শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৫২ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
"ফটো সাংবাদিক আবশ্যক" দেশের প্রতিটি থানা পর্যায়ে "ক্রাইম নিউজ মিডিয়া" সংবাদ সংস্থায় ১জন রিপোর্টার ও ১জন ফটো সাংবাদিক আবশ্যক। আগ্রহী প্রার্থীরা  যোগাযোগ করুন। ইমেইলঃ cnm24bd@gmail.com ০১৯১১৪০০০৯৫

হাসপাতালেই থাকতে চান শতবর্ষী সখিনা,ছেলে-পুত্রবধূর কাছে আপদ!

  • আপডেট সময় বুধবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০২১, ২.১৬ পিএম
  • ৩৫৫ বার পড়া হয়েছে

রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার শতবর্ষী বৃদ্ধা সখিনা বেগম। তেমন কোনো জটিল রোগ-বালাই নাই। এরপরও তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে আছেন। তার অপরাধ তিনি নাকি অনেক খাবার খান, তার প্রচুর ক্ষুধা!

বুধবার (২৭জানুয়ারী) দুপুরে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স মৃদুলা রাণী বিশ্বাস বলেন, হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিলেও তিনি বাড়ি ফিরে যেতে চান না। তিনি নাকি তার ছেলে-পুত্রবধূর কাছে আপদ। তাই সেখানে ফিরে যেতে চান না। হাসপাতালে থাকলে অন্তত তিন বেলা পেট ভরে খেতে পারেন, শান্তিতে ঘুমাতে পারেন। কিন্তু আমরা তো কাউকে এভাবে বেশিদিন রাখতে পারি না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃদ্ধা সখিনা বেগম ২০ জানুয়ারি শারীরিক দুর্বলতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তাকে নিয়ে আসা মেয়ে লাইলি বেগমও একই সমস্যা দেখিয়ে মায়ের সঙ্গে ভর্তি হয়েছেন। বিশেষ কোনো অসুখ না থাকায় হাসপাতাল থেকে তাদের ছাড়পত্র দিলেও তারা বাড়ি যেতে চাচ্ছেন না।

লাইলি বেগম বলেন, আমাদের বাড়িঘর নেই। ভাইদের সংসারেও অভাব। ভাই-ভাবিরা আমার বৃদ্ধা মাকে আপদ মনে করে। ঠিকমতো খেতে-দেয় না, যত্ন করে না। তার অসুস্থতার খবর পেয়ে আমি গিয়ে ছোট ভাইয়ের বাড়ি থেকে মাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। এখানে আমরা তিনবেলা খাবার পাচ্ছি। প্রচণ্ড শীতের মধ্যে নিরাপদ আশ্রয়ে আছি। তাই এখান থেকে আমার মা যেতে চাচ্ছে না। এখন আমাদের জোর করে যেতে বললে রাস্তায় আশ্রয় নেয়া ছাড়া উপায় নাই।

বৃদ্ধা সখিনা বেগম বলেন, ছোট ছেলে রশিদের বউ আমারে মারে। চুল ধইরা টানে। আমি আর ওহানে যামু না। ওরা কেউই আমারে দেখবার পারে না।

অভিযোগ অস্বীকার করে বৃদ্ধার ছোট ছেলে আব্দুর রশিদ বলেন, আমি ফরিদপুরে একটি কারখানায় কাজ করি। বাড়িতে মায়ের জন্য হাইকমোড স্থাপনসহ সব ধরনের ভালো ব্যবস্থা করেছি। আমি কাজের জন্য ঠিকমতো বাড়িতে থাকতে পারি না। আমার স্ত্রীই মায়ের যত্ন করে। হয়তো কখনো কখনো একটু বিরক্ত হলেও হতে পারে; কিন্তু মাকে মারার কথা আমি বিশ্বাস করি না। আমি দুই-একদিনের মধ্যে ছুটিতে এসে মাকে বাড়ি নিয়ে যাবো।

হাসপাতালের আরএমও ডা. নিতাই কুমার বলেন, আমাদের একটা নিয়মের মধ্য দিয়ে চলতে হয়। অসুস্থ না থাকলে আমরা ওই মা-মেয়েকে বেশিদিন হাসপাতালে রাখতে পারি না। আপাতত আমরা তাদের মানবিক দৃষ্টিতে দেখছি। কিন্তু এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2015-2025
Theme Developed BY ThemesBazar.Com