মিয়ানমারের কারাবন্দি নেত্রী অং সান সু চি দেশের গণতন্ত্রকামী জনতাকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কারা অন্তরীণ থাকা সু চি এই প্রথম দেশের জনগণের উদ্দেশে কোনো বার্তা দিলেন।
মিয়ানমারের রাজধানী নেইপিদোর আদালতে তার বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাত দিয়ে সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
রয়টার্সকে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘অং সান সু চি দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রত্যেকেরই দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতা আছে, এবং এই ভিন্নতাকে সম্মান করা ও ধৈর্য্যের সঙ্গে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করা উচিত।’
কী কারণে সু চি এই আহ্বান জানিয়েছেন—তা অবশ্য স্পষ্ট নয়, তবে ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন জান্তার সঙ্গে আপস বা সংলাপের কোনো ইঙ্গিত দেননি তিনি। নিরাপত্তাজনিত কারণে ওই ব্যক্তির নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি রয়টার্স।
২০২০ সালের জাতীয় নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীয়। দেশটির সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইং এই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন।
১ ফেব্রুয়ারি রাতেই জান্তা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন ৭৬ বছর বয়সী সু চি, বন্দি করা হয় তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) বিভিন্ন স্তরের কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে।
গ্রেপ্তারের পর সুচির বিরুদ্ধে দুর্নীতির কয়েকটি মামলা করেচে জান্তা। রাজধানী নেইপিদোতে সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত একটি আদালতে সেসব মামলার বিচার চলছে। সব মামলায় দোষী প্রমাণিত হলে দেড়শ বছরের বেশি সময় কারাগারে কাটাতে হবে সু চির।
এ বিষয়ে মন্তব্য জনতে চেয়ে সামরিক বাহিনীর একাধিক মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স, কিন্তু কেউই মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সু চির বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ওই ব্যক্তি রয়টার্সকে জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে এনএলডি নেত্রীর বিরুদ্ধে করা একটি মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, বিদেশি কোম্পানিকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে ঘুষ হিসেবে স্বর্ণ ও নগদ অর্থ নিয়েছিলেন সু চি।
সু চি অবশ্য বরাবরই দাবি করে আসছেন, তিনি নির্দোষ।