সিএনএমঃ
রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে কোটি টাকা মূল্যের ৩৩,০০০ পিস ইয়াবাসহ কক্সবাজারের গডফাদার এরশাদুল হক (৩২) কে গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর গণমাধ্যমকে জানায়, প্রায় এক মাস আগে এরশাদুলের ইয়াবা সিন্ডিকেট সম্পর্কে জানতে পারেন তারা। এরপর এরশাদুল এর সাথে সক্ষ্যতা তৈরীর জন্য সংস্থাটি সোর্স নিয়োগ করে। সে মোতাবেক ক্রেতা সেজে গত সোমবার (২৪ অক্টোবর) রমনা সার্কেলের পরিদর্শক তমিজ উদ্দিন মৃধা এরশাদুল সিন্ডিকেটের সহযোগী সদস্য হুমায়নের কাছ থেকে ইয়াবা নিতে যায়।
সে সময়ে ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে ২০০০ হাজার পিস ইয়াবাসহ হুমায়নকে স্বস্ত্রীক গ্রেপ্তার করা হয়।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর হুমায়ন ও তার স্ত্রীকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে জানায়, তারা এরশাদুলের অবস্থান সম্পর্কে জানায়। জিজ্ঞাসাবাদে হুমায়ন আরো জানায়, টেকনাফের মূল গডফাদার এরশাদুল ইয়াবার একটি বড় চালান নিয়ে ঢাকায় অবস্থান করবে। এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে টিম গতকাল রাতে এরশাদুল’কে ৩৩,০০০ ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করে।
সংস্থাটি বলছে, গ্রেপ্তারকৃত আসামী এরশাদুল হক (৩২) একটি সরকারি কলেজ থেকে বিবিএ শেষ করেছে এবং সে নিজেকে কক্সবাজার জেলা ক্রিকেট টিমের সাবেক ক্যাপ্টেন বলে দাবি করেন। এরশাদুল হক জিজ্ঞাসাবাদে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে জানায়, উখিয়ায় তাদের একাধিক মাছের প্রজেক্ট রয়েছে। এই মাছের প্রজেক্টের আড়ালে সে ইয়াবার ব্যবসা করতো। গ্রেপ্তারকৃত এরশাদুল হক আরো জানান, মাছ পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত ট্রাকের মধ্যে বিশেষ কায়দায় ম্যাগনেট ব্যবহার এবং আরো বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ঢাকায় ইয়াবার বড় চালান নিয়ে আসতো। এ কাজে তার একাধিক সহযোগী সদস্য রয়েছে এবং সে এ সিন্ডিকেটের মূল হোতা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এরশাদুল আরো জানায়, সে এই চালানের পূর্বেও একাধিকবার ইয়াবার বড় চালান ঢাকার পাইকারী ব্যবসায়ীর কাছে সরবরাহ করেছেন। নিজেকে ধরা-ছোয়ার বাহিরে রাখার জন্য সে বিমানে যাতায়াত করতো এবং যোগাযোগের জন্য বিভিন্ন এনক্রিপটেড অ্যাপস ব্যবহার করতো। তার মোবাইল ফোন বিশ্লেষণ করে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে অনুসন্ধানপূর্বক এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জিজ্ঞাসাবাদে এরশাদুল জানায়, পাইকারী দামে ইয়াবা সংগ্রহের জন্য সে নিজে মিয়ানমারে থাকা ডিলারদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতো এবং নৌ-পথে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা সংগ্রহের জন্য সে একাধিক রোহিঙ্গাকে ব্যবহার করতো।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।