প্লট ও ফ্ল্যাট বিক্রির অনুমতি, মিউটেশন চালান পাস এবং লিজ দলিলসহ সব কর্মকাণ্ডে জাতীয় গৃহায়নে দালালদের দৌরাত্ম্য। দালাল ছাড়া কোনো কাজ যেন প্রায় অসম্ভব।
ছদ্মবেশে গ্রাহক সেজে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট টিম বিভিন্ন কাজের জন্য কর্মচারীর সঙ্গে কথা বললে তারা টাকা দাবি করেন। এমনকি এ বিষয়ে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. দেলওয়ার হায়দারের সঙ্গে আলোচনা করলে তিনিও তার অফিসে দালালদের দৌরাত্ম্য রয়েছে বলে অকপটে স্বীকার করেছেন।
সোমবার (৭ মার্চ) দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রণজিৎ কুমার কর্মকার ও আজমেরী খানমের সমন্বয়ে গঠিত এনফোর্সমেন্ট টিম ওই অভিযানে অংশ নেয়।
সংস্থাটির সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ শফিউল্লাহ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের প্লট ও ফ্ল্যাট সেল পারমিশন, মিউটেশন চালান পাস, লীজ দলিলে স্বাক্ষরসহ অন্যান্য গ্রাহকসেবা প্রদানে সিবিএ-র নামধারী নেতাদের ছত্রছায়ায় প্রতিটি টেবিলে ঘুষ বাণিজ্য সংক্রান্ত অভিযোগের বিরুদ্ধে ওই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
দুদক জানায়,অভিযোগের বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে। দুদক টিম অভিযোগ যাচাই ও সত্য উদঘাটনের জন্য সরেজমিনে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ অফিসের ৩য় তলায় প্রথমে ছদ্মবেশে তথ্য সংগ্রহ ও সেবাগ্রহীতাদের সাথে কথা বলে। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা ও বিভিন্ন নথি পর্যালোচনা করে।
অভিযানকালে সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে আলোচনা করে টিম জানতে পারে, প্রতিটি কাজ করতে দালাল ধরতে হয় এবং দালাল ছাড়া কোনো কাজ প্রায় অসম্ভব। ছদ্মবেশে গ্রাহক সেজে কয়েকজন কর্মচারীর সঙ্গে কথা বললে তারাও বিভিন্ন কাজের জন্য এনফোর্সমেন্ট টিমের সদস্যদের নিকট টাকা দাবি করেন। অভিযানকালে উক্ত অফিসে দালালদের দৌরাত্ম্য স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়। এ বিষয়ে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা করলে তিনিও তার অফিসে দালালদের দৌরাত্ম্য রয়েছে বলে অকপটে স্বীকার করেন।
এনফোর্সমেন্ট টিম এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে। অভিযানে প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণ যাচাই করে কমিশনে বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে বলেও দুদক এনফোর্সমেন্ট টিম সূত্রে জানা যায়।