চট্টগ্রামের সিআরবিতে বেসরকারি হাসপাতাল করার যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে সেটা অন্যত্র করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে বলব, চট্টগ্রামের এক-চতুর্থাংশ এলাকার মালিক বাংলাদেশ রেলওয়ে। হাসপাতাল করার জন্য সিআরবি ছাড়াও হাজার একর জায়গা আছে। সেখানে হাসপাতাল হলে আমরা স্বাগত জানাব।
আজ (মঙ্গলবার) সকালে নাগরিক সমাজ চট্টগ্রামের নেতাদের সাথে মতবিনিময়ে এসব কথা বলেন তিনি।
মোশাররফ হোসেন বলেন, সিআরবি যুগ যুগ ধরে চট্টগ্রাম শহরের মানুষকে ছায়া এবং স্বস্তি দিয়ে আসছে। এর নৈসর্গিক পরিবেশ মানুষকে প্রতিনিয়ত কাছে টানে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর নৈসর্গিক পরিবেশের কারণে সিআরবি হয়েছে সরকারঘোষিত হেরিটেজ জোন; যা আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃত। সুতরাং সিআরবির অবয়ব পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন নাগরিক সমাজ চট্টগ্রামের চলমান প্রতিবাদ কর্মসূচির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বলেন, সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণবিরোধী কর্মসূচিতে শুধু আমি নই, চট্টগ্রামের অন্যান্য এমপি, মন্ত্রী, মেয়র ও শীর্ষ প্রায় সকল নেতা রয়েছেন। সবাই চট্টগ্রামের ফুসফুস খ্যাত সিআরবি রক্ষায় এগিয়ে এসেছেন। আমরা হাসপাতাল নির্মাণের বিরুদ্ধে নই। হাসপাতাল সিআরবি ছাড়া অন্যত্র হোক- এটাই আমাদের দাবি।
তিনি আরও বলেন, সিআরবির রয়েছে ঐতিহাসিক গুরুত্ব। এটা ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থান। এখানে রয়েছে চাকসুর প্রথম জিএস বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আবদুর রব, শহীদ মনোয়ার, শহীদ নজির, শহীদ আলিমসহ অনেক শহীদের কবর। শহীদের সমাধির ওপর কোনো স্থাপনা আমরা চাই না। আমরা চাই শহীদের সমাধি সংরক্ষণ করতে।
মতবিনিময়ে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- নাগরিক সমাজ চট্টগ্রামের কো-চেয়ারম্যন বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফজুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ড. ইদ্রিস আলী, জাসদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন বাবুল, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলম, বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজী, নাগরিক সমাজের যুগ্ম সদস্য সচিব রাশেদ হাসান, বোধনের সভাপতি হালিম দোভাষ, প্রণব চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের প্রচার প্রকাশনা সম্পাদক আলীউর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা নূর খান, সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম মুন্না, সরোয়ার আমিন বাবু, জায়দীদ মাহমুদ, নুরুল আজম প্রমুখ।
নাগরিক সমাজের নেতারা অভিযোগ করেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঔপনিবেশিক কায়দায় সিআরবিতে গেট দিয়ে চট্টগ্রামবাসীকে জিম্মি করতে চেয়েছিল। আমাদের যৌক্তিক দাবির প্রেক্ষিতে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়।