চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়েছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রায় ২২০০ মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে পৌনে ৬ লাখ।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে রাশিয়া, ব্রাজিল, ফ্রান্স, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড ও কানাডা। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি ৫৭ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬২ লাখ ২৭ হাজার।
বুধবার (২০ এপ্রিল) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২ হাজার ১৯৪ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় এক হাজার। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬২ লাখ ২৭ হাজার ২৮৪ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৭৭ হাজার ১ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় পৌনে ৩ লাখ। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ কোটি ৫৭ লাখ ৩৯ হাজার ৫৭১ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৩০ হাজার ৭৫৯ জন এবং মারা গেছেন ৯৬ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৩৫ লাখ ৮৮ হাজার ৩৫৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৩৩ হাজার ৫৩৩ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৩ হাজার ১৯০ জন এবং মারা গেছেন ৩৩৮ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৮ কোটি ২৪ লাখ ১৬ হাজার ৬৮৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১০ লাখ ১৬ হাজার ১৫৯ জন মারা গেছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ায় গত একদিনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ১৮ হাজার ৪৪৫ জন এবং মারা গেছেন ১৩০ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৬৪ লাখ ৭১ হাজার ৯৪০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ২১ হাজার ৩৫৪ জন মারা গেছেন। গত একদিনে জাপানে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৮ হাজার ২৮২ জন এবং মারা গেছেন ২৬ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় রাশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৩৫ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৮ হাজার ৬৪০ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৮০ লাখ ৯২ হাজার ৭৯১ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৯৪৮ জনের।
ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ হাজার ৪৬৫ জন এবং মারা গেছেন ১৮২ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৭৮ লাখ ১৬ হাজার ২৯৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৪৪ হাজার ৩৮৭ জন মারা গেছেন। থাইল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ হাজার ৮৯১ জন এবং মারা গেছেন ১২৯ জন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৯০ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৮ হাজার ১৮২ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ২ লাখ ৭৯ হাজার ২৭০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৬২ হাজার ২৬৬ জনের।
করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১ হাজার ৪৫০ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪ কোটি ৩০ লাখ ৪৬ হাজার ৯৭৭ জন এবং মারা গেছেন ৫ লাখ ২২ হাজার ১ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় তুরস্কে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ২১৭ জন এবং মারা গেছেন ২৩ জন। একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ হাজার ২১৪ জন এবং মারা গেছেন ১২৭ জন। ভিয়েতনামে নতুন করে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ৫০০ জন এবং মারা গেছেন ১৮ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় কানাডায় ১১০ জন, হাঙ্গেরিতে ১০৬ জন, হংকংয়ে ১৭ জন, ইরানে ২৩ জন, গ্রিসে ৪৯ জন, দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৪ জন এবং ইন্দোনেশিয়ায় ৩৪ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ৫ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ২৩ হাজার ৯৪৯ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।