কৃষি বিজ্ঞানীদের খাদ্য সংরক্ষণ, শস্য সংগ্রহ পরবর্তী ক্ষতি হ্রাস, পুষ্টি বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ও জলবায়ু সহিষ্ণু জাতের শস্য উদ্ভাবনের পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এমএম ইমরুল কায়েস জানান, রোববার (৮ মে) কানাডার একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে তার সঙ্গে দেখা করতে এলে তিনি এ পরামর্শ দেন।
সিবিই, ডিরেক্টর স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ এবং চিফ অপারেটিং অফিসার, সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল ইনস্টিটিউট ফর ফুড সিকিউরিটি (জিআইএফএস), স্টিফেন ভিশার চার সদস্যের এ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। প্রতিনিধি দলটির অন্যান্য সদস্য হচ্ছেন— সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট (গবেষণা) ড. বালাজিৎ সিং, কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু রিসার্চ চেয়ার ইন ফুড সিকিউরিটি, জিআইএফএস ড. এন্ড্রু শার্প এবং ঢাকায় নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকলস।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের আগে থেকেই বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে সম্পর্কের সূচনা হয়। এ সময় তিনি ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর, সাধারণ নির্বাচনে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশভাবে বিজয়ী হলে কানাডার তৎকালীন ট্রুডো সরকার কর্তৃক পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন সরকারকে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের যে অনুরোধ জানানো হয়েছিল, সে কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, কানাডা সরকার আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখে। স্বাধীনতার পর যে কয়েকটি দেশ বাংলাদেশকে তাৎক্ষণিকভাবেই স্বীকৃতি দেয়, কানাডা (১৯৭২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি) তাদের অন্যতম।
কানাডা ও বাংলাদেশের কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটগুলোর গবেষকদের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর লক্ষ্যে গত বছর কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল ইনস্টিটিউট ফর ফুড সিকিউরিটি (জিআইএফএস) ঢাকায় এর আঞ্চলিক অফিস খুলেছে। প্রতিনিধি দলটি এ অফিস পরিদর্শন করতে এসেছে।
বৈঠককালে স্টিফেন ভিশার বলেন, তারা জিআইএফএস এর ঢাকাস্থ আঞ্চলিক অফিসকে সব ধরনের কারিগরি সহায়তা দেবেন।
ড. বালাজিত সিং বলেন, পাশাপাশি উচ্চশিক্ষার জন্য কেউ সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে তারা তাকে সর্বাত্মক সহায়তা করবেন। প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশের কাঁঠালের বহুমুখী ব্যবহার ও গাছের প্রজনন নিয়েও কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করে।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন— কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ এগ্রিকালচার রিসার্চ কাউন্সিল (বিএআরসি)’র নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বোখতিয়ার।
সাসকাচুয়ান অঞ্চলটি কানাডার রুটিরঝুড়ি হিসেবে পরিচিত। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়টি অবস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয়টি গবেষণা ও অ্যাকাডেমিক উৎকর্ষ উভয় ক্ষেত্রে সর্বাধিক মর্যাদাপূর্ণ একটি বিশ্ববিদ্যালয়।
বিএআরসি ও বিআইএফএস, সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যে কৃষি গবেষণা ও উন্নয়নে অংশীদারিত্ব গড়ে ওঠে।