আড়াই বছর ধরে বাগেরহাটে অবস্থান করা ১১ বছর বয়সী কোরিয়ান শিশু জান জিনুকে কোরিয়ান দূতাবাসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বুধবার (১৫ জুন) দুপুরে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে দূতাবাসের থার্ড সেক্রেটারি ও উপ-কনসাল কিম জং কিয়ের কাছে শিশুটিকে হস্তান্তর করে সমাজসেবা অধিদপ্তর।
হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বাগেরহাট জেলা ও দায়রা জজ (শিশু আদালত-১) সাইফুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক, জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা এস এম রফিকুল ইসলাম, প্রবেশন কর্মকর্তা মো. সোহেল পারভেজ উপস্থিত ছিলেন। পরে শিশুটিকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন দূতাবাস কর্মকর্তারা।
শিশুটির দক্ষিণ কোরিয়ার পার্সপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর সে বাংলাদেশে আসে। দক্ষিণ কোরিয়ার পাসপোর্ট থাকার পরও মো. জান জিনু নামে শিশুটির জন্ম নিবন্ধন করিয়ে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করানো হয়েছিল।
সমাজসেবা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, শিশুটির বাবা জান ইয়োন জুন দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক। দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক শিরিনা বেগমকে বিয়ে করলে সেখানে জান জিনুর জন্ম হয়। কিন্তু কয়েক বছর পরে শিশুটির বাবা মারা গেলে তার মা শিরিনা বেগম কোরিয়া প্রবাসী বাগেরহাটের শেখ মিজানুর রহমানকে বিয়ে করেন।
২০১৯ সালের নভেম্বরে এ দম্পত্তি জান জিনুকে নিয়ে বাংলাদেশে আসে। কিন্তু পরবর্তীতে স্বামী-স্ত্রী কোরিয়া ফিরে গেলেও শিশুটি বাগেরহাটেই রয়ে যায়। কোরিয়া থেকে তার মায়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে শিশুটিকে কোরিয়ান দূতাবাস কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন কর্মকর্তা মো. সোহেল পারভেজ বলেন, ধারণা করা হচ্ছে কোরিয়ায় ফিরে শিশুটির মা ও তার দ্বিতীয় স্বামীর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। ফলে তার মা শিশুটিকে বাগেরহাটে রাখতে চাচ্ছিলেন না। এ জন্য কোরিয়া দূতাবাসের মাধ্যমে শিশুটিকে ফেরত চেয়ে আবেদন করেন। পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে নেয়। আইনী প্রক্রিয়া শেষে শিশুটিকে কোরিয়ান দূতাবাসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।