ইউক্রেন থেকে রাশিয়ায় অনুপ্রবেশ করা পাঁচ ‘নাশকতাকারীকে’ হত্যার দাবি করেছে রুশ সেনাবাহিনী। কয়েক সপ্তাহ ধরে চলমান উত্তেজনায় যখন প্রতিবেশী দুই দেশের মাঝে যুদ্ধের দামামা বাজছে তখন ইউক্রেনীয় নাশকতাকারীদের হত্যার এই দাবি জানাল মস্কো।
স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ৬টার দিকে রাশিয়ার রোস্তভ অঞ্চলের মিতাকিনস্কয়া গ্রামের কাছে সীমান্তে সংঘর্ষে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটেছে। রাশিয়ার সর্বশেষ এই দাবি ঘিরে ইউক্রেন সীমান্তে উত্তেজনা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
সোমবার রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, একদল নাশকতাকারী রাশিয়ার সীমান্ত লঙ্ঘন করে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে পাঁচ নাশকতাকারী নিহত হয়।
এদিকে আজই (সোমবার) ইউক্রেন থেকে ছোড়া গোলার আঘাতে সীমান্তে রাশিয়ার একটি সামরিক স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে বলে দাবি করেছে মস্কো। তবে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেবা রাশিয়ার এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ক্রেমলিন ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর পথ তৈরি করছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ইউক্রেন দোনেৎসক অথবা লুগানস্কে হামলা চালায়নি। এমনকি রাশিয়ার ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশের জন্য, সীমান্তে গোলাবর্ষণের জন্য অথবা নাশকতা পরিচালনার জন্য সীমান্ত এলাকায় কোনো নাশকতাকারী অথবা সৈন্যবাহী সাঁজোয়া যানও পাঠায়নি।
তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেন এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করেনি। রাশিয়া, এবার ভুয়া তথ্য উৎপাদনের কারখানা বন্ধ কর।’
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউক্রেন সীমান্তে দেড় লাখের বেশি সৈন্য সমাবেশ করে রেখেছে রাশিয়া। ইউক্রেনে রাশিয়া যেকোনো মুহূর্তে আগ্রাসন চালাতে পারে বলে পশ্চিমা বিশ্ব তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, ইউক্রেনে আক্রমণ চালানো হলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
হামলা চালানোর পরিকল্পনা অস্বীকার করলেও নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এবং পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে ইউক্রেনের যোগদান ঠেকানোর লক্ষ্যে কিয়েভের ওপর ব্যাপক চাপ তৈরি করেছে রাশিয়া।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন অত্যাসন্ন আশঙ্কায় যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন পশ্চিমা নেতারা। যুদ্ধ ঠেকাতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেন। এদিকে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, ইউরোপে ১৯৪৫ সালের পর সবচেয়ে বড় যুদ্ধের পরিকল্পনা করছে রাশিয়া।
সূত্র: এএফপি।