মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ
মৌলভীবাজার জেলায় নবাগত পুলিশ সুপার মো: জাকারিয়া যোগদান করা পর থেকে বিভিন্ন থানায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সদ্য হওয়া কয়েকটি অভিযান সম্পর্কে পুলিশ সুপার বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন।
পুলিশ সুপার বলেন, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে শ্রীমঙ্গল সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান এর নেতৃত্বে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম একটি আন্তঃ জেলা গাড়ী চোর চক্রকে ৩টি চুরিকৃত গাড়ীসহ শ্রীমঙ্গলের মাইজদিহি হতে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়। চোরচক্রের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
উদ্ধারকৃত গাড়ী গুলো হলো ১ টি লাল রংয়ের পুরাতন প্রো বক্স চোরাই গাড়ি (রেজিঃ নং-চট্ট মেট্রো-গ-১১-৭৮৪৬), ১টি সাদা রংয়ের পুরাতন নোহা কারগাড়ি (রেজিষ্ট্রেশন নং-চট্ট মেট্রো-চ-৫১-০৫৩৮), ১টি সিলভার রংয়ের পুরাতন এক্স করল্লা গাড়ি(রেজিস্ট্রেশন নং-ঢাকা মেট্রো-গ-১৭-৩৪৬৬)।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা হচ্ছে- জাহিদ হাসান জিতু (২৭), পিতা-টেনু মিয়া, সাং-হাজীপুর, থানা-শ্রীমঙ্গল, জসিম মিয়া (৩৩), পিতা-মোঃ মনির মিয়া, সাং-লামুয়া, থানা-শ্রীমঙ্গল, সাইদুল ইসলাম (২৫), পিতা- বশির মিয়া, সাং-ভাড়াভিম, থানা ও জেলা-মৌলভীবাজার, লিটন মিয়া (৩০), পিতা-মৃত করিম মিয়া, সাং-লামুয়া, থানা-শ্রীমঙ্গল, জেলা-মৌলভীবাজার।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) এবিএম মুজাহিদুল ইসলাম, পিপিএম এর নেতৃত্বে জেলা গোয়েন্দা শাখা কর্তৃক অন্য একটি আন্তঃ জেলা গাড়ী চোর চক্রকে একটি ১টি সবুজ রংয়ের ১৫০০ সিসির ঈঅজওঘঅ প্রাইভেটকারসহ সদর থানাধীন শ্যামলী আবাসিক এলাকা হতে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়। চোরচক্রের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ চাঁদনীঘাট এলাকায় আলোচিত অঞ্জনা (তৃতীয় লিঙ্গ) হত্যা মামলাটির রহস্য উদঘাটন করতে সমর্থ হয়েছে। সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জিয়াউর রহমান এর নেতৃত্বে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশের একটি চৌকস টিম ব্রাহ্মনবাড়ীয়া জেলার সরাইল থানা এলাকায় ছদ্মবেশ ধারণ করে দীর্ঘ ২৯ ঘন্টার একটানা অভিযান শেষে ঘটনার মূল আসামীকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়। হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত আসামীর ক্রিকেট ব্যাটটি জব্দ করে পুলিশ। পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন।
শ্রীমঙ্গল সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান এর নেতৃত্বে একটি টিম অভিযান করে শ্রীমঙ্গল থানার একটি রিসোর্টের কর্মচারী কর্তৃক উক্ত রিসোর্টে অবস্থানকারী দম্পতির আপত্তিকর ভিডিও গোপনে মোবাইলে ধারণপূর্বক অর্থ আদায়ের চেষ্টাকালে পর্নোগ্রাফী নিয়ন্ত্রন আইন মামলার আওতায় আসামী রেজওয়ান হোসেনকে সনাক্তপূর্বক উক্ত আসামীকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়।
সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জিয়াউর রহমান এর নেতৃত্বে একটি টিম সদর মডেল থানার একটি গণধর্ষন মামলার রহস্য উদঘাটনপূর্বক মামলার ঘটনায় জড়িত আসামী অজুদ মিয়া, খোকন মিয়া, শাহ আলমগনদেরকে গ্রেফতারপূর্বক বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করে। তাদের মধ্যে আসামী অজুদ মিয়া বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। বর্তমানে তারা জেল হাজতে আটক আছে।
শ্রীমঙ্গল সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান এর নেতৃত্বে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ মানবপাচার চক্রের সহিত জড়িত মানব পাচারকারীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে শ্রীমঙ্গল থানার একটি মানব পাচার মামলার তদন্তকালে মানব পাচারকারী চক্রের মূলহোতা আছমা বেগমসহ মোট ৫ জনকে গ্রেফতার পূর্বক বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়।
সিলেট রেঞ্জব্যাপী চলমান ১০ দিনের বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে গত ৪ দিনে জেলার বিভিন্ন থানার পুলিশ কর্তৃক মোট ৩০৬ লিটার দেশীয় মদ, ২৮১ বোতল বিদেশী মদ, ৩৯ পিস ইয়াবা, ২৭০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধারপূর্বক মাদক মামলা রুজুকৃত হয় এবং উক্ত মামলাসমূহে মাদক বহনকারী/বিক্রেতা মোট ১৩ জন আসামীকে গ্রেফতারপূর্বক বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়। মাদক নির্মূলের লক্ষ্যে উক্ত অভিযান চলমান আছে।
মাদক নিয়ন্ত্রন, সন্ত্রাস দমন, চাঁদাবাজি রোধ, চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি প্রতিরোধসহ মৌলভীবাজার জেলার সামগ্রিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় জেলা পুলিশ প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।