দেশে ৬৭ শতাংশ মৃত্যুর জন্য অসংক্রামক রোগ (এনসিডি) দায়ী বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্যঝুঁকি ও উদ্বেগের কারণ হচ্ছে অসংক্রামক রোগ।
বুধবার (২৬ জানুয়ারি) রাতে প্রথম জাতীয় এনসিডি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ২০ শতাংশ মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে, ১০ শতাংশ মানুষ ডায়াবেটিস ও প্রায় ২০ লাখ মানুষ ক্যানসারে ভুগছে। নতুন করে আরও প্রতি বছর ৫০ হাজার যোগ হয়।
কারণ প্রসঙ্গে জাহিদ মালেক বলেন, জীবন যাত্রার পরিবর্তন, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন, ওবিসিটি, তামাকের ব্যবহার, পরিবেশ দূষণ, অপর্যাপ্ত কায়িক পরিশ্রম, ওষুধের অপব্যবহারের কারণে এনসিডি বাড়ছে। এ অবস্থায় এনসিডি প্রতিরোধে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
তিনি আরও বলেন, অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে রেগুলার চেকআপ ও আর্লি ডিটেকশন গুরুত্বপূর্ণ। ট্রিটমেন্ট ফ্যাসিলিটি বাড়ানো ও প্রশিক্ষিত জনবল প্রয়োজন।
জাহিদ মালেক আরও বলেন, সরকার এনসিডি প্রতিরোধে সেক্টর ভিত্তিক প্রোগ্রাম নিয়েছে। দেশের আট বিভাগে ক্যানসার, কিডনি ও হৃদরোগের হাসপাতাল স্থাপন করা হচ্ছে। দেশের সব জেলা হাসপাতালে ১০ বেডের ডায়ালাইসিস ও আইসিইউ বেড স্থাপন করা হচ্ছে। উপজেলা হাসপাতালসহ দেশের সব হাসপাতালে এনসিডি কর্নার করা হয়েছে।
এ সময় মন্ত্রী স্বাস্থ্য অধিদফতর, বাংলাদেশ নন কমিউনিকেবল ডিজিজ ফোরাম ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামকে এই কনফারেন্স আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান।
করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, হাসপাতালগুলো কোভিড রোগী দিয়ে ভর্তি হওয়ায় এনসিডি রোগীরা সেবা বঞ্চিত হয়েছে। দেরিতে সেবা নেওয়ায় মৃত্যু বেড়েছে। এখন দেশে কোভিড পজিটিভটি রেট ৩২%, দিনে ১৫ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে। সংক্রমণ রোধে সবাইকে মাস্ক পরতে, জনসমাগম এড়ানো ও ভ্যাকসিন নেওয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস বলেন, অসংক্রামক ব্যাধির কারণে বাংলাদেশসহ মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, প্রাইমারি হেলথ কেয়ার পর্যায়ে এই রোগগুলোর চিকিৎসা নিশ্চিতের আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. সেব্রিনা ফ্লোরা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ডা. বর্ধন জং রানা।