ইউক্রেনে নিযুক্ত রাশিয়ার কূটনীতিকদের সরিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে মস্কো। দেশটির দাবি, জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এসব কূটনীতিককে শিগগিরই ইউক্রেন থেকে রাশিয়ায় ফিরিয়ে আনা হবে।
রাশিয়ার বাইরে বিদেশি ভূখণ্ডে সামরিক বাহিনী ব্যবহারের জন্য প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে রুশ পার্লামেন্টের অনুমোদনের পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানালো মস্কো। বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘কূটনীতিকদের নিরাপত্তা ও জীবন রক্ষার জন্য ইউক্রেনে থাকা রুশ মিশনগুলো থেকে কর্মীদের ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই এটি বাস্তবায়ন করা হবে।’
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, ইউক্রেনে অবস্থানরত রুশ কূটনীতিকরা হুমকি পাচ্ছেন এবং রুশ দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোতেও ‘বার বার হামলার ঘটনা’ ঘটছে। ইউক্রেন গভীর বিশৃঙ্খলার মধ্যে নিমজ্জিত হয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
পূর্ব ইউরোপে রাশিয়ার সাথে পশ্চিমা দেশগুলোর চলমান উত্তেজনার মধ্যেই ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দু’টি রুশপন্থি অঞ্চলকে সোমবার ‘স্বাধীন’ রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয় মস্কো। এমনকি স্বীকৃতি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেখানে সেনা পাঠানোর নির্দেশও দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
অবশ্য এর আগে থেকেই ইউক্রেন সীমান্তে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে প্রায় দেড় লাখ সেনাসদস্য মোতায়েন রেখেছে প্রতিবেশী রাশিয়া। এর মধ্যে ট্যাংক ও কামানসহ যুদ্ধবিমানের বহরও ইউক্রেন সীমান্তে পাঠিয়েছে দেশটি। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। যদিও ইউক্রেনে হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বরাবরই দাবি করে আসছে মস্কো।
এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার রাশিয়ার বাইরে বিদেশি ভূখণ্ডে সামরিক বাহিনী ব্যবহারের জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে অনুমোদন দেয় রুশ পার্লামেন্ট। মূলত ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহায়তার জন্যই পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে এই অনুমোদন দেওয়া হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
যদিও রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগেই জানিয়েছিল যে, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে এখনই সেনা পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা নেই রাশিয়ার। তবে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহায়তার জন্য দেশের বাইরে রুশ সামরিক বাহিনীকে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন দিতে ফেডারেশন কাউন্সিলের প্রতি আহ্বান জানান প্রেসিডেন্ট পুতিন। পরে মঙ্গলবার এই অনুমোদন পান রুশ প্রেসিডেন্ট।
এর আগে যেকোনো মুহূর্তে রাশিয়ার আক্রমণের আশঙ্কায় পশ্চিমা বিভিন্ন দেশে ইতোমধ্যেই ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে পোল্যান্ড সীমান্তের কাছে অবস্থিত লভিভ শহরে তাদের দূতাবাস সরিয়ে নিয়েছে।