সিএনএমঃ
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মন্তব্য করে বলেছেন মিয়ানমার বাহিনী যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার থেকে বাংলাদেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে গুলিবর্ষণ করছে।
শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মিয়ানমার বাহিনী প্রায়শই যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার থেকে বাংলাদেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে গুলিবর্ষণ করছে। আমাদের সকলের স্মরণে আছে, ২০১৭ সালের ২৫ ও ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও পুলিশের গণহত্যার মুখে প্রাণ বাঁচাতে আট লক্ষাধিক রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এমনিতেই ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশ মহা সংকটে রয়েছে। তার উপর এখন নতুন করে সীমান্ত সমস্যা সৃষ্টি করছে মিয়ানমার বাহিনী। আর এটা সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশের বর্তমান ফ্যাসিবাদী শাসক শেখ হাসিনার নতজানু পররাষ্ট্রনীতির ফলে।
তিনি বলেন, ‘এইদিকে বাংলাদেশ ভারত সীমান্ত হত্যা অব্যাহত রয়েছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময়েও সীমান্ত হত্যা সংঘটিত হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির সুযোগে সীমান্তে মিয়ানমার সশস্ত্র বাহিনীর বেপরোয়া তৎপরতা ও সর্বশেষ নিক্ষিপ্ত মর্টার শেলের আঘাতে বাংলাদেশ সীমান্তের শূন্যরেখার কাছাকাছি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিএনপির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে এবং জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সম্প্রতি মিয়ানমার সশস্ত্র বাহিনী বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গোলা নিক্ষেপের মাধ্যমে বাংলাদেশ- মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় এক গভীর আতংকজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক সরকারের নতজানু ও দুর্বল কূটনীতির সুযোগে গত ২৮ আগস্ট শুরু হওয়া মিয়ানমার সশস্ত্র বাহিনীর সামরিক ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ বেড়েই চলেছে।
‘যার সর্বশেষ উদাহরণ হচ্ছে, গতকাল মিয়ানমার বাহিনীর ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমন সীমান্তের বিপরীতে শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা কিশোরের মৃত্যু। এতে এক শিশুসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় উখিয়ার কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই কিশোরের মৃত্যু হয়। এর ফলে সীমান্ত এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।’
ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ সীমান্তে মর্টারশেল ছোড়ার এক সপ্তাহের মাথায় গত ৩ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার বাহিনী বারংবার আকাশসীমা লঙ্ঘন করে যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার থেকে গোলা নিক্ষেপ করে। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের শূন্যরেখার কাছাকাছি বাংলাদেশের ভূখণ্ডে ১২০ মিটারের ভেতরে পড়ে বিস্ফোরিত হয় যাহা সরাসরি আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন।
তিনি বলেন, আমরা জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি মিয়ানমারের এই ঔদ্বত্য প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য।
স্বাধীন ও স্বার্বভৌম বাংলাদেশের ভৌগলিক অখন্ডতা রক্ষার্থে মেরুদণ্ড সোজা করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খান, আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।