা সাগর আহমেদ শাহিন, সদস্য মোহাম্মদ আলী সোহেল এবং উপদেষ্টা কমিটির সদস্য শাখাওয়াত আলী জুয়েলসহ কয়েকজনকে নিয়ে এতিমখানায় আওয়ামী সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন হারুন।
কমিটির সভাপতি আব্দুস শুকুর ইমন, সহ-সভাপতি আবু নাসের ইকবালসহ কয়েকজনকে এতিমখানায় প্রবেশ একরকম নিষিদ্ধ করে হারুন সিন্ডিকেট। সব কাজ থেকে তাদের বিরত রাখে তারা। প্রতিষ্ঠানের সব সিদ্ধান্ত নিতেন এই সিন্ডিকেটের সদস্যরা। আর হারুন তা বাস্তবায়ন করতেন।
আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় অর্থের বিনিময়ে হারুনসহ পাঁচজনকে চাকরি ফিরিয়ে দেয় আওয়ামী সিন্ডিকেট। চাকরি ফেরত পেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন হারুন। একে একে সব প্রতিপক্ষকে প্রতিষ্ঠান থেকে সরিয়ে দেন। সিন্ডিকেট ম্যানেজ করে তত্ত্বাবধায়ক পদও দখলে নেন তিনি। এরপর হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা নূরসাত আলমকে চাকরিচ্যুত করেন। অবৈধ পন্থায় বিভিন্ন পদে ১৬ জনকে নিয়োগ দেন। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানে অনাথ শিশুর চেয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা বেশি। এতিমখানার বার্ষিক আয়ের ২৫ ভাগের বেশি অর্থ ব্যয় বেতন- ভাতার জন্য।
হারুনের যোগসাজশে এই কমিটি বিভিন্ন খাতে লাখ লাখ টাকা এতিমখানার ফান্ড থেকে আত্মসাৎ করেন বলে তথ্য এসেছে ঢাকাটাইমসের কাছে।
তারা বিভিন্ন জনের আপত্তি উপেক্ষা করে প্রতিষ্ঠানের ঐতিহ্যবাহী ২৬টি গাছ বিক্রি করে দেয়, কিন্তু এক টাকাও এতিমখানার ফান্ডে জমা দেয়নি। এতিমখানা সংস্কারের কথা বলে বিভিন্ন সময় অতিরিক্ত অর্থ উত্তোলন করে তা আত্মসাৎ করা হয়। হারুনসহ পাঁচজনকে চাকরিতে পুনর্বহালের পর তাদের বকেয়া বেতনের কথা বলে এতিমখানার ফান্ড থেকে ২৫ লাখ টাকা তুলে নেয় সিন্ডিকেট। এ ছাড়া এতিমখানার একটি দেয়াল নির্মাণের কথা বলে ২৫ লাখ টাকা তুলে আত্মসাৎ করে। তত্ত্বাবধায়কের বাসা মেরামতের জন্য নেয় ৭ লাখ টাকা। হাইকোর্টের আদেশে পাওয়া কনকর্ডের নির্মাণাধীন ভবনের মালামালও লুট করে এই চক্রের সদস্যরা।
জানা গেছে, এতিমখানার অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ২৬ মে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় লিখিত অভিযোগ দেন তৎকালীন সভাপতি আব্দুস শুকুর ইমন। অভিযোগের ভিত্তিতে দীর্ঘদিন তদন্ত ব্যার গত ১৭ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন টাইলস দেয় সমাজসেবা অধিদপ্তর। প্রতিবে নে এতিমখাব সম্পদ বক্ষা ও নিবাসীদের সর্বোচ্চ সে নেওয়ার সাধারি নিয়োগেরও সুপারিশ করা হয় রি বাপির উদ্যোগ প্রশাসক তদন্ত কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রতিষ্ঠান) সমীর মল্লিককে গত ৮ অক্টোবর এতিমখানায় প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে তিনি সেখানে বেশিদিন টিকতে পারেননি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2015-2025
Theme Developed BY ThemesBazar.Com