বিনা টিকেটে ভ্রমণ করায় তিন যাত্রীকে জরিমানা করায় টিকেট পরিদর্শক (টিটিই) শফিকুল ইসলামের বরখাস্তের পেছনে মূল ভূমিকা পালন করেছিলেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের স্ত্রী শাম্মী আক্তার মনি। তার ফোনেই মূলত টিটিইকে বরখাস্ত করা হয়। মন্ত্রীর স্ত্রীর মামাতো বোন ইয়াসমিন আক্তার নিপা গণমাধ্যমকে এ কথা জানিয়েছেন। নিপা হচ্ছেন বিনা টিকেটে এসি কেবিনে ওঠা মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেওয়া সেই তিন যাত্রীর একজন ইমরুল কায়েস প্রান্তের মা।
রেলমন্ত্রীর স্ত্রী শাম্মী আক্তারের নানাবাড়ি পাবনার ঈশ্বরদীতে। প্রান্তের মা নিপা ঈশ্বরদী পৌর সদরের নূরমহল্লা কর্মকারপাড়ার বাসিন্দা। দুই বোন এবার একসঙ্গে একই বাড়িতে ঈদ উদযাপন করেছেন বলেও জানিয়েছেন নিপা।
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের ইয়াসমিন আক্তার নিপা বলেন, ছেলেদের সঙ্গে ‘অসদাচরণ’ করার কারণে টিটিইকে তিনি বদলি করতে মন্ত্রীর স্ত্রী শাম্মী আক্তারকে বলেছিলেন। তখন শাম্মী তাকে জানান, বদলি নয়, বরখাস্তই করে দিচ্ছেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি রেলের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ফোন করে বরখাস্ত করতে বলেন।
প্রান্তের মা ইয়াসমিন আক্তার নিপা বলেন, ছেলের সঙ্গে টিটিই অসদাচরণ করলে রাতেই বিষয়টি ফোন করে তাকে জানান। ওই রাতে তিনি আর তার বোন শাম্মী এক ঘরে ঘুমিয়েছিলেন। ছেলের সঙ্গে টিটিইর আচরণের বিষয়টি তিনি শাম্মীকে জানান। তার ছেলের কাছ থেকেও বিস্তারিত ঘটনা তিনি শোনেন। তখন তিনি টিটিইকে বদলি করে দিতে বলেন। সকালে তিনি (মন্ত্রীর স্ত্রী) রেলের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তাকে ফোন করে ওই টিটিইকে বরখাস্ত করতে বলেন। এরপরই টিটিই বরখাস্ত হন।
নিপা আরও বলেন, রেলমন্ত্রী ফোন করে শুক্রবারের রাতের ওই ঘটনার বিষয়ে আমার কাছে বিস্তারিত জানতে চেয়েছিলেন। শনিবার বিকালে প্রান্তকে রাজধানীর রেলভবনে ডাকা হয়। সেখানে সে বিস্তারিত জানিয়েছে।
রোববার রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনও সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বীকার করেছেন, বিনা টিকেটের যাত্রীদের জরিমানা করার পর তার স্ত্রী রেলের একজন কর্মকর্তাকে টেলিফোন করে অভিযোগ করেছিলেন। এরপরই ওই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
মন্ত্রী বলেন, যাত্রীও তো অভিযোগ করেছে। আমার স্ত্রীও একই রকমের অভিযোগ দিয়েছে। যে লিখিত অভিযোগটা দেওয়া হয়েছে, সেটা যখন তাকে
জানানো হয়, তখন আমার স্ত্রীও একই রকমের অভিযোগ দিয়েছে যে, এদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা হয়নি। তবে সে সময় রেলমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে বলে তার স্ত্রীর মামাতো বোন যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটা ‘ডাহা মিথ্যা’ বলে মন্ত্রী দাবি করেন।