সিএনএম প্রতিনিধিঃ
ঢাকার দোহার উপজেলার এক গৃহবধূ ভার্চ্যুয়াল জগতে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ পুলিশের উদ্যোগে চালু হওয়া ‘পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন’ – এর ফেসবুকে পেজে অভিযোগ করে প্রতিকার পেলেন।
বৃহস্পতিবার (২০ মে) গৃহবধূর অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম নামে এক পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে দোহার থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত সাইফুল ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা থানায় পুলিশ কনস্টেবল পদে কর্মরত আছেন। সে দোহার উপজেলার নারিশা পশ্চিমচর গ্রামের নাসির উদ্দিনের ছেলে।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ জানান, তিন বছর আগে স্কুলে পড়াশোনা করা অবস্থায় দোহারের কবি নজরুল উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বাড়িতে প্রাইভেট পড়তেন তিনি। তখন শিক্ষকের ছোট ভাই পুলিশ কনস্টেবল সাইফুল ইসলামের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। সেই সুযোগে মোবাইল থেকে সাইফুল তার বেশকিছু ব্যক্তিগত ছবি ও খোলামেলা অবস্থার ভিডিও নিয়ে নেয়।
গৃহবধূ বলেন, ওই ছবি-ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে প্রেমের সম্পর্ক করতে বাধ্য করে সাইফুল। সম্পর্কের একপর্যায়ে ইমোতে ভিডিও কলে কথা বলার সময় অজান্তে খোলামেলা অবস্থার ভিডিও সে ধারণ করে রাখে। সেগুলো দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করার চেষ্টা করে। পরে বান্ধবীদের মাধ্যমে জানতে পারি সাইফুল এভাবে একাধিক মেয়ের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। বিষয়টি বুঝতে পেরে কৌশলে যোগাযোগ বন্ধ করি। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে পারিবারিকভাবে আমার বিয়ে হলে নতুন করে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে সাইফুল। সে আমার নাম ও ছবি ব্যবহার করে একটি ফেসবুক আইডি খুলে সেখান থেকে আমার বিভিন্ন অশালীন ছবি ও ভিডিও এডিট করে স্বামীর মোবাইলে পাঠাতে থাকে। এভাবে নামে-বেনামে কয়েকটি আইডি থেকে সে আমাকে সামাজিক ও পারিবারিকভাবে হেয় করতে থাকে।
তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী মানসিকভাবে সহযোগিতা করায় তার মাধ্যমে ‘পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন’ – এর কথা জানতে পারি। ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে বিষয়টি তাদের জানালে তারা আমাকে প্রথমে দোহার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি পরবর্তীতে মামলা করার পরামর্শ দেন এবং দোহার থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন মামলা গ্রহণের।
গতকাল বুধবার (১৯ মে) আমি বাদী হয়ে সাইফুলের বিরুদ্ধে দোহার থানায় একটি মামলা দায়ের করি। ওই মামলার পর দোহার থানা পুলিশ ফরিদপুর থেকে সাইফুলকে গ্রেপ্তার করেন।
দোহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তফা কামাল বলেন, ভুক্তভোগী মেয়েটি ‘পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন’ – এর ফেসবুক পেজে বিষয়টি জানালে সেখান থেকে আমাদের নির্দেশনা দেয়া হয়। ওই গৃহবধূর মামলার ভিত্তিতে ফরিদপুর থেকে বৃহস্পতিবার ইসলামকে গ্রেপ্তার করে দোহার থানায় নিয়ে আসা হয়। শুক্রবার তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।