একমাসেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে চলছে রাশিয়ার সামরিক অভিযান। এই সময়ে সামরিক, বেসামরিক অবকাঠামোর পাশাপাশি হাসপাতালও পরিণত হয়েছে রুশ সেনাদের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে। এমনকি সাধারণ মানুষের পাশাপাশি হামলায় নিহত প্রাণ হারিয়েছেন পেশাগত দায়িত্বপালনরত সাংবাদিকরাও।
তবে হামলায় সাংবাদিকদের প্রাণ হারানোর তথ্য হাতেগোনা হলেও ইউক্রেনের প্রধান প্রসিকিউটর ইরিনা ভেনেডিক্টোভা জানিয়েছেন, দেশটিতে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে ১২ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। রোববার (২৭ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
অবশ্য নিহত এসব সাংবাদিক কোথায় এবং কিভাবে প্রাণ হারিয়েছেন সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি ইরিনা ভেনেডিক্টোভা। এছাড়া রুশ হামলায় কমপক্ষে আরও ১০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন বলেও দাবি করেছেন তিনি।
ইউক্রেনের প্রধান প্রসিকিউটর আরও বলেছেন, নিহত বিদেশি সাংবাদিকদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, আয়ারল্যান্ড ও রাশিয়ার গণমাধ্যমকর্মীরাও রয়েছেন। এবং আহত সাংবাদিকদের মধ্যে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, চেক প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, সুইজারল্যান্ড ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) সংবাদকর্মীরা রয়েছেন।
অবশ্য দিন দু’য়েক আগে বিবিসি জানিয়েছিল যে, ইউক্রেনে রুশ সামরিক বাহিনীর অভিযান শুরুর পর গত এক মাসের যুদ্ধে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে পাঁচ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এতে বলা হয়, চলতি মার্চ মাসের শুরুতে ইউক্রেনীয় টিভি চ্যানেল লাইভ-এর ক্যামেরা অপারেটর ইয়েভেনি সাকুন কিয়েভের টিভি ট্রান্সমিশন টাওয়ারে হামলায় নিহত হন। তিনি স্প্যানিশ বার্তাসংস্থা ইএফই-তেও কাজ করেছেন।
এর দুই সপ্তাহ পরে ৫০ বছর বয়সী মার্কিন সাংবাদিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা ব্রেন্ট রেনডকে কিয়েভের বাইরে ইরপিন শহরে চিত্রগ্রহণ করার সময় গুলি করে হত্যা করা হয়।
এর দু’দিন পর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজের দুই সাংবাদিক নিহত হন। তাদের নাম পিয়েরে জাকরজেউস্কি এবং ওলেক্সান্দ্রা কুভশিনোভা। রাজধানী কিয়েভের উপকণ্ঠে হোরেঙ্কা নামক স্থানে সাংবাদিকদের বহনকারী গাড়িতে গোলা আঘাত হানলে ৫৫ বছর এবং ২৪ বছর বয়সী এই দুই সাংবাদিক প্রাণ হারান।
সর্বশেষ গত ২৩ মার্চ ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রুশ সামরিক বাহিনীর হামলায় রাশিয়ার এক সাংবাদিক নিহত হন। নিহত ওই সাংবাদিকের নাম ওকসানা বাউলিনা। তিনি রাজধানী কিয়েভ ও পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লভিভ থেকে ইনভেস্টিগেটিভ ওয়েবসাইট দ্য ইনসাইডারের জন্য সংবাদ সংগ্রহের কাজ করছিলেন।