দেশবিরোধী প্রচারণায় যুক্তরাষ্ট্রে তিনটি লবিস্ট কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিতে বিএনপি ৩ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। দলটি কীভাবে বিদেশে এ পরিমাণ অর্থ পাঠিয়েছে, তা জানতে চেয়ে সরকার বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব কথা জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে যুক্তরাষ্ট্রে তিনটি লবিস্ট কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে বিএনপি। এ বিষয়ে তিনটি ডকুমেন্ট পাওয়া গেছে, যার মূল ঠিকানায় বিএনপির পুরানা পল্টনের অফিসের নাম দেওয়া হয়েছে। বিএনপির হয়ে যিনি চুক্তি করেছেন, তার নাম আব্দুস সাত্তার এবং মার্কিন একটি লবিস্ট কোম্পানির নাম ব্লু স্টার স্ট্র্যাটেজিক এলএমসি। ২০১৮ সালে করা এ চুক্তিতে ১ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। সব মিলিয়ে দলটি তিনটি চুক্তিতে ৩ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে।
শাহরিয়ার আলম বলেন, বিএনপি বিদেশে এসব টাকা কীভাবে পাঠিয়েছে, এ তথ্য জানতে চেয়ে সেসব চুক্তির কপি আমরা আজই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে পাঠাব। যাতে এ চুক্তি করতে বিদেশে যে অর্থ তারা পাঠিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের তাতে অনুমোদন রয়েছে কি না তা যাচাই করতে পারে। একইসঙ্গে প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে আয় ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনে দাখিল করতে হয়। নির্বাচন কমিশনে বিএনপি-জামায়াত এ অর্থের হিসাব দিয়েছে কি না, কমিশনও নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত আটটি চুক্তি আমাদের হাতে আছে। এর মধ্যে বিএনপির পেয়েছি আমরা তিনটি। এর বাইরে আরও আছে, যেগুলোর এজেন্ট হচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের চুক্তির কপিতে প্রতিষ্ঠানটির ঠিকানা দেওয়া নেই, তবে তাদের নাম রয়েছে। তারা পিস অ্যান্ড জাস্টিস নামে অরগানাইজেশন খুলে এ চুক্তিগুলো করেছে।
বিএনপি-জামায়েতের এসব চুক্তির অর্থ কিভাবে এল, তা খতিয়ে দেখতে মার্কিন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন লবিস্ট ফার্মের সঙ্গে তারা চুক্তি করেছে। তবে এই চুক্তির অর্থ কীভাবে এল, আমরা সে বিষয়ে খতিয়ে দেখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানাই।
সোমবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বিএনপি-জামায়াতের যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট ফার্মের সঙ্গে চুক্তি করেছে বলে দাবি করেন। তিনি জানান, বিএনপি-জামায়াত গত পাঁচ বছরে যতগুলো লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছে, প্রতিটির যোগাযোগের ঠিকানা আছে, প্রতিটির টাকা-পয়সার হিসাব আছে। কে দিয়েছে, কোন অ্যাকাউন্টে নিয়েছে সবকিছু আছে।
আ. লীগ এখন পর্যন্ত বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করেনি
আওয়ামী লীগ সরকার এখন পর্যন্ত বিদেশে কোনো লবিস্ট নিয়োগ করেনি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তবে জনসংযোগ বা পিআর ফার্ম নিযুক্ত করেছে বলে জানান তিনি।
শাহরিয়ার আলম বলেন, র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা সরকারের কূটনৈতিক পরাজয় বা বিএনপির লবিস্টদের বিজয় নয়। আওয়ামী লীগ সরকারের শিগগিরই লবিস্ট নিয়োগের পরিকল্পনা নেই। র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করবে বাংলাদেশ।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণার জন্য বিদেশে থাকা কারো পাসপোর্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়নি।