দীর্ঘমেয়াদী উপযোগিতা আর চাকচিক্যের কারণে তাজা ফুলের বাজার দখল করে নিচ্ছে প্লাস্টিক পণ্য। এমনকি তাজা ফুলের চেয়ে বেশি দামে বিক্রিও হচ্ছে এইসব ফুল। চাহিদাও বেশি। ফুল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, প্লাস্টিক পণ্য নিরোধ করা না গেলে ফুল বাজার আরও লোকসানের মুখে পড়বে।
বরিশাল নগরীতে স্থায়ীভাবে ১৩টি ফুলের দোকান রয়েছে। বিশেষ দিবস এলে দোকানগুলোতে মানুষের উপচেপড়া ভিড় থাকে। বসন্ত বরণ আর ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে রোববার সকাল থেকেই ক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। আর সন্ধ্যায় সেই ভিড় বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এসব দোকান ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন প্রজাতির তাজা ফুলের পাশাপাশি প্লাস্টিকের ফুল ও ক্রাউন সাজিয়ে রাখা হয়েছে।
গাজী ফুল ঘরের মালিক মুজাহার গাজী জানান, অন্যান্য বছর চাষিদের কাছ থেকে কম দামে ফুল কেনা যেত। যে কারণে খুচরা বাজারে ক্রেতাদের কাছে ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে ফুল বিক্রি করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এ বছর চাষিরা দাম বেশি নিচ্ছে। তাই বেশি দামে ফুল বিক্রি করতে হচ্ছে। এর সঙ্গে পরিবহন, শ্রমিকের খরচ যুক্ত হচ্ছে।
ফুল ব্যবসায়ী নাঈম জানান, তাজা ফুলের দাম বাড়ায় ক্রেতারা প্লাস্টিক ফুল ও ক্রাউনের দিকে ঝুঁকছে। গত বছরও এমন চাহিদা ছিল না। কিন্তু এ বছর অনেক ক্রেতা এসে প্লাস্টিক ক্রাউন খুঁজছে। তিনি জানান, তাজা ফুলের ক্রাউন ১৫০ টাকায় বিক্রি হলেও প্লাস্টিকের ক্রাউন বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। তাছাড়া অনেকেই বিয়ের অনুষ্ঠানে তাজা ফুলের চেয়ে প্লাস্টিকের ফুল নিচ্ছে।
ফ্লাওয়ার ঘরের মালিক পারভেজ জানান, ফুলের দাম যে হারে বাড়ছে তাতে ক্রেতারা বিকল্প পথ খুঁজছে। তাছাড়া প্লাস্টিক পণ্য তাজা ফুলের চেয়ে বেশি দিন টেকে। তাই ক্রেতারা প্লাস্টিক ফুল ও ক্রাউনের দিকে ঝুঁকছে।
কবির হোসেন ও জুঁই দম্পতি ফুল কিনতে এসেছেন। তারা জানান, বিশেষ দিনে মানুষ একটু সাজতে চায়। কিন্তু যে হারে তাজা ফুলের দাম বাড়ছে তাতে রীতিমতো চমকে উঠলাম। তার ওপরে তাজা ফুল বেশিক্ষণ স্থায়ী নয়। এজন্য প্লাস্টিকের ক্রাউন কিনতে হচ্ছে। তারা ২০০ টাকা দিয়ে একটি ক্রাউন কিনেছেন।
আবু বকর নামে এক কলেজছাত্র বলেন, অনিয়ন্ত্রিত দামের কারণে তাজা ফুলের তুলনায় প্লাস্টিক ফুলের কদর বাড়ছে।
বরিশালের ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও বনফুল ফুল ঘরের মালিক ইব্রাহিম মুন্না জানান, রোববার সকাল থেকেই ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে। গোলাপ প্রতি পিস ২০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গ্লাডিওলাস ২০ থেকে ৩০ টাকা, রজনীগন্ধা ১৫ টাকা করে এবং লিলি ফুল তিনশ টাকা পিস করে বিক্রি হচ্ছে। লিলি ফুল মাত্র তিনটি দোকানে রয়েছে। ফুল দিয়ে বানানো মাথার চাক ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে অন্য ফুল বিক্রি হলেও গোলাপ নিয়ে লোকসানের শঙ্কায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা।