চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও কমেছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় কমেছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা নেমেছে দেড় হাজারের নিচে। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা নেমে এসেছে সোয়া ৪ লাখের নিচে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে ইতালি, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও দক্ষিণ কোরিয়া। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫১ কোটি ৩২ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬২ লাখ ৬০ হাজার।
রোববার (১ মে) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৩২১ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে প্রায় সাড়ে নয়শো। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬২ লাখ ৬০ হাজার ৩৮৮ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ২১ হাজার ৪৬২ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে প্রায় দেড় লাখ। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ কোটি ৩২ লাখ ৩১ হাজার ৭৯৬ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৭ হাজার ৩ জন এবং মারা গেছেন ১০৬ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৪৭ লাখ ৬১ হাজার ৬০০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৩৫ হাজার ৯০০ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৫৭ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৭ হাজার ৩৬৩ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৮১ লাখ ৮২ হাজার ৩৫৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৭৫ হাজার ৮৮৪ জনের।
যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ হাজার ৭৫১ জন এবং মারা গেছেন ১১৫ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৮ কোটি ৩০ লাখ ৬৬ হাজার ৯০৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১০ লাখ ২০ হাজার ৮৩৩ জন মারা গেছেন।
ফ্রান্সে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৯ হাজার ৪৮২ জন এবং মারা গেছেন ৬১ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৮৬ লাখ ৪৫ হাজার ২৮৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯৩০ জন মারা গেছেন। গত একদিনে অস্ট্রিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ১৯৯ জন এবং মারা গেছেন ১৮ জন।
দক্ষিণ কোরিয়ায় গত একদিনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৩ হাজার ২৬২ জন এবং মারা গেছেন ৭০ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৭২ লাখ ৩৭ হাজার ৮৭৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ২২ হাজার ৭৯৪ জন মারা গেছেন।
গত একদিনে জাপানে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ হাজার ৪০৩ জন এবং মারা গেছেন ৪২ জন। একইসময়ে থাইল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৮৮৮ জন এবং মারা গেছেন ১২৬ জন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৭ জন এবং নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১৫ হাজার ১৯৪ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ৪ লাখ ৪৮ হাজার ২৩৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৬৩ হাজার ৫৫১ জনের।
করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩ হাজার ২৯৩ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪ কোটি ৩০ লাখ ৭৯ হাজার ১৫৭ জন এবং মারা গেছেন ৫ লাখ ২৩ হাজার ৮০৩ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় তুরস্কে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৭৭২ জন এবং মারা গেছেন ১১ জন। একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৩ হাজার ৬০৩ জন এবং মারা গেছেন ১৩০ জন। গ্রিসে নতুন করে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৪৯৭ জন এবং মারা গেছেন ৩৯ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় কানাডায় ১৩ জন, ইরানে ১১ জন, অস্ট্রেলিয়ায় ৫৩ জন, পোল্যান্ডে ১৭ জন, চিলিতে ১৮ জন এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৭ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ৪০ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ২৪ হাজার ২৯৪ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।