শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ০৮:০৩ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
"ফটো সাংবাদিক আবশ্যক" দেশের প্রতিটি থানা পর্যায়ে "ক্রাইম নিউজ মিডিয়া" সংবাদ সংস্থায় ১জন রিপোর্টার ও ১জন ফটো সাংবাদিক আবশ্যক। আগ্রহী প্রার্থীরা  যোগাযোগ করুন। ইমেইলঃ cnm24bd@gmail.com ০১৯১১৪০০০৯৫
সংবাদ শিরোনাম ::
গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশ গড়ার নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে: ফখরুল ইয়াবাসহ ২জন মাদকসেবীকে আটক সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে নির্বাচিত সরকারের বিকল্প নেই : আব্দুস সালাম পুলিশকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যাওয়া আসামি গ্রেপ্তার থানা থেকে লুট করা পিস্তলসহ তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী গ্রেফতার আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে ছাত্রদলের সড়ক ইশরাকের শপথ নেয়ার আইনি কোনো সুযোগ ৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ ভিটিকান্দি ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক শহিদুল্লাহ গ্রেপ্তার দেড় মাসে ও ধর্ষিতার মামলা নেয় নি যাত্রাবাড়ি থানা পুলিশ ন্যায় বিচার পেতে বিভিন্ন দপ্তরে শিশু সন্তান নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে

মানবপাচার: ৩০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন কামরুল

  • আপডেট সময় শনিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২২, ৩.১৮ পিএম
  • ২০৭ বার পড়া হয়েছে

ঢাকা: নবম শ্রেণির গন্ডি পার হয়েছেন কামরুল আহম্মেদ (৪২)। যদিও তার নির্দিষ্ট কোনো পেশা নেই।

যদিও তার জনশক্তি রপ্তানির কোন লাইসেন্স নেই। সে বিভিন্ন ট্যুরিস ও ট্রাভেলসের সঙ্গে যোগাযোগ করে অবৈধভাবে ভ্রমণ ভিসায় মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে লোক পাঠাতেন। বেকার যুবকদের টার্গেট করে জনপ্রতি ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা নিয়ে ভুয়া ভিসা এবং ভুয়া টিকেট সরবরাহ করতেন। ভুক্তভোগীরা বিমানবন্দরে গিয়ে প্রতারিত হয়ে তাদের টাকা ফেরত চাইলে নানা ধানাই-ফানাই করতেন কামরুল। কৌশল হিসেবে সে ঘনঘন অফিসের ঠিকানা পরিবর্তন করতেন।

এমন প্রতারণার মাধ্যমে পাঁচ শতাধিক লোকের কাছ থেকে অন্তত ৩০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক কামরুল আহম্মেদ।

সম্প্রতি প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে রাজধানীর রামপুরা ও হাতিরঝিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে মানবপাচার ও প্রতারক চক্রের মূলহোতা কামরুল আহম্মেদসহ (৪২) চার সদস্যকে সদস্য গ্রেফতার করে র‌্যাব।

অভিযানে বিপুল পরিমাণ পাসপোর্ট, জাল ভিসা ও টিকেট তৈরির জন্য ব্যবহৃত কম্পিউটার উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতার বাকি সদস্যরা হলেন- মো. খালেদ মাসুদ হেলাল (৩৬), তোফায়েল আহম্মেদ (৩৮), মো. জামাল (৪২)।

শনিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, গ্রেফতার কামরুলের নামে চট্রগ্রাম কোর্টে একটি চেক জালিয়াতির মামলা এবং মৌলভীবাজার কোর্টে ডাচ বাংলা ব্যাংকে ১৮ লাখ টাকার একটি মামলা রয়েছে। তার বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্টে ৩৮ লাখ টাকার ওপরে আছে বলে জানা গেছে।

লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-৩ গোয়েন্দা নজরদারী ও ছায়া তদন্ত শুরু করে।

তদন্তে জানা যায়, গত ১২ এপ্রিল চক্র মৌলভীবাজার থেকে একজন নারীকে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে রামপুরা এলাকার নিয়ে আসেন কামরুল। রামপুরার একটি বাসায় ওই নারীকে আটকে রাখে এবং তার সহযোগী তোফায়েল জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করে। ওই নারী মোবাইল ফোনে র‌্যাবের কাছে সাহায্য চাইলে র‌্যাবের একটি আভিযানিক দল গত ১৩ এপ্রিল রাতে অভিযান চালিয়ে ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে ভুক্তভোগী জানায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মো. সাইফুল ইসলাম শান্ত নামে এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর সাইফুল যৌতুক বাবদ তার কাছ থেকে ধাপে ধাপে ৫ লাখ টাকা আদায় করে তাকে ছেড়ে দেন। এরপর ভুত্তভোগী বিদেশ যাওয়ার জন্য দালাল তোফায়েলের শরণাপন্ন হয়। তার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তোফায়েল ভুক্তভোগীকে গৃহকর্মী হিসেবে সৌদিআরব পাঠানোর প্রলোভন দেখায়।

তিনি বলেন, ভুক্তভোগীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রামপুরা ও হাতিরঝিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের মুলহোতাসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ২৭ টি পাসপোর্ট, ১ টি মনিটর, ১ টি সিপিইউ, ১ টি মাউস, ১ টি কীবোর্ড, ১ টি ইউপিএস, ১০০ টি ভিসার কপি, ১২৫ টি টিকেট, ৪ টি মোবাইল ফোন, ২ টি ফরম বই কোভিড-১৯ নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা এবং ১ টি প্রিন্টার উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়- কামরুলের অন্যতম সহযোগী আসামী জামাল মাহবুব ইন্টারন্যাশনালের এ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার। মাহবুব ইন্টারন্যাশনাল মানবপাচারের সাথে সম্পৃক্ত থাকায় বিএমইটি কর্তৃক তাদের লাইসেন্স ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। একমাস পূর্বে মাহবুব ইন্টারন্যাশনালের এমডি মানবপাচারের দায়ে র‌্যাব-৩ এর হাতে গ্রেফতার হয়েছিল। জামাল সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। পাঁচ বছর ধরে সে কামরুলের সঙ্গে প্রতারণা এবং মানবপাচারের কাজ করে আসছে।

গ্রেফতার খালেদ ২০০১ সাল থেকে দীর্ঘ ১৫ বছর সৌদিআরবে ছিল। ২০১৬ সালে বাংলাদেশে ফেরত এসে সে রাজনগর মৌলভীবাজারে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা শুরু করে। কিন্তু এই ব্যবসায় সে সফল হতে না পেরে কামরুলের সঙ্গে প্রতারণা ও মানবপাচারের কাজে যোগ দেয়। সে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে।

গ্রেফতার তোফায়েলের পেশা একজন গাড়িচালক। এছাড়াও মৌলভীবাজারে তার সিএনজি পার্টস এবং ডেকোরেটরসের ব্যবসা রয়েছে। লোভে পড়ে সে কামরুলের সঙ্গে প্রতারণা ও মানবপাচারের কাজে যোগ দেয়। কামরুলের বড় ভাইয়ের মাধ্যমে কামরুলের সঙ্গে তার পরিচয় হয়।

উদ্ধার হওয়ার ভুক্তভোগী গ্রেফতার তোফায়েলের গ্রামের দুর সম্পর্কের আত্মীয়। তোফায়েলের নামে এর আগে একটি চুরি মামলা রয়েছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2015-2025
Theme Developed BY ThemesBazar.Com