হত্যার শিকার হতে পারেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এমনটা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি নিজেই। রোববার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আস্থাভোটের আগে ইমরানের এমন দাবি পাকিস্তানের রাজনৈতিক আবহাওয়াকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।
শুক্রবার এআরওয়াই নিউজে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পাক প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেয়েছেন, তার জীবন বিপন্ন। তবে সেই ভয়ে তিনি পিছপা হবেন, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইমরান।
তিনি বলেন, স্বাধীন এবং গণতান্ত্রিক পাকিস্তানের জন্য যত দূর লড়াই করতে হয় করব। এজন্য আমার প্রাণহানির আশঙ্কা থাকলেও ভয় পাই না।
ইমরান আরও দাবি করেন, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তার সামনে তিনটি পথ বেছে দেওয়া হয়েছে। আর সেই পথ বেছে দিয়েছে ‘প্রতিষ্ঠান’ (পাক সেনা)। এরমধ্যে একটি হলো আস্থাভোট, দ্বিতীয়টি দ্রুত নির্বাচন এবং তৃতীয় পথ ইস্তফা। এই তিন পথের মধ্যে প্রথমটি রোববার। অর্থাৎ ওইদিন আস্থাভোটে ইমরানকে নিজের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হবে। ফলাফল স্রোতের প্রতিকূলে হলে দ্বিতীয় পথটি বেছে নেবেন, দ্রুত নির্বাচন।
তার অভিযোগ, প্রাণহানির আশঙ্কা তো আছেই, সেই সঙ্গে বিরোধীরাও তাকে সরাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। সে কারণে বিদেশি শক্তির সঙ্গেও হাত মিলিয়েছে তারা।
পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষকে এটা জানাতে চাই, আমার প্রাণহানির আশঙ্কা তো আছেই, বিরোধীরা আমার চরিত্রহনন করতেও ছাড়ছে না। এমনকি আমার স্ত্রীর চরিত্র তুলেও আক্রমণ করছে।
ক্রিকেট তারকা থেকে প্রধানমন্ত্রী বনে যাওয়া ইমরান খান গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশটিতে ব্যাপক রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মুখোমুখি হয়েছেন। দেশটির ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, পাকিস্তানের কোনো প্রধানমন্ত্রীই তাদের পাঁচ বছরের ক্ষমতার মেয়াদ কখনই পূর্ণ করে যেতে পারেননি। মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে রাজনৈতিক, সামরিক অস্থিরতার মুখে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হয়েছে প্রত্যেক প্রধানমন্ত্রীকে।
পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয় পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দেশটির সামরিক বাহিনীর ব্যাপক সমর্থন পেয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে বিভিন্ন ইস্যুতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে ইমরান খানের টানাপড়েন বৃদ্ধি পায়।
তবে সেনাবাহিনীর কাছ থেকে সমর্থন পাওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন ইমরান খান। বেসামরিক রাজনীতিতে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেছে পাক সেনাবাহিনীও। যদিও দেশটির ইতিহাসের প্রায় অর্ধেক সময়ই শাসন করেছে সামরিক বাহিনী।