ভারতীয় মুদ্রায় মহাত্মা গান্ধীর জায়গায় সুভাষচন্দ্র বসুর ছবি থাকা উচিত বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় সবসময়ই দাবি শোনা যায়। তবে এতদিন মহাত্মা গান্ধীর ছবি প্রতিস্থাপনের বিষয়ে তেমন কোনো সংকেত পাওয়া যায়নি ভারত সরকারের পক্ষ থেকে। হঠাৎ শোনা যাচ্ছে, রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া মুদ্রায় পরিবর্তনের ছোঁয়া আনতে পারে।
মহাত্মা গান্ধীর পাশাপাশি অন্য মনীষীদের ছবিও ছাপা হতে পারে অচিরেই— এমনটাই আভাস দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মনীষীদের তালিকায় নাম রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালামের। বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক এবং সিকিউরিটি প্রিন্টিং অ্যান্ড মিন্টিং কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া।
যে পরিবর্তন আসছে সেটি কেবল কাগজের নোটে। যদিও এর কারণ সম্পর্কে আপাতত কোনো তথ্য জানা যায়নি। তবে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় এবং স্বাধীন ভারতে দেশের জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করা ব্যক্তিদের ছবিও ছাপানোর চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষে এই উদ্যোগকে অভূতপূর্ব বলেই মনে করা হচ্ছে।
এর পেছনে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ আছে নাকি, সেই ব্যাপারে আলোচনার গুরুত্ব দেখা দিয়েছে অনেক ক্ষেত্রেই। অনেকে মনে করছেন, দীনদয়াল উপাধ্যায়, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়দের মতো গেরুয়া শিবিরের প্রাতঃস্মরণীয় মুখগুলো ফুটে উঠবে ভারতের নতুন মুদ্রায়। কেবল বিতর্ক এড়াতে এবং আগামী দিনে সম্ভাব্য প্রতিকূলতাগুলো সামলে উঠতে অন্য মনীষীদের ছবি ছাপার সিদ্ধান্ত ভারত সরকার কার্যকর করে নিতে চাইছে বলেও একাংশের মতামত।
ইতোমধ্যেই দেখা গেছে, পার্টির অনেক প্রয়াত এবং চর্চিত নামে নানা সরকারি প্রকল্প চালু করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। ভারতের স্বাধীনতার পরও বেশকিছু বছর ব্রিটিশ সরকারের চালু করে যাওয়া নোট চলত। মহাত্মা গান্ধী নিহত হওয়ার পর কাগজের নোটে তার ছবি ব্যবহার নিয়ে সেই সময়ে যথেষ্ট সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল। শুরুর দিকে অশোকস্তম্ভর ছবি দেখা যেত কাগজে নোটে। ১৯৬৯ সালে সর্বপ্রথম ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক ১০০ টাকার কাগজের নোটে গান্ধীর ছবি বসায়। সেই থেকে এখন পর্যন্ত আর কোনো মনীষীর ছবি নোটে স্থান পায়নি।
তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পৃথিবীর বহু দেশেই একাধিক বিজ্ঞ ও সম্মানীয় ব্যক্তি বা রাষ্ট্রপ্রধানের জলছবি ব্যবহারের প্রচলন আছে। মনে করা হচ্ছে, সেই ভাবনা থেকেই কাগজের নোটে গান্ধীর পাশাপাশি অন্য মনীষীদের উপস্থিতির ভাবনা চিন্তা চলছে।