উপমহাদেশের সংগীতের প্রবীণ মহাতারকা লতা মঙ্গেশকর মারা গেছেন। করোনা ও শারীরিক নানা জটিলতায় টানা ২৭ দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) তিনি না ফেরার দেশে চলে যান। কিংবদন্তী এই সংগীতশিল্পীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ।
শোক জানিয়েছেন দেশটির পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এছাড়া তার মৃত্যুতে ২ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এসময় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। একইসঙ্গে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্পন্ন হবে কিংবদন্তি এই গায়িকার শেষকৃত্য।
লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যুর পর সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম টুইটারে শোকপ্রকাশ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে তিনি লেখেন, ‘আমি ব্যথিত। এ যন্ত্রণা ভাষায় ব্যক্ত করতে পারবো না। লতা দিদি আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন। তার চলে যাওয়ায় যে শূন্যস্থান তৈরি হলো, তা পূরণ করা যাবে না। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তাকে ভারতীয় সংস্কৃতির একজন অনন্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে মনে রাখবে, সুরেলা কণ্ঠ দিয়ে মানুষকে মন্ত্রমুগ্ধ করার এক অতুলনীয় ক্ষমতা ছিল তার।’
এদিকে সুরসম্রাজ্ঞীর প্রয়াণে শোকাহত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি জানান, ‘কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকরের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তার প্রয়াণে আমরা রিক্ত হলাম। তার প্রয়াণে সংগীতজগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি লতা মঙ্গেশকরের আত্মীয়-পরিজন ও অনুরাগীদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’
করোনা আক্রান্ত হওয়ায় গত ১১ জানুয়ারি লতা মঙ্গেশকরকে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত ছিলেন এই শিল্পী। প্রথম থেকেই তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। গত ৩০ জানুয়ারি শিল্পীর করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। কিন্তু বয়সজনিত নানা সমস্যার কারণে শেষ পর্যন্ত তিনি না ফেরার দেশে চলে গেলেন।
এর আগেও সংকটজনক অবস্থায় একাধিক বার হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছিল লতাকে। কিন্তু ভক্তদের আশ্বস্ত করে প্রতিবারই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন তিনি।
১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর লতার জন্ম ভারতের মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের এক মারাঠি পরিবারে। বাবা দীননাথ মঙ্গেশকর মারাঠী, তিনি ছিলেন শাস্ত্রীয় সংগীতে পারদর্শী। থিয়েটারও করতেন। আর মা সেবন্তী ছিলেন কোঙ্কনী গায়িকা। বাবা-মায়ের কাছ থেকেই শৈশবে গানের প্রতি টান তৈরি হয় লতার।
সংবাদমাধ্যম বলছে, ৬ ও ৭ ফেব্রুয়ারি ভারতজুড়ে অর্ধনমিত থাকবে জাতীয় পতাকা। পালিত হবে রাষ্ট্রীয় শোক। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় মুম্বাইয়ের শিবাজী পার্কে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্পন্ন হবে কিংবদন্তী শিল্পীর শেষকৃত্য। সেখানে কিংবদন্তি শিল্পীকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে যাবেন নরেন্দ্র মোদি।