‘সরকার বিদেশিদের কাছে ধরনা দিচ্ছে’ মির্জা ফখরুল ইসলামের এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মির্জা ফখরুল সাহেবরা তো কথায় কথায় বিদেশিদের কাছে দৌড় দেয়, কোনো কিছু হলেই বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের ডেকে কথা বলে। এমনকি ফখরুল সাহেব নিজে চিঠি লিখেছিলেন কংগ্রেসম্যানদের কাছে, বাংলাদেশের সাহায্য বন্ধ করতে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সরকারের ভিত জনগণের মধ্যে। এখানে কাউকে বিদেশিরা ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে না। আমরা জনগণের ক্ষমতায় বলিয়ান, আমরা জনগণের ক্ষমতাতে বিশ্বাস করি।
শনিবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চারটি ইউনিয়ন নিয়ে নবগঠিত ‘দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া’ থানার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে ফিতা কেটে নতুন থানার কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে যাতে সাহায্য বন্ধ করে দেয়, জিএসপি সুবিধা যাতে বাতিল করে এজন্য চিঠি লিখেছিলেন। এজন্য নিজের নামে নিবন্ধ লিখেছেন ওয়াশিংটন টাইমসে। যারা কথায় কথায় বিদেশিদের কাছে দৌড় দেয় তারাই এ সমস্ত উদ্ভট কথা বলতে পারে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নারী মুক্তিযোদ্ধা দাবি করেছেন দলটির মহাসচির মির্জা ফখরুল, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই বলতে চাই, তিনি মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস পাকিস্তানিদের ক্যান্টনমেন্টেই তাদের আতিথেয়তায় ছিলেন। এখন হঠাৎ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব আবিষ্কার করলেন খালেদা জিয়া নাকি নারী মুক্তিযোদ্ধা!
তিনি বলেন, রাজাকাররাও আসলে মুক্তিযোদ্ধা, কারণ তারা পাকিস্তানের পক্ষে যুদ্ধ করেছেন। সেই শঙ্কার মধ্যেই আছি, মির্জা ফখরুল কখন আবার তাদের মুক্তিযোদ্ধা বলে বসেন। তার কাছে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞাটা কি আমি জানি না।
সম্প্রতি সাম্প্রদায়িক উস্কানি বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে বিভিন্ন সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য অপচেষ্টা হয়, সেগুলো আমরা সবসময় কঠোর হস্তে দমন করেছি। কে হিজাব পরবে কিংবা পরবে না সেটি তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। সুতরাং এ নিয়ে বিতর্ক তৈরি করার কোনো সুযোগ নেই। কেউ যদি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করে সেটি আমরা কঠোর হস্তে দমন করবো।
দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া নতুন থানা স্থাপন প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রায় দুই বছর আগে প্রধানমন্ত্রী এখানে থানা স্থাপন করার সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন। প্রশাসনিক অন্যান্য ধাপগুলো অতিক্রম করে আজ থানার কার্যক্রম আনুষ্ঠানিক শুরু হতে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, রাঙ্গুনিয়ার অন্য অংশের সঙ্গে কর্ণফুলী নদী দ্বারা দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া বিভক্ত। এই এলাকায় ১ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষের বসবাস। রাঙ্গুনিয়া থানা থেকে এসে এখানে সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হতো। অপরাধীরা এখানকার পাহাড়ি এলাকায় পালিয়ে যেতো। সেই কারণেই এখানে থানা স্থাপন করা অত্যন্ত দরকার ছিল, স্থানীয়দেরও দাবি ছিল।
এসময় চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি জাকির হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হকসহ পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।