আলোচিত গাইবান্ধার জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলী হত্যা মামলার আসামি খলিলুর রহমান বাবুর ছেলে তুরাস তাকমির সজলের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের অডিও ফাঁসের ঘটনায় সুন্দরগঞ্জ থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুজ্জামানকে বরিশালে বদলি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ মে) বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। এর আগে (২৫ মে) বুধবার তাকে বরিশাল রেঞ্জে বদলি করা হয়।
তিনি বলেন, আর্থিক লেনদেনের অডিও ফাঁসের ঘটনায় তৌহিদুজ্জামানকে পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড করা হয়েছিল। চলতি সপ্তাহে তাকে বরিশাল রেঞ্জে বদলি করা হয়েছে।
অডিও ফাঁসের ঘটনার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, তদন্ত রিপোর্ট পুলিশ হেডকোয়ার্টারে পাঠানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।
উল্লেখ্য, ব্যবসায়ী হাসান আলী হত্যা মামলার আসামি খলিলুর রহমান বাবুর ছেলে তুরাস তাকমির সজলের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের অডিও ফাঁসের ঘটনায় সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুজ্জামানকে গত ১৬ মার্চ পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড করা হয়।
যদিও অডিও ফাঁসের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ওসি তৌহিদুজ্জামান ও আসামি খলিলুর রহমান বাবুর ছেলে তুরাস তাকমির সজল। ওসি তৌহিদুজ্জামান জানান, আসামির স্বজনের সঙ্গে অর্থ লেনদেনের অডিও ফাঁসের ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন। তিনি অডিওর বিষয়ে কিছুই জানেন না। তবে হত্যা মামলার চার্জশিট থেকে আসামির নাম বাদের তদবির না শোনায় কেউ এই অপপ্রচার চালাচ্ছেন বলে দাবি করেন তিনি।
আসামি খলিলুর রহমানের ছেলে সজল জানান, ওই কথোপকথনের অডিও রেকর্ড মিথ্যা। মামলার বিষয়ে ওসির সঙ্গে তার কখনোই মোবাইলে কথা হয়নি। মামলার তদন্ত করতে ওই পুলিশ কর্মকর্তা একদিন তাদের বাড়িতে আসছিলেন। ফাঁস হওয়া অডিও রের্কড এডিট করে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, মামলা থেকে তার বাবাসহ শ্বশুরকে অব্যাহতি দিতে পূর্বপরিচিত দুই ব্যক্তিকে দুই লাখ টাকা দেন। চার মাস আগে ওই টাকা বাচ্চু চাচার ওষুধের দোকান থেকে নিয়ে যান তারা। এই টাকা নিয়েও কথা মতো তারা কোনো কাজই করেননি। বরং পুলিশ তার বাবা ও শ্বশুরের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
এ বিষয়ে ওষুধ ব্যবসায়ী বাচ্চু মিয়া জানান, সজল তার দোকানে দুই লাখ টাকা রেখে যাওয়ার পর রাত ৮টার দিকে ওই টাকা নিয়ে যান তোতা ও তনু নামে দুই ব্যক্তি। তবে কী কারণে এই টাকার লেনদেন তা জানেন না তিনি।
গত বছরের ১০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা মাসুদ রানার চকমামরোজ এলাকার বাড়িতে ব্যবসায়ী হাসান আলীর ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়। হাসান আলীকে অপহরণের পর প্রায় এক মাস তার নিজ বাড়িতে আটক রাখেন মাসুদ রানা। পরে এ ঘটনায় মাসুদকে প্রধান ও রুমেন হক এবং খলিলুর রহমানকে আসামি করে সদর থানায় হত্যা মামলা করেন হাসান আলীর স্ত্রী বিথী বেগম।
মামলার তদন্তকারী দুই কর্মকর্তার পর তৃতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তার দায়িত্ব পান জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি তৌহিদুজ্জামান। পরে গত ১৬ জানুয়ারি তিন আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তিনি। এরপর গত ১৮ জানুয়ারি সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি হিসেবে যোগদান করেন তৌহিদুজ্জামান।