সিএনএম (কুমিল্লা):
আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ -২০২৩ শীর্ষক কার্যক্রমের আওতায় কুমিল্লার তিতাস উপজেলায়ও ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে ৫ টি ক্যাটাগরিতে পাঁচ জন জয়িতা নির্বাচিত করেছেন উপজেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর।
জয়িতা নির্বাচনের চুড়ান্ত তালিকায় পাঁচ জনের মধ্যে একজন নারী মেঘনা উপজেলার ভোটার ও বাসিন্দা রয়েছে। খোজ নিয়ে জানা যায়, মেঘনা উপজেলার মানিকারচর ইউনিয়নের বারহাজার গ্রামের মোহাম্মদ আলীর মেয়ে নাছরিন আক্তার, তিতাস উপজেলার মঙ্গলকান্দি মাদ্রাসার দাখিল শাখায় সহকারী শিক্ষিকা।
তিনি শিক্ষিকা ও চাকুরী ক্ষেত্রে ক্যাটাগরিতে সাফল্য অর্জনকারী নারী হিসেবে জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন। অন্যান্য ক্যাটাগরীতে জয়িতা হলেন, সফল জননী নারী ক্যাটাগরীতে জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন মোমেনা খাতুন, তিনি একজন গৃহীনি,তাহার পাঁচ ছেলে সবাইকে তিনি সুশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন এবং মোমেনা খাতুন একজন সফল মা।
অর্থনৈতিক ভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী হিসেবে জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন নার্গিস আক্তার। তিনি পেশায় একজন ফার্মাসিস্ট ২০ বছর ধরে তিনি এই ব্যবসা করে নিজেকে অর্থনৈতিক ভাবে সফল করে তুলেছেন এবং এক ছেলে ও এক মেয়েকে বানিয়েছেন কোরআনে হাফেজ।
সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখে জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন রহিমা বেগম, তিনি সমাজের অসহায়দের আর্থিক সহযোগিতা, শিক্ষার মানোন্নয়নে সহযোগিতাসহ সমাজের বিভিন্ন কাজে রয়েছে তার অবদান।
নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করে সফল নারী হিসেবে জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন নাজমা বেগম। তিনি ১৩ বছর পূর্বে তার স্বামীর সাথে বিচ্ছেদ হলে নাজমা বেগম তার ছোট ছোট দুই ছেলে নিয়ে জীবনের সাথে যুদ্ধ করে জীবিকা নির্বাহ করে বাপের বাড়িতে থেকে বড় ছেলেকে প্রবাসে পাঠিয়ে তিনি আজ সফল।
গত শনিবার (৯ডিসেম্বর) তিতাস উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এবং উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে পরিষদ মিলনায়তনে জয়িতাদের সংবর্ধনা প্রদান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.নাজমুল হাসান।
জয়িতা হচ্ছে সমাজের সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল নারী’র একটি প্রতিকী নাম। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দিক নির্দেশনায় ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উদ্যোগে প্রতিবছর আর্ন্তজাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ (২৫ নভেম্বর হতে ১০ ডিসেম্বর) এবং বেগম রোকেয়া দিবস (৯ ডিসেম্বর) উৎযাপন কালে দেশব্যাপী “জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ” শীর্ষক একটি অভিনব প্রচারাভিযান পালন করে আসছে।
তারই ধারাবাহিকতায় কার্যক্রমের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তৃণমূলের সফল নারী তথা জয়িতাদের অনুপ্রানিত করবে। সমগ্র সমাজ নারী বান্ধব হবে এবং এতে করে সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে।
সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের জয়িতাদের চিহ্নিত করে তাদের যথাযথ সম্মান, স্বীকৃতি ও অনুপ্রেরণা প্রদান করে সমাজের আপামর নারীদের মধ্যে আস্থা সৃষ্টি করার নিয়ম থাকলেও তিতাস উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর এর কিছুই মানছেন না। বিভিন্ন পর্যায়ে জয়িতা বাছাই প্রক্রিয়া হলো
প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ইউনিয়ন পরিষদ স্ব স্ব ইউনিয়নে এবং ওয়ার্ড মেম্বারদের স্ব স্ব ওয়ার্ডে ব্যাপক প্রচার ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্যাটাগরীতে আবেদনপত্র আহবান করবে। প্রাপ্ত আবেদনপত্র সমূহ ইউনিয়ন কমিটির মাধ্যমে যাচাই বাছাই পূর্বক প্রতিটি ক্যাটাগরীতে ইউনিয়নের শ্রেষ্ঠ একজন করে নির্বাচিত মহিলার প্রস্তাব সত্যায়িত ছবি ও জীবনবৃত্তান্ত সহ উপজেলায় প্রেরণ করার কথা থাকলেও এর কোনটাই পালন করেননি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর।
তিতাস উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রেহেনা বেগম এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, মঙ্গলকান্দি মাদ্রাসা’র প্রিন্সিপাল এর সুপারিশে ওনাকে নির্বাচিত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন পরবর্তীতে আপনারও কোনো যোগ্য লোক থাকলে বইলেন আমরা নির্বাচিত করবো।