সিএনএম প্রতিনিধিঃ
প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত ডিরেক্টর পরিচয়দানকারী শীর্ষ প্রতারক নড়াইলের বাদশাকে সাতক্ষীরা থেকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
শনিবার (১লা মে) সকালে তাকে সাতক্ষীরার কামালনগরের বাইপাস সড়ক থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রতারক বাদশার পুরো নাম এস এম বাদশা মিয়া (৩৭)। তিনি নড়াইলের নুর ইসলামের ছেলে। সম্প্রতি সাতক্ষীরার বিভিন্ন থানায় নিজেকে প্রধানমন্ত্রী মনোনীত এলজিইডি ডিরেক্টর পরিচয় দিয়ে তদবির কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন।
বিকালে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের ড্রিল হাউসে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সাতক্ষীরার এসপি মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘রিজেন্ট শাহেদের মত আরেক শীর্ষ প্রতারক এই বাদশা মিয়া। তার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিবসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নকল নোট প্যাড, এমপিদের নামে বানানো সীল, সংসদ সদস্যদের ডিও লেটার ও বিভিন্ন প্রকার নিয়োগপত্র এবং জমাজমি সংক্রান্ত কাগজ-পত্র জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। সে নিজেকে কখনও ডাক্তার, আবার কখনও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এলজিআরডি ডিরেক্টর পরিচয় দিতেন। আবার কখনও ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসাবে নিজেকে পরিচয় দিতেন। এছাড়াও বিভিন্ন মানুষকে টাকার বিনিময়ে চাকরিতে পদোন্নতি, চাকুরী পাইয়ে দেওয়া, এমন কি যে কোন মামলার সুরাহা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ বিভিন্ন প্রতারনার অভিযোগ রয়েছে।’
পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘সকালে সাতক্ষীরা শহর উপকণ্ঠের কামালনগরের বাইপাস সড়কের শফির মুদির দোকানের পাশ থেকে প্রতারক বাদশাকে কৌশলে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার সাথে তার আরেক সহযোগী সাগরকেও গ্রেপ্তার করা হয়। বাদশার পিএস আবার কখনও জীন ধরা কবিরাজ পরিচয়ধারী এই জাহানুর রহমান সাগরও প্রতারণা করে আসছিলেন। গ্রেপ্তারকালে বাদশার কাছ থেকে ২রাউন্ড গুলিভর্তি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়। সে নিজেকে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদ ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের কেন্দ্রীয় সভাপতি পরিচয় দেয়। পরে তার কাছ থেকে এমপি শেখ ফজলুল করিম সেলিম এর নামে বানানো সীল, সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিন জুয়েলের ডিও লেটার ও বানানো সিল. প্রধানমন্ত্রীর একান্তু সচিব লেখা অফিসিয়াল নোটপ্যাড, ভুয়া ওয়ারেন্ট ২৫টি, ৭টি মোবাইল, ঢাকার মুগদা মাদ্রাসার চাঁদা আদায়ের রশিদসহ প্রতারণার নানারকম জিনিসপত্র জব্দ করা হয়। মসজিদের নামে আদায়কৃত নগদ আটষট্টি হাজার টাকাও উদ্ধার করা হয়।’
এই চক্রের অন্যান্য সহযোগী ও গডফাদারদেরও আইনের আওতায় আনতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং সার্বিক বিষয় ক্ষতিয়ে দেখে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
প্রেসব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সজিব খান, সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামসুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন, সহকারি পুলিশ সুপার ডিএসবি সাইফুল ইসলাম, ডিআইওয়ান মিজানুর রহমান, সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি তদন্ত বুরহান উদ্দিন, গোয়েন্দা পুলিশের ওসি (ডিবি) ইয়াসিন আলম চৌধুরিসহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।