বিএনপি বিভক্ত, তাদের নেতা কে—আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এসব মন্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এতদিনেও যদি তিনি জানতে না পারেন বিএনপির নেতা কে, তার তো সরকারি দলে থাকার অধিকার নেই, পদত্যাগ করুন।
তিনি বলেন, বিএনপির নেতা কে, তা দিবালোকের মতো স্পষ্ট। এখন যিনি জীবিত আছেন, তিনি দেশনেত্রী খালেদা জিয়া। তার অসুস্থতা ও অবর্তমানে আমাদের নেতা তারেক রহমান। বিএনপি কোনোভাবে বিভক্ত নয়।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের সম্পর্কে তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রতিদিন একটি করে ওহি নাযিল করেন। গতকালও তিনি ওহি নাযিল করেছেন। সেই ওহি হলো ‘বিএনপি নানাভাবে বিভক্ত, তাদের নেতা কে, আন্দোলনের নেতা কে জানতে চাই’।
স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানানো হচ্ছে না দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, যারা জোর করে ক্ষমতায় আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটি ভ্রান্ত ও ভুল বিষয় আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে তুলে ধরছে। বাংলাদেশের মানুষ ব্রিটিশ আমল থেকে স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছে।
তিনি বলেন, ঘোষণার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা যিনি করেছিলেন— জিয়াউর রহমানসহ সবার নাম একেবারে মুছে দিচ্ছে। তারা একবারও উচ্চারণ করে না শেরে বাংলা ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর কথা। এমনকি যারা নয় মাস একটি সরকার পরিচালনা করলেন, তাদের নাম উচ্চারণ করে না আওয়ামী লীগ। তাজউদ্দিন আহমেদ, এমএজি ওসমানী, সেক্টর কমান্ডারদের কথা তারা বলে না।
বিএনপির এ নেতা বলেন, এমন একটা সময় আমরা অতিক্রম করছি, যে সময়টা আমাদের জাতির জন্য অত্যন্ত ভয়াবহ। আমাদের ভাষা আন্দোলন, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ— সব অর্জনকে ভুলিয়ে দিয়ে এককভাবে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালিয়ে দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। আমাদের সৃজনশীলতাসহ সবকিছু এরা ধ্বংস করে দিচ্ছে।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, যে জাতি তার প্রকৃত ইতিহাস জানে না, সে জাতি টেকসই উন্নয়ন করতে পারে না। প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতার ঘোষক কে, এ বিষয়ে বর্তমান সরকার এ প্রজন্মের মধ্যে একটা বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা যিনি দিলেন তাকে যদি অসম্মান করা হয় তাহলে কীভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করা হয়।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। এ ছাড়া আরও বক্তব্য দেন বিএনপি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দল হাই শিকদার।